এক নজরে সম্পূর্ণ পোস্ট
দোকানদার ছাড়াই চলছে দোকান
দোকানদার ছাড়া দোকান! অবাক করার মতো বিষয়। হুম, বাংলাদেশে চলছে ভিন্ন রকমের একটি দোকান। এখানে নেই কোনো দোকানদার।
ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের রিপোর্টে উঠে আসে এই চমৎকার ও অভিনব দোকানের মূল রহস্য। ২৭/০৯/১৯ ইং তারিখে ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির ইউটিউব চ্যানেলে রিপোর্টটি প্রকাশিত হয়।
এই অভিনব দোকানটি কুষ্টিয়া জেলার দূর্গাপুর, কুমারখালীতে অবস্থিত। এটি মূলত রুমাল, তোয়ালে, লুঙ্গী ও গামছার দোকান। ভিন্ন রকম এই দোকানটির মালিক মোঃ হামিদুর রহমান শিপন।
শিপন সকালে এসে দোকানটি খুলে রেখে চলে যায়। সারাদিনে আর আসেনা। সেখানে পণ্যগুলোর গায়ে নির্ধারিত মূল্য লেখা থাকে। আর টাকা রাখার জন্য একটি ক্যাশ বাক্স আছে।
ক্রেতারা তাদের পছন্দের জিনিস দোকান থেকে খুঁজে নেই। আর পণ্যের গায়ে লেখা মূল্য ক্যাশ বাক্সে রেখে চলে যায়।
ক্রেতারা নিজেরাই পণ্যগুলো দেখে আর পছন্দের জিনিসটি কিনে। আর যেগুলা ভালো লাগেনা ঐগুলো নিজেরাই ভাঁজ করে রেখে যায়।
কে এই শিপন?
দোকানদার ছাড়া ভিন্ন রকমের দোকানটির মালিক মোঃ হামিদুর রহমান শিপন। সে মূলত একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী।
দোকানদারি করে সংসার চলে না। তাই প্রথমদিকে দোকানটিকে খুলে রেখে সে পণ্য ফেরি করতে বেরিয়ে যেত।
সে দোকানে পণ্যের মূল্য লিখে যেত। আর টাকা রাখার জন্য একটি বাক্স রাখতো। সে দেখলো তার দোকানে তার অনুপস্থিতিতে মোটামুটি বিক্রি হচ্ছে। সেই থেকেই শুরু।
তার দাবি, আজ পর্যন্ত তার দোকান থেকে কিছু চুরি হয়নি। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এরকম অনেস্টি শপ (Honesty shop) বা সততার দোকান আছে।
শিপনের দাবি বাংলাদেশেও এটি করা সম্ভব। শিপনের মতে “আমি যদি একজনকে বিশ্বাস করি সেও আমাকে বিশ্বাস করবে”।
তার এমন উদ্যোগের (দোকানদার ছাড়া দোকান) কারণে তার আয় আগের তুলনায় বেড়েছে। তাই সংসার চালানোটাও সহজ হচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের জন্য দোকানটি অনেক সাহায্য করছে
দোকানি ছাড়া দোকান। এমন দোকানের কারণে উপকৃত হচ্ছেন শিক্ষার্থীরাও। একজন শিক্ষার্থী বলছিলেন তার অভিজ্ঞতার কথা।
সবসময় দোকানটি খোলা থাকে। আমরা যেকোন সময় এসে এখান থেকে জিনিস কিনতে পারি। অনেক দোকান দুপুর বেলা বন্ধ থাকে। কিন্তু তখন আমাদের ছুটি হয়।
আমরা তখনও এই দোকানটিকে খোলা পাই। কারণ, এখানে দোকানদার থাকেন না। তিনি সকালে এসে দোকানটি খুলে তার কাজে চলে যান।
রাতে এসে ক্যাশ বাক্স থেকে টাকা বুঝে নেন। তাই আমারা দুপুরে এসেও কিছু কিনতে পারি। আর পণ্যের গায়ে লেখা মূল্য বাক্সে রেখে চলে যাই।
আরো পড়ুন….
- All You Want to Know About Air cargo coordination Challenges
- সব দোষ আসলে সরকারের! তাই দেশের আজ এই অবস্থা!
- ২৫২ পরিবারকে ত্রাণ সহায়তা দিলো ব্লাড সেন্টার নদোনা নোয়াখালী
- করোনা ভাইরাসের দিন শেষ | আর ভয় নেই (ভিডিও সহ)
- ইলিশ ধরা বন্ধের অভিযানের বর্ণনা দিলেন কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার
শিপন কি বলছেন?
শিপন বলছেন তার উদ্যোগের কথা। আগে দোকান চালিয়ে তার আয় হতো ৩০০-৪০০ টাকা। আর এখন এই উদ্যোগের পর ৫০০-৭০০ টাকা আয় হয়। কোন কোন দিন হাজার বারো’শ ও হয়।
তিনি দেখলেন তার এভাবে আয় বেশি হচ্ছে। তাই তিনি এভাবেই চলছেন। তিনি নিজেই কাপড় থেকে সেলাই করে তার পণ্যগুলো তৈরি করেন।
সেখানে মূল্য লিখে দেন। আর নিজে কিছু জিনিস নিয়ে ফেরি করতে বেরিয়ে যান। দিন শেষে তার টাকা তিনি বাক্স থেকে বুঝে পান।
আর যখন দোকানে থাকেন সেই সময় কেউ কিছু কিনলে তাকে সম্মান করে ১০ টাকা ছাড় দেন। তার দাবি, তিনি খুব কম লাভে পণ্যগুলো বিক্রয় করেন।
তবে তিনি ক্রেতাদের ঠকাতে চান না। তার কোন পণ্য খারাপ হলে তিনি ফেরত নেন। তার কথা হচ্ছে ক্রেতারা যাতে কোনমতেই না ঠকে। আরো নিউজ পড়তে এখানে ক্লিক করুন।
তথ্যসূত্রঃ ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভি