ইভেন্ট ব্লগিং একে সাধারণত স্বল্প মেয়াদী ব্লগিং বলা হয়। যার মূল মন্ত্র হলো নির্দিষ্ট একটি দিনকে টার্গেট করে আপনার ব্লগিং আর্নিং কে বহুলাংশে বাড়িয়ে দেওয়া।
এখানে নির্দিষ্ট দিন বলতে সেই দিনগুলোকে বুঝানো হয়েছে, যেদিনগুলোতে সার্চ ইঞ্জিনে একটি কিওয়ার্ড কয়েক কোটি বার সার্চ করা হয়।
উদাহরণস্বরূপ 14 ফেব্রুয়ারি ভ্যালেন্টাইন ডে, এই দিনটিতে পুরো সার্চ ইঞ্জিনে কয়েক বিলিয়ন মানুষ একটি কী-ওয়ার্ড সার্চ করল – ‘ভ্যালেন্টাইন ডে গিফট’
এবং আপনার ব্লগ সাইটটি এই কিওয়ার্ডটি নিয়ে গুগলের প্রথম পেইজ রেংক করছে। ভেবে দেখেন আপনার ব্লগ এই দিন কত ডলার আয় করতে পারবে।
একদিনে আপনি হয়ে যাবেন কোটিপতি:) আর ইভেন্ট ব্লগিং এরকমই একটি নির্দিষ্ট দিন কে টার্গেট করে করা হয়।
তবে এর জন্য আপনাকে কয়েক শত পূর্বপরিকল্পনা এবং টেকনিক ব্যবহার করতে হবে, যাতে করে আপনার ইভেন্ট ব্লগিং সার্থক হয়ে উঠবে।
ইভেন্ট ব্লগিং এ সফলতার ক্ষেত্রে আপনি কি কি করতে পারেন? কি কি করতে হবে আপনাকে? এই সম্পূর্ণ বিষয় নিয়ে আজকের এই পোস্টের আলোচনা।
কেন করবেন ইভেন্ট ব্লগিং?
মোট কথা হল আপনার ব্লগের আর্নিং এবং ওয়েবসাইটের ভিজিটর বাড়ানোর জন্য আপনি ইভেন্ট ব্লগিং পারেন, শুধু তাই নয় ইভেন্ট ব্লগিং এর মাধ্যমে আপনার আরো অনেক ধরনের লাভ হবে।
প্রথমত আপনার ওয়েবসাইটের ভিজিটর বহুলাংশে বেড়ে যাবে, এবং আপনার বিভিন্ন সোসিয়াল গণমাধ্যম পেইজ গুলো খুব সহজেই প্রমোট করে লাইক বাড়াতে পারবেন।
এটা সম্পূর্ণ বৈধ লগিং প্রক্রিয়া। এর জন্য আপনাকে অবশ্যই একটি ইউনিক কনটেন্ট লিখতে হবে এবং কনটেন্ট সার্চ ইঞ্জিন উপযোগী করে রেঙ্ক করাতে হবে।
কারণ আপনার মতই অনেক ব্লগার ইভেন্ট ব্লগিং এ লাভবান হওয়ার কারণে ওই নির্দিষ্ট একটি দিন ইভেন্ট ব্লগিং এ উঠবে।
কোন কোন নিশ নিয়ে ইভেন্ট ব্লগ করা যায়?
এটা মূলত নির্ভর করবে আপনার উপর, কারণ ক্যালেন্ডার এরকম অনেক গুরুত্বপূর্ণ দিন আছে যে দিনগুলোতে সার্চ ইঞ্জিনে ঐ কী-ওয়ার্ড নিয়ে বেশি সংখ্যক সার্চ রেজাল্ট আসে।
উদাহরণস্বরূপ কিছুদিন পর ভ্যালেন্টাইন ডে, তাহলে অবশ্যই আপনাকে ইভেন্ট ব্লগিং করার জন্য নিস হিসেবে ‘ ভ্যালেন্টাইন ডে’ ব্যবহার করতে হবে।
এবং এর সম্বন্ধে তথ্য সংগ্রহ করে একটি বড় আর্টিকেল লিখতে হবে। এবং তারপর আপনার আর্টিকেল কে সার্চ ইঞ্জিনে রেঙ্ক করানোর কাজে লেগে পড়তে হবে।
এছাড়া শুধু যে আপনাকে ভ্যালেন্টাইন ডে নিস কাজ করতে হবে এরকম তা কিন্তু নয়, আপনি চাইলে এরকম আরো অনেক নিস আছে যেগুলো সমন্বয় কাজ করতে পারেন।
নিচে আমি ইভেন্ট ব্লগিং এর জন্য কয়েকটি নিস দিয়ে দিচ্ছি-
- Happy New year
- Happy Father day
- Mother day
- Exam result
- Christmas day
- Independence day
- Happy Diwalle
- International language day
- Eid massage, Eid wish
- IPL,World cup cricket<
- Fifa world cup
- Happy holly
উপরে উল্লেখিত নিস সমন্বয়ে আপনি ইভেন্ট ব্লগিং করতে পারবেন। সেটা আপনার কনটেন্টের উপর নির্ভর করবে, কনটেন্ট যত বেশি ইউনিক হবে আপনার কীওয়ার্ড রেঙ্ক করার বিষয়টি আরো বেশি সহজ হয়ে যাবে।
এর পরেও আপনি যদি রেংকিং এর বিষয়টি আরেকটু সহজ করতে চান তাহলে আপনার কেউ আগের মত একটি ডোমেইন সিলেক্ট করুন।
এবং আপনি যেই দেশে থাকেন না কেন আপনার ডোমেইন নামের শেষে সেই দেশে এক্সটেনশন ব্যবহার করুন। যেমন আপনি বাংলাদেশে থাকলে ব্যবহার করুন ‘.com.bd’ আমেরিকায় থাকলে ‘.com.us’ ইত্যাদি ডোমেইন নেম কালেক্ট করুন।
আপনি যদি ব্লগারের ব্লগিং করতে চান তাহলে হোস্টিং কিনার দরকার নেই, তবে আপনাকে আপনার ব্লগটিকে সেদিন খুব ভালোভাবে কাস্টমাইজ করে রাখতে হবে।
এবং এটাই নিশ্চিত হতে হবে যে আপনার সাইটটি লোডিং এ যেন খুব বেশি সময় না নেয়। কারণ এতে ভিজিটররা ক্ষুব্দ হবে এবং আপনার সাইট থেকে লিভ নিবে।
এবং সাইটের এড প্লেসমেন্ট খুব নিখুঁতভাবে করতে হবে যাতে করে ভিজিটররা কোন ধরনের অসুবিধার সম্মুখীন না হয়।
সবচেয়ে ভালো হবে যদি এদিন আপনি আপনার এডসেন্স এর অটো এড সিস্টেমটি অফ করে রাখেন। আপনি চাইলে আর্টিকেলের ভিতরে, টাইটেলের নিচে এবং আপনার ব্লগের হেড সেকশনে এডস প্লেসমেন্ট করতে পারেন।
আর যদি ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করেন তাহলে তো আপনাকে অবশ্যই হোস্টিং কিনতে হবে। ওয়েব হোস্টিং কেনার ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে।
ইভেন্ট ব্লগিং এ নির্দিষ্ট একটি দিনে খুব বেশি সংখ্যক ভিজিটর আপনার সাইটে ভিজিট করবে। এক্ষেত্রে আপনার হোস্টিং এর স্পেস যদি কম হয় তাহলে সাইটে ডাউন হয়ে যাবে।
এছাড়াও ভালো কোন প্রোভাইডার দেখে হোস্টিং কিনতে হবে এবং খুব বেশি সংখ্যক স্টোরেজের সমন্বয় হোস্টিং ক্রয় করতে হবে। এক্ষেত্রে সাইবার ডেভেলপার বিডি থেকে হোস্টিং কিনতে পারেন। তাদের বিভিন্ন স্পেশাল প্যাকেজ রয়েছে। হোস্টিংয়ের মানও যথেষ্ট ভালো মানের।
কারণ একবার যদি উল্টাপাল্টা কিছু হয়ে যায় তাহলে আপনি যতক্ষণে এটা আবার রিপেয়ার করবেন ততক্ষণে ইভেন্ট ব্লগিং এর চিন্তা আপনার মাথা থেকে সরাতে হবে।
তাই বুঝে শুনে ডোমেইন এবং হোস্টিং এর ব্যাপারটি আগে নিশ্চিত করুন। কার্ড না থাকলেও বিকাশ দিয়ে ডোমেইন ও হোস্টিং ক্রয় করা যায়।
কিভাবে শুরু করবেন ইভেন্ট ব্লগিং?
ইভেন্ট ব্লগিং শুরু করার আগে প্রথমত আপনাকে কয়েকটি বিষয় জানতে হবে। কতদিন আগে ইভেন্ট ব্লগিং শুরু করা ভালো? কয়দিন হতে পারে ইভেন্ট ব্লগিং? কোন ইভেন্ট ব্লগিং আপনার জন্য প্রযোজ্য?
আপনি যদি নতুন কোন ডোমেইন এর সমন্বয়ে ইভেন্ট ব্লগিং করতে চান তাহলে আপনাকে 40 থেকে 50 দিন আগে ইভেন্ট ব্লগিং এ নেমে পড়তে হবে।
কারণ নতুন ডোমেইনে আপনাকে প্রথমত আপনার ডোমেইনটি কে গুগল এ সার্চ ইঞ্জিনে ভালোভাবে ইন্ডেক্স করতে হবে, কিছু ব্যাকলিংক তৈরী করতে হবে এবং তত্ত্বের সমন্বয়ে একটি আর্টিকেল লিখতে হবে।
আরো পড়ুনঃ ব্লগ তৈরি ও ব্লগ থেকে আয় করার সকল উপায়
এই সবকিছু করতে হলে সময়ের প্রয়োজন তাই নতুন ডোমেইন এর ক্ষেত্রে কিছুদিন আগে থেকে ইভেন্ট ব্লগিং শুরু করা ভালো।
এখন যদি আপনার কাছে আগে থেকে কোন ওয়েবসাইট কিংবা ডোমেইন থাকে তাহলে আপনি চাইলে 10 থেকে 15 দিন আগে ইভেন্ট ব্লগিং শুরু করতে পারবেন।
আর ইভেন্ট ব্লগিং কতদিন চলবে সেটা নির্ভর করবে আপনি কোন নিস নিয়ে কাজ করছেন সেটার উপর। কারণ এক একটি অনুষ্ঠানের জন্য কিছু দিন ধার্য করা হয়।
আপনি যদি World cup football নিয়ে কাজ করেন তাহলে আপনার ইভেন্ট ব্লগিং কতদিন চলবে যতদিন এই ওয়ার্ল্ড কাপের আসরটি চলতে থাকবে।
ইভেন্ট ব্লগিং এর ক্ষেত্রে আপনি যত বড় নিস নিয়ে কাজ করবেন, আপনাকে ঠিক ততটাই খাটনি খাটতে হবে।
কারণ বেশি competitor’s এর সমন্বয়ে গঠিত নিস নিয়ে আপনার সাইটটিকে রেঙ্ক করাতে হবে আপনাকে অনেক বেশি হার্ড ওয়ার্ক করতে হবে। তবে সফল হয়ে গেলে ভিজিটরের অভাব হবে না।
কিভাবে লিখবেন কনটেন্ট?
প্রথমত কি ওয়ার্ড সিলেক্ট করা হয়ে গেলে, গুগলে সার্চ দেওয়ার মাধ্যমে সম্পর্কে খুব বেশি ধারণা লাভ করুন। যাতে করে আপনার আর্টিকেল থেকে কোন বিশেষ অংশ বাদ না পড়ে।
কারণ ভিজিটররা যে বিষয়ের জন্য আপনার ব্লগ সাইটে ভিজিট করবে সেই বিষয়টি না পেলে তারা বাধ্য হয়ে অন্য সাইটে তা খুজবে, ফলে আপনি ভিজিটর হারাবেন।
প্রতিটি কিওয়ার্ড নিয়ে আলাদা আলাদভাবে পোস্ট লিখুন, তবে পোস্টগুলো বড় করার দিকে না তাকিয়ে আপনার আর্টিকেলটি কতটা তথ্য সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে সেদিকে নজর দিন।
আপনার আর্টিকেলটি বেশি বড় হলে এরকম সাত-আটটি আর্টিকেল লিখুন, এবং তারপর পাবলিশ করে এটি সার্চ ইঞ্জিনে ইনডেক্স করুন।
তবে যে কীওয়ার্ডস নিয়ে আপনি কাজ করবেন সেই কিওয়ার্ডটি আগে
Google Trends সার্চ করে দেখুন গত বছর এই কী-ওয়ার্ড কয়টি সার্চ রেজাল্ট হয়েছে।
এছাড়াও ভালভাবে কিওয়ার্ড রিসার্চ করার জন্য কয়েকটি টুলস এর লিংক আমি পোস্টের শেষে দিয়ে দিচ্ছি। টুলস গুলো ব্যবহার করে আপনি নিখুঁত কিওয়ার্ড খুঁজে পাবেন।
ব্যাকলিংক- সার্চ ইঞ্জিনে আপনার কিওয়ার্ড দিয়ে রেংকিং পেতে হলে অবশ্যই আপনাকে কিওয়ার্ড নিয়ে ব্যাকলিংক তৈরী করতে হবে।
কারণ বিপুল পরিমাণে তথ্য আর ইউনিক কনটেন্ট এর সাথে যে ওয়েবসাইটটি ব্যাকলিংক তৈরি করবে সেই ওয়েবসাইট কিওয়ার্ড নিয়ে রেংকিং এর দৌড়ে এগিয়ে থাকবে।
তবে ইভেন্ট ব্লগিং এ ন্যাচারাল কনটেন্ট এবং কিছু পরিমাণ ব্যাকলিংক হলে আপনি পেতে পারেন। যতগুলো পারেন তত গুলো ন্যাচারাল ব্যাকলিংক তৈরি করেন।
তবে চেষ্টা করবেন ব্যাকলিংক গুলো লেভেলের ডোমেইনে অথরিটি এবং পেইজ অথরিটি সাইট থেকে তৈরি করার।
এছাড়াও খুব বেশি ব্যাকলিংক তৈরি করার জন্য আপনি যদি ব্ল্যাক হ্যাট এসইও প্রয়োগ করেন তাহলে আপনি গুগল কর্তৃক রেংকিং পেনাল্টি পেতে পারেন। যা কোনো ক্ষেত্রেই কাম্য নয়।
সোসিয়াল শেয়ার- কনটেন্ট লেখা হয়ে গেলে এবার সোসিয়াল সিগন্যাল হ্যাক করুন। বিভিন্ন দেশের জন্য বিভিন্ন ধরনের সোসিয়াল গণমাধ্যম জনপ্রিয়।
আপনি যে দেশকে টার্গেট করে ইভেন্ট ব্লগিং করতে যাচ্ছেন, আগে নিশ্চিত হোন সেই দেশে কোন সোসিয়াল গণমাধ্যমগুলো বহুল ব্যবহৃত। এবং তারপর তা শেয়ার করুন।
খুব ধৈর্য্য সহকারে আপনার কীওয়ার্ড নিয়ে কাজ করতে থাকুন যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি একটি ভাল রেংকিং না পাবেন।
সফল ইভেন্ট ব্লগিং থেকে আপনার পাওয়া”
আপনি প্রথমবার যে কোন কাজ করেন না কেন কাজটিতে ভুল অবশ্যই হবে। এবং প্রথমবার ইভেন্ট ব্লগিং আপনি যা যা শিখবেন, তা পরবর্তী বার আপনি যখন ইভেন্ট ব্লগিং করবেন তখন আপনাকে মানসিকভাবে শক্তি যোগাবে।
ইভেন্ট ব্লগিং এর মাধ্যমে যেহেতু আপনি অনেকগুলো ব্যাকলিংক তৈরি করবেন, এতে করে আপনার ব্লগ সাইটে রেংকিং বৃদ্ধি পাবে।
ইভেন্ট ব্লগিং এর ফলে আপনার ওয়েবসাইটের সাবস্ক্রাইবার, সোসিয়াল গণমাধ্যমের ফান পেজ এ লাইক, ইউটিউব সাবস্ক্রাইবার ইত্যাদি বৃদ্ধি পাবে।
এছাড়া প্রথমবার আপনি যদি ইভেন্ট ব্লগিং ব্যর্থ হন, তাহলে পরবর্তী বার এটা আপনাকে শক্তি যোগাবে। এবং আপনিও খুঁজে বের করতে পারবেন কোন কোন কারণে এবার আপনি ব্যর্থ হয়েছেন।
এসাইমেন্ট ইভেন্ট ব্লগিং এর জন্য লেখা কন্টেন্টে কিছুটা পরিবর্তন আনলে আপনি এই কনটেন্টে সাহায্যে আপনার ওয়েব সাইটে নিয়মিত ভিজিটর আনতে সক্ষম হবেন।
কিইওয়ার্ড রিসার্চ টুলস-
ভালো লাগলে ঘুরে আসুন-
তাহলে আজকে এই পর্যন্ত!