দীর্ঘ মেয়াদে কোন ল্যাপটপ ব্যবহার করার জন্য বর্তমান বাজারে আপনাকে কমপক্ষে ৩৫-৪০ হাজার টাকা গুনতে হবে। ছাত্রদের জন্য ৪০,০০০ টাকার বাজেট রেঞ্জটা খুবই কম্পোর্টেবল। বাজারে এই বাজেট রেঞ্জের ভিতর অনেক অনেক ল্যাপটপ আছে। তাই ল্যাপটপ ক্রেতারা একরকম কনফিউজড হয়ে যায় কোন ব্রান্ড এর কোন ল্যাপটপটি তাদের জন্য বেস্ট এবং ভ্যালু ফর মানি হবে। তাই আজকে আমরা ৪০ হাজার টাকার মধ্যে সেরা ২টি ল্যাপটপ নিয়ে আলোচনা করব।
৪০ হাজার টাকার মধ্যে সেরা ল্যাপটপ
৪০,০০০ টাকার ল্যাপটপগুলো সাধারণত ছাত্রদের জন্য এবং মোটামুটি অফিস ওয়ার্কিং এর জন্য বেস্ট হবে। আজকের এই লিস্ট এ আমরা HP 15s-gr515AU AMD Athlon 3050U এবং Asus Vivobook X515MA Celeron N4020 এর বিস্তারিত আলোচনা করব। আশা করি শেষ পর্যন্ত পড়বেন এবং আজকের এই আলোচনা থেকে বুঝতে পারবেন আপনার ব্যাবহার অনুযায়ী কোন ল্যাপটপটি আপনার জন্য বেস্ট হবে।
HP 15s-gr515AU
অফিস ওয়ার্ক এবং ছাত্রদের কথা মাথায় রেখে HP তাদের একটি নতুন ল্যাপটপ বাজারে এনেছে। HP 15s-gr515AU ল্যাপটপটি দেখতে এতটাই প্রিমিয়াম, যে দামের কথা না বলে কাউকে জিজ্ঞেস করলে এর দাম অনায়াসে ৫০ হাজার টাকার উপরে অনুমান করবে।
এদিকে যাদের AMD এর প্রসেসর এর প্রতি আলাদা দূর্বলতা কাজ করে তাদের জন্য এই ল্যাপটপখানা সোনায় সোহাগা হতে পারে। আজ আমরা পর্যায়ক্রমে আলোচনা করব HP 15s-gr515AU এবং Asus Vivobook X515MA সেরা এই দুইটি ল্যাপটপ নিয়ে।
প্রথমে চলুন দেখে আসা যাক কি বিশেষ বৈশিষ্ট্য রয়েছে HP 15s-gr515AU ল্যাপটপটির মধ্যে। পরবর্তীতে Asus Vivobook X515MA বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানব। আসুসের অন্যান্য মডেল এর দাম সম্পর্কে জানতে এখানে ভিজিট করুন।
১. প্রসেসর
HP 15s-gr515AU ল্যাপটপটিতে ব্যাবহার করা হয়েছে AMD এর বাজেট সেগমেন্ট এর একটি প্রসেসর। যার মডেল AMD Athlon Silver 3050U। এই প্রসেসরযুক্ত ল্যাপটপটি 2.3 GHz এর বেস ফ্রিকোয়েন্সী প্রদান করতে পারে। একইসাথে এর ম্যাক্সিমাম ফ্রিকোয়েন্সি 3.20 GHz, যা বেসিক মাল্টি টাস্কিং এ ভালো সাপোর্ট দিতে পারে।
২. ডিসপ্লে
Display সেকশনে এতে ব্যাবহার করা হয়েছে 15.6″ এর একটি Diagonal ডিসপ্লে প্যানেল। এছাড়াও এই ডিসপ্লে সেকশনের স্পেক রেশিও ১৩৬৬*৭৬৮, যা ২২০ নিটস পর্যন্ত পিক ব্রাইটনেস প্রভাইড করতে পারে। এর ফলে ডিরেক্ট সূর্যের আলোয় একটু সমস্যা হলেও ছায়ায় বা বাসায় ব্যাবহার করা যাবে খুব ভালো ভাবেই।
৩. স্টোরেজ
HP এভ বাজেট সিরিজের ল্যাপটপটিতে স্টোরেজ হিসেবে আছে 1 TB এর একটি HDD । এর সাথে আপনি চাইলেই একটি SSD লাগিয়ে এর পারফর্মেন্স বুস্টআপ করতে পারবেন। এবং রেম হিসেবে আছে DDR4 এর একটি 4GB এর স্টিক।
৪. অন্যান্য
গ্রাফিকস কার্ড হিসেবে এতে আছে AMD Redeon Graphics যা টুকটাক গ্রাফিক্স এর কাজ ভালোই সামাল দিতে পারে। সাথে HP এর নিজস্ব 1 বছরের একটি ওয়ারেন্টি সার্ভিস।
আরো পড়ুনঃ সময়ের সেরা ২ টি গেমিং ল্যাপটপ
Asus Vivobook X515MA Celeron N4020
সাধ্যের মধ্যে সব পাবেন না, Asus যেন আবার এটাই প্রমান করে দিল। কিন্তু কিভাবে? বুঝিয়ে বলছি। এতে প্রসেসর হিসেবে Celeron এর প্রসেসর ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়া ৪০ হাজার টাকার বাজেট রেঞ্জ এর ল্যাপটপ হিসেবে বেশ ভালো স্পেসিফিকেশনই এই Asus VivoBook 15 X515MA Celeron N4020 অফার করছে।
তবে স্কুল ওয়ার্ক বা ট্যুরের ছোটখাটো ব্যাগে এটে যায় এমন ল্যাপটপগুলোর কাতারে এই ল্যাপটপ বেশ ভালোই আয়ত্ব করে নিয়েছে। তো চলুন ৪০ হাজার টাকার বাজেটে এই ল্যাটপটি কতটুকু ভ্যালু ফর মানি স্পেসিফিকেশন নিয়ে এসেছে তা একটু বিশ্লেশন করা যাক।
১. প্রসেসর
ল্যাপটপ হিসেবে প্রথমেই আসে প্রসেসরের গল্প, কিছুক্ষণ আগেই বলেছিলাম এতে Celeron এর প্রসেসর ব্যাবহার করা হয়েছে। তবে এটি যে একেবারেই ফেলে দেবার মত প্রসেসর এই ভেবে ভুল করবেন না। পার্ফরম্যান্স এর দিক দিয়ে এটি i3 কেও ভালোভাবেই টেক্কা দেবার ক্ষমতা রাখে।
Asus VovoBook X515MA Celeron N4020 ল্যাপটপটিকে পাওয়ার আপ করছে Intel™ Celeron N4020 প্রসেসর। এটি একটি Duel Core বিশিষ্ট প্রসেসর, যার বেজ ফ্রিকোয়েন্সি 1.10 GHz এবং ম্যাক্সিমাম ফ্রিকোয়েন্সী 2.80 GHz । এতে L3 4MB Cache মেমরি আছে।
আরো পড়ুনঃ কম দামে ভালো ল্যাপটপ
২. ডিসপ্লে
ডিসপ্লে প্যানেলে Asus এর এই ল্যাপটপটিতে ব্যাবহার করা হয়েছে 15.6″ এর Full HD ডিসপ্লে প্যানেল। ঈর্ষনীয় ব্যাপার হলো এতে 16:9 স্পেক রেশিও এর এন্টি গ্লেয়ার ডিসপ্লে ব্যবহার করা হয়েছে। যার স্ক্রিন টু বডি রেশিও ৮৪% এবং এটি ২০০ নিটস পর্যন্ত পিক ব্রাইটনেস প্রভাইড করতে পারে।
৩. স্টোরেজ
৪০ হাজার টাকার রেঞ্জের এই ল্যাপটপটি তে আছে 5400rpm এর 1 TB এর একটি HDD। সাথে র্যাম (RAM) হিসেবে পাচ্ছে অনবোর্ড 4 GB 3200 MHz এর একটি র্যাম। এতে স্টোরেজ এবং র্যাম দুইটি আলাদা করে লাগানোর জন্য ফাকা স্লট পাচ্ছেন। যার ফলে আপনি স্টোরেজ বাড়াতে পারবেন কিছু বাড়তি টাকা যোগ করেই।
৪. গ্রাফিকস এবং পোর্টস
গ্রাফিকস কার্ড হিসেবে এতে Intel UHD 600 এর শেয়ার্ড গ্রাফিক্স পাচ্ছেন। যা আপনার বেসিক কাজগুলো বেশ ভালোভাবে সামলে নেবে। এছাড়াও পোর্ট হিসেবে পাবেন একটি USB 2.00 পোর্ট, একটি একটি করে 3.1 এর USB Type A এবং Type C এবং আরো দুইটি USB 2.00 পোর্ট। এছাড়া 3.5 mm অডিও জ্যাক আর HDMI পোর্ট একটি তো থাকছেই।
৫. অন্যান্য
ওজন মাত্র ১.৫৭ হওয়ায় এটি বেশ লাইট ওয়েট। Wifi 5.0, Bluetooth 4.2। সাথে অ্যাসুসের পক্ষ থেকে ২ বছরের সার্ভিস ওয়ারেন্টি তো পাচ্ছেনই।
৪০ হাজার টাকার মধ্যে কোন ল্যাপটপটি ভালো হবে?
দামের দিক থেকে চিন্তা করলে HP এবং Asus উভয়ই বাজারের সেরা স্পেসিফিকেশন অফার করে। আপনি যদি চিন্তা করেন লুক এবং লাইট ওয়েট আপনার প্রায়েরিটি তবে Asus এর পক্ষ থেকে লঞ্চ করা Asus VivoBook সিরিজের ল্যাপটপটি আপনার জন্য।
কিন্তু আপনি যদি নরমাল লুকের সাথে একটু বেশি ভালো প্রসেসর চান তাহলে এই বাজেট রেঞ্জের মধ্যে, তবে আপনার জন্য Lenovo Slim 3i বেস্ট অপশন। আপনার প্রয়োজন অনুসারে আপনার পছন্দের ল্যাপটপটি সংগ্রহ করতে পারেন।
৪০ হাজার টাকা বাজেট রেঞ্জের আরো কিছু ভালো ল্যাপটপের লিস্ট করা যাবে। তবে তাদের মধ্যে সবার উপরে আজকের আলোচনা করা HP 15s-gr515AU এবং Asus VovoBook X515MA থাকবে। আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। আপনার কোন মতামত থাকলে আমাদের জানাতে ভুলবেন না, ধন্যবাদ সকলকে।