প্রতিবেদন কি ও প্রতিবেদন লেখার নিয়ম

আজকে আমরা প্রতিবেদন কি, কেন লিখতে হয় ও প্রতিবেদন লেখার নিয়ম কানুন সমুহ জানার চেষ্টা করব। এর মাধ্যমে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রতিবেদন লিখতে পারবেন। একইসাথে যেকেউ চাইলে সংবাদপত্রের জন্যও প্রতিবেদন বা রিপোর্ট লিখতে পারবেন। তাহলে কথা না বাড়িয়ে চলুন শুরু করা যাক।

প্রতিবেদন কি?

প্রতিবেদন বলতে কোন একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর সুনির্দিষ্ট তথ্য উপাত্ত দিয়ে বিস্তারিত বিবরণী বুঝায়। প্রতিবেদনকে ইংরেজিতে Report বলা হয়। প্রতিবেদন যিনি লেখেন তাকে বলা হয় প্রতিবেদক এবং ইংরেজিতে Reporter ।

প্রতিবেদনে কোন একটি বিষয়ের উপর গঠনমূলক আলোচনা করতে হয়৷ কারণ প্রতিবেদন হলো একটি বিষয়ের সঠিক অনুসন্ধান করে তার ফলাফাল ইত্যাদি উল্লেখ পূর্বক কোন একটি কর্তৃপক্ষ বা প্রতিষ্ঠানের কাছে তাদের বিবেচনার জন্যে পেশ করা৷

সাধারণত সংবাদপত্র অথবা কোন প্রচার মাধ্যমে বিশেষ করে প্রিন্ট মিডিয়াতে প্রকাশের যোগ্য তথ্য সংবলিত সাবলিল ভাষায় উপস্থাপন করাকেই বলা হয় প্রতিবেদন৷ সহজে পাঠযোগ্য, বোধগম্য হয় এমন স্পষ্ট তথ্য দিয়ে প্রতিবেদনের বিষয়টি তুলে ধরতে হয় যাতে এটি পাঠককে সঠিক ধারণা প্রদান করতে পারে।

অতএব, প্রতিবেদন হলো বেশকিছু সুসংগঠিত তথ্যগত বিবৃতি, যা কোন ঘটনা সম্বন্ধে সংক্ষিপ্ত কিন্তু সঠিক বর্ণনা দিতে সক্ষম। তাই একটি প্রতিবেদনে পর্যাপ্ত পর্যপেক্ষণ, বিবেচনা এবং সর্তকতার সাথে রচনা করতে হয়। কেননা প্রতিবেদনের মাধ্যমেই কোন ঘটনার সত্যিনিষ্ঠ উপস্থাপন ঘটে এবং একটি ঘটনাকে যেহেতু পুনরায় এর সত্যতা উল্লেখ পূর্বক লিখা হয় তাই গবেষণা ও সর্তকতা জরুরি।

প্রতিবেদন লেখার নিয়ম
প্রতিবেদন লেখার নিয়ম

জীবনের যে কোন ক্ষেত্রে প্রয়োজনবোধে প্রতিবেদন লিখতে হয় আমাদের। হতে পারে এটি শিক্ষা, কর্ম জীবন কিংবা সাংগঠনিক কোন কাজে। যেহেতু বিশেষ ক্ষেত্রে প্রতিবেদন লিখতে হয় তাই অনেক সময় এটি কিভাবে লিখা হয় তা নাও জানা থাকতে পারে সবার। প্রতিবেদন লেখার বিশেষ ফরম্যাট নিয়ে অনেকেই তাই জানতে আগ্রহী।

প্রতিবেদন লেখা কখনো কখনো জরুরি হতে পারে। তাই এর নিয়ম ও ফরম্যাট জানা প্রয়োজন। তবে বিষয় অনুযায়ী এর ফরম্যাট পরিবর্তন হতে পারে। তাই মনে রাখা এতটাও সহজ নয়।

বিভিন্ন প্রকারের প্রতিবেদন লেখার নিয়ম কানুন

এখন আমরা প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন, তদন্ত প্রতিবেদন কিংবা সংবাদ প্রতিবেদন লেখার নিয়ম, কৌশল সম্পর্কে জেনে নিব। তার আগে কয়েক ধরণের প্রতিবেদন সম্পর্কে ধারণা দেওয়া যাক।

১. প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদনঃ নির্দিষ্ট কোন প্রতিষ্ঠানের সপ্তাহিক, পাক্ষিক, মাসিক কিংবা বার্ষিক অর্জন, কি কি কাজ করবে তার পরিকল্পনা। কি কাজ করা হয়েছে এসকল বিষয় তুলে ধরার জন্যে এই প্রতিবেদন লেখা হয়। তাই প্রতিবেদনের প্রতিবেদকের প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ধারণা থাকা জরুরী।

২. সংবাদ প্রতিবেদনঃ পত্রিকা অথবা ম্যাগাজিনের জন্যে যে প্রতিবেদনে তৈরি করা হয় তাকে বলা হয় সংবাদ প্রতিবেদন। এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর তথ্য সংগ্রহ করে তা তুলে ধরতে হয়।

৩. অপ্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদনঃ কোন প্রতিষ্ঠানের জন্যে লেখা অনানুষ্ঠানিক প্রতিবেদন যেটিকে খসড়া প্রতিবেদন হিসেবে দেখা হয় তাকেই অপ্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন বলে। তবে এটিও প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদনেই। কেবল তফাত এটি মূল প্রতিবেদন হতে ছোট হয়।

৪. তদন্ত প্রতিবেদনেঃ কোন ঘটনা ঘটার পর তার সত্যতা, মূল ঘটনার বিস্তারিত অনুসন্ধান পূর্বক, যাচাইয়ের নিমিত্তে লেখা প্রতিবেদনকে তদন্ত প্রতিবেদন বলে। বিশেষ করে কোথাও কোন ঘটনা ঘটলে উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে যদি তদন্তের প্রয়োজন হয় তাহলে এই প্রতিবেদন লিখতে হয়।

৫. দাপ্তরিক প্রতিবেদনঃ প্রাতিষ্ঠানিক তথ্য, স্থান, ঘটনা বিভিন্ন বিষয়ের উল্লেখ করা তত্ত্ব-উপাত্ত তুলে ধরে যে প্রতিবেদন করা হয় এটিকে দাপ্তরিক প্রতিবেদন বলে।

৬. প্রস্তাবনা প্রতিবেদনঃ কোন একটি বিষয়ের ফয়সালা করার জন্যে কোন তত্ত্ব দাঁড় করিয়ে তা সমাধানের জন্য প্রতিবেদনে তৈরি করা হলে তাকে প্রস্তাবনা প্রতিবেদন বলে। এধরণের প্রতিবেদনে যে বিষয়টি নিয়ে কাজ করা হবে তার লাভ ক্ষতি, কারণ, সমাধান করার পরিকল্পনা সংক্ষিপ্ত আকারে উল্লেখ থাকে। তাই এই ধরণের প্রতিবেদন বেশ ভেবে চিন্তে লিখতে হয়।

৭. ঘোষণা প্রতিবেদনঃ এই ধরণের প্রতিবেদন কোন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বা সেবা প্রতিষ্ঠান দিয়ে থাকে। কোন সমস্যা নিয়ে, কোন নতুন সেবা বা পুরনো সেবা, কোন পুরোনো সেবা বাতিল সম্পর্কে যে প্রতিবেদনে উল্লেখ থাকে তাকে ঘোষণা প্রতিবেদন বলে।

৮. গবেষণামূলক প্রতিবেদনঃ গবেষণা হলো কোন বিষয়ে বিস্তারিত জরিপ করে তথ্য সংগ্রহ পূর্বক কোন সমস্যার সমাধানের পথ বের করা। তাই গবেষণা প্রতিবেদনও তথ্য উপাত্ত সংবলিত হয়। একটি গবেষণা প্রতিবেদনে গবেষণা যিনি করেন তার মতামত থাকে না খুব একটা। অর্থাৎ গবেষণা করার পর সে-সম্পর্কে প্রতিবেদন লেখাই হলো গবেষণা প্রতিবেদন।

৯. সাক্ষাৎকার প্রতিবেদনঃ কারো সাক্ষাৎকার নেয়ার পর তিনি কি বললেন তার উপর নির্ভর করে লেখা প্রতিবেদনকে সাক্ষাৎকার প্রতিবেদন বলে। এট সাধারণত পত্রিকায় ব্যবহৃত হয়।

১০. বিশেষ প্রতিবেদনঃ আলাদা গুরুত্ব দিয়ে প্রচারের উদ্দেশ্যে কোন প্রতিবেদনে তৈরি করা হলে তাকে বিশেষ প্রতিবেদন বলা হয়। সময়ের সাথে মিল রেখে এই প্রতিবেদন লেখা হয়।

১১. নিয়মিত প্রতিবেদনঃ বিশেষ সময়ের তফাতে কোন বিশেষ ঘটনা অথবা বিষয়ের উপর নির্দিষ্ট সময় পর পর লিখিত প্রতিবেদনকে নিয়মিত প্রতিবেদন বলা হয়। এটি হতে পারে মাসিক, বাৎসরিক, সপ্তাহিক কিংবা দিন অনুযায়ী।

১২. সাংস্কৃতিক প্রতিবেদনঃ কোন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হলে বা আয়োজন করতে চাইলে সে অনুযায়ী লিখিত প্রতিবেদনকে সাংস্কৃতিক প্রতিবেদন বলা হয়।

১৩. রাজনৈতিক প্রতিবেদনঃ রাজনৈতিক বিষয়কে কেন্দ্র করে বিস্তারিত তুলে ধরাকে রাজনৈতিক প্রতিবেদন বলে। এটি সংগঠনের সাথে জড়িত ব্যক্তিরাই প্রতিবেদক হয়ে লিখতে পারে।

প্রতিবেদনে লেখার কাঠামো

নির্দিষ্ট কাঠামো বা নিয়মে প্রতিবেদন তৈরি করতে হয়। নিয়ম ছাড় প্রতিবেদন তৈরি করলে তা কাঙ্খিত তথ্য উপস্থাপন করতে পারে না। যে বিষয়ের উপর প্রতিবেদন লিখা হবে তা কিভাবে উপস্থাপন করা হবে সেটি সম্পর্কে পরিষ্কার ভাবে যুক্তিসহ বক্তব্য উপস্থাপন করতে হবে।

একজন প্রতিবেদকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো তিনি নিরপেক্ষ অবস্থানে থেকে প্রতিবেদন লিখবে। প্রতিবেদনে প্রতিবেদকের নিজস্ব আবেগ বা অনুভূতির কোন প্রভাব থাকবে না। একটি ঘটনা যে যে বিষয় নিয়ে ঘটে তার বিস্তারিত উপস্থাপনা করাই একটি সঠিক প্রতিবেদনের আসল বৈশিষ্ট্য।

আরো পড়ুনঃ দরখাস্ত লেখার সঠিক নিয়ম কানুন

প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন লেখার নিয়ম

নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষের আদেশে প্রতিবেদন এভাবে লিখবেন-

তারিখ: ২০/১০/২০২২ ইং,
ম্যানেজার (যার নিকট দেয়া হবে তার পদবী), যে প্রতিষ্ঠানে দেয়া হবে সেটির নাম।
উক্ত প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা।
প্রতিবেদনের ঘটনাটি যেভাবে তিনি দেখতে চেয়েছেন তা লিখবেন।
সূত্র/স্মারক নং: এমসি/এলডি/প্রতিবেদন/২০২২-২৩ তারিখ: ২০/১০/২০২২ ইং
মহোদয়,

বিনীত নিবেদন এই যে, আপনার আদেশ নং এমসি/এলডি/প্রতিবেদন/তারিখ: ২০ অক্টোবর, ২০২২ অনুসারে (প্রতিবেদনের বিষয়ে যা লিখেছেন তা লিখবেন) ….….… উপলক্ষে প্রতিবেদনটি নিম্নে পেশ করছি।

[শিরোনাম]

বিবরণ: দরকার অনুযায়ী ৩/৪টি প্যারাগ্রাফ।

মতামত:

প্রতিবেদকের স্বাক্ষর

প্রতিবেদনের বিষয়

ঘটনার সময়

প্রতিবেদনের ঘটনাটির তারিখ

প্রতিবেদনের ঘটনা সংগঠনের স্থান

যিনি লিখছেন তার নাম ও ঠিকানা

সংবাদ প্রতিবেদন

সংবাদ প্রতিবেদন প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন হতে আলাদা। সংবাদ প্রতিবেদনের জন্যে প্রয়োজন সুন্দর একটি শিরোনাম। এই শিরোনাম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ প্রতিবেদনে কি লিখা আছে তা এক কথায় এই শিরোনাম হতে বুঝে নেয়া যাবে। তাই একজন পাঠক আগ্রহ করে প্রতিবেদনটি পড়বেন কিনা তা নির্ভর করবে প্রতিবেদনের শিরোনামের উপর। তাই শিরোনাম হতে হবে চিত্তাকর্ষক, সংক্ষিপ্ত কিন্তু মূল বিষয়বস্তু উপস্থাপনযোগ্য। সংবাদ প্রতিবেদন লিখতে হলে তাই শিরোনাম নির্বাচন জরুরি। এরপর দিতে হবে প্রতিবেদকের নাম ও পদবী। এরপর স্থান। এরপর কয়েক লাইনে ঘটনার বিবরণ লিখে বিস্তারিত আলোচনায় যেতে হয়।

সংবাদ প্রতিবেদনে আরো কিছু বিষয়-

১. শিরোনাম: একটি শিরোনাম একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদনকে এক কথায় প্রকাশ করে। চিত্তাকর্ষক শিরোনাম পাঠককে আকর্ষণ করে তৈরি করা উচিত।

২. ভূমিকা: মূল প্রতিবেদনে যাওয়ার আগে অর্থাৎ বিস্তারিত আলোচনা উপস্থাপনের আগে কয়েক লাইনে একটি ভূমিকা লিখতে হয়। যাতে বিস্তারিত পড়ার আগেই পাঠক প্রতিবেদন নিয়ে ধারণা পায়। মূল বিষয় পাঠ করার আগে ভূমিকা দেখে আগ্রহ অনুভব করবেন।

৩. সূত্র: সূত্র অংশে কোন বিষয়ে এটি লেখা হচ্ছে তা নিয়ে সূত্র লিখা থাকবে।

৪. ব্যক্তিনাম ব্যবহার না করা: কোন প্রতিবেদনে সরাসরি ব্যক্তির নাম ব্যবজার না করা উচিত। এর বিকল্প হিসেবে ঐ ব্যক্তির, পদমর্যাদা উল্লেখ করতে হয়। যেমনঃ চেয়ারম্যান,পরীক্ষক, সচিব ইত্যাদি। এছাড়া প্রতিবেদনের সাথে জড়িত অন্য কেউ যদি নাম প্রকাশে ইচ্ছুক না হয় তাহলে তাদের নাম উল্লেখ না করা প্রতিবেদকের নৈতিক দায়িত্ব।

৫. অন্যান্য তথ্য: এছাড়া একটি প্রতিবেদনে, ঘটনার সময়,স্থান, সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি উল্লেখ করে যথাযথ তথ্যের মাধ্যমে বিস্তারিত বর্ণনা করতে হয়।

প্রতিবেদনের বৈশিষ্ট-

১. সরাসরি অভিযোগ না করাঃ যে সকল প্রতিবেদনে মানহানির মামলা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে সেসব ক্ষেত্রে প্রতিবেদকের উচিত নয় সরাসরি অভিযোগ আনা। কেননা থ্রিলার কাহিনি বানানো একজন প্রতিবেদকের কাজ নয়।

২. প্রতিবেদনের সংখ্যা ও ধরণ নির্ধারণঃ অনেক সময় একটি প্রতিবেদনে একটি ঘটনার পূর্ণাঙ্গ উপস্থাপনা সম্ভব হয় না। মূল সমস্যা কি, স্পষ্ট করে তা তুলে ধরা সম্ভব হয় না। সেক্ষেত্রে কয়েকটি প্রতিবেদন তৈরি করার দরকার হতে পারে। এই জন্যে প্রতিবেদনটি কেমন এবং এটি কত নং তা উল্লেখ করতে হবে।

খেয়াল রাখতে হবে যেন কোনো একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের অতি গভীরে যাওয়ার ফলে লেখা যাতে বিরক্তির সৃষ্টি না করে। বিশেষ করে ধারাবাহিক প্রতিবেদনে তথ্য ও ধারা-বর্ণনা পাঠযোগ্য ও কৌতূহলোদ্দীপক হতে হবে। প্রতিবেদনে নানা প্রশ্ন তোলাই যথেষ্ট নয়, প্রশ্নের ব্যাখ্যা বা প্রমাণভিত্তিক তথ্য থাকতে হয়। অযাচিতভাবে কোনো প্রসঙ্গ আনা যাবে না।

সূচনা যে বিষয় নিয়ে করা হয়েছিল তার সাথে সম্পর্কহীন কোনো প্রসঙ্গ যাতে না আসে। গুরুত্বপূর্ণ তথ্য যেমন গুরুত্ব সহকারে উপস্থাপন করতে হবে, গুরুত্বহীন তথ্য তেমনই সচেতনভাবে এড়িয়ে যেতে হবে। এমন যাতে মনে না হয় যে কোনো অংশ পুরো প্রতিবেদনের সাথে বেমানান লাগছে।

৩. সহজপাঠ্যঃ প্রতিবেদন এমন ভাবে লিখতে হয় যাতে করে পাঠক তা সহজ ভাষায় বুঝতে পারে। তাই প্রতিবেদনের ভাষা হবে সহজে বোধগম্য। জটিল ভাষা ব্যবহার করলে পাঠক প্রতিবেদনটি পড়তে আগ্রহী হয় না। প্রতিবেদনে তার আবেদন হারায়৷ তাই প্রতিবেদনের ভাষা হবে সহজ এবং সাবলীল ।

৪. এক কথা বার বার উল্লেখ না করা: প্রতিবেদনে একই কথার উল্লেখ বার বার করা যাবে না। এতে পাঠক বিরক্তবোধ করবে। তাই ঘুরিয়ে প্যাচিয়ে একই কথা বার বার না লিখে যেহেতু সংক্ষিপ্ত ভাষায় প্রতিবেদন লিখা হবে তাই বার বার এক কথা লিখা যাবে না।

৫. আবেগ পরিহারঃ প্রতিবেদনে প্রতিবেদকের কোন আবেগ অনুভূতির উল্লেখ থাকবে না। প্রতিবেদক হবে নিরপেক্ষ, আবেগহীন। কোন রকম আবেগ দ্বারা প্রভাবিত হলে প্রতিবেদ পক্ষপাত দোষে দুষ্ট হবে।

৬. পক্ষপাতিত্ব না করাঃ প্রতিবেদন হবে নিরপেক্ষ, এখানে আবেগের উল্লেখ না থাকায় এর সাথে জড়িত ব্যক্তির প্রতি কোন পক্ষপাতীত্ব করা যাবে না৷ সততা ও বস্তুনিষ্ঠতার সাথে প্রতিবেদন তৈরি করতে হয়। তাই সঠিক তথ্য উপাত্ত সংগ্রহের মাধ্যমে ঠিক যেভাবে ঘটনাটি হয়েছে সেভাবেই উপস্থাপন করতে হবে।

৭. সঠিক তথ্যঃ প্রতিবেদনে ঘটনার সাথে জড়িত সঠিক তথ্য উপস্থাপন করতে হবে। কোন রকম অসঠিক তথ্যের উপস্থাপনা ঘটনার সাথে জড়িতদের গুরুতর ক্ষতির কারণ হতে পারে। এছাড়া সঠিক তথ্যের অভাবে একটি যথাযথ প্রতিবেদন উপস্থাপন করাও সম্ভব না।

৮. নির্ভুলঃ প্রতিবেদনের তথ্যে কোন ভুল থাকতে পারবে না। থাকলে তা প্রতিবেদনের আসল আবেদন হারাবে। প্রতিবেদনটি দ্বারা কি বুঝাতে চায় তা আর বুঝানো সম্ভব হবে না।

৯. অস্পষ্টতা পরিহারঃ প্রতিবেদনে কি বলতে চায় তা একজন প্রতিবেদক কে সুস্পষ্ট ভাবে উপস্থাপন করতে হবে। তথ্যের অস্পষ্ট উপস্থাপনা প্রতিবেদনের আসল ঘটনার বিনষ্ট করতে পারে।

১০. তথ্যের পরিপূর্ণতাঃ অসম্পূর্ণ তথ্য সংবলিত প্রতিবেদন দ্বারা কোন কিছু সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা নেয়া সম্ভব না। তাই একটি প্রতিবেদন হবে পূর্ণাঙ্গ তথ্য সংবলিত। অসম্পূর্ণ তথ্য, আংশিক তথ্য দ্বারা একটি প্রতিবেদন সম্পূর্ণতা পায় না। তাই প্রতিবেদন হবে পরিপূর্ণ তথ্য সংবলিত।

শেষ কথা

প্রতিবেদন লেখা যেমন শিক্ষার্থীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ঠিকই তেমন সাংবাদিকদের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও বিভিন্ন চাকুরীজীবিদেরও প্রতিবেদন লেখার নিয়ম কানুন জানতে হয়। আশা করি, এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা এই বিষয়ে কিছুটা হলেও ধারণা পেয়েছেন। ট্রিক ব্লগ বিডির সাথেই থাকুন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top