চুল পড়া বন্ধ করার উপায় | সর্বশেষ সমাধান

চুল পড়া সমস্যাটি একটি কমন সমস্যা। চুল পড়েনা এমন মানুষ খুঁজে পাওয়াই যাবেনা। কিন্তু চুল পড়ার পরিমাণ বেশি হলেই সেটি চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই আজ চুল পড়া বন্ধ করার উপায় ও এ নিয়ে বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে।

পুরুষ কিংবা নারী, চুলের প্রতি মানুষের আকর্ষণ অপরিসীম। কারণ চুল মানুষের সৌন্দর্যের প্রতীক।

সব পুরুষ নারীর অপরূপ চুল থেকে দৃষ্টি সহজে ফিরাতে পারে না। নারীর বিমুগ্ধ চুলের ইন্দ্রজালে ফাঁসেনি কম পুরুষই।

তাই হয়তো জীবনানন্দ দাশ লিখে ছিলেন

“চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা”

শুধুই কী পুরুষ! নারীরাও পুরুষের বাহারি চুলের মুগ্ধতায় প্রেমে পড়ে। পুরুষের চকচকে টাকার প্রেমে পড়লেও তেলতেলে টাকের প্রেমে পড়া কোন নারীর দেখা অন্তত আমি পাইনি।

নারীদের মত পুরুষের রূপচর্চা ও চুলের যত্নের হারও বেড়ে চলছে দিনদিন। চলুন জেনে নেই পুরুষের চুলের যত্নের প্রয়োজনীয় কিছু টিপস।

চুল পড়ে পাতলা হয়ে যাচ্ছে

চুল আঁচড়ালেই বা চুল মুষ্টি করে আলতো টান দিলেই উঠে আসছে অসংখ্য চুল। তাই চুল উঠার দুশ্চিন্তাতেই অনেকে টাক হয়ে যাচ্ছেন দিনদিন।
আচ্ছা! দুশ্চিন্তায় কী চুল পড়ে?

চলুন জেনে নেই চুল পড়ার কিছু কারণ ও প্রতিকার।

আগে ৫০- ৬০ বছর বয়সীদের চুল পড়ার সমস্যা থাকলেও বর্তমানে ২০-৩০ বছর বয়সীদের চুল পড়ার হার বাড়ছে।

সাধারণত একজন সুস্থ মানুষের মাথায় এক থেকে দেড় লাখ চুল থাকে। একটি চুলের গড় আয়ু সাধারণত ২-৮ বছর। একটি চুল ২-৪ বছর পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়।তারপর বৃদ্ধি কমে যায়।সুতরাং প্রতিদিন কিছু না কিছু চুল উঠা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।

কিন্তু স্বাভাবিকতার মাত্রা কতটুক?

প্রতিদিন ১০০-১৫০ টি চুল উঠা স্বাভাবিক।কিন্তু তার চেয়ে বেশি হলে আশঙ্কাজনক।আপনার চুল উঠার হার কত তা জানার জন্য পর পর কয়েকদিন ঝড়া চুল গণনা করলেই ধারণা পেয়ে যাবেন।যদি তা ১০০-১৫০ এর বেশি হয়,তবে প্রতিকারের প্রচেষ্টা করতে হবে দ্রুত।

চুল পড়া বন্ধ করার উপায়
চুল পড়া বন্ধ করার উপায়

চুল পড়ার ১০ টি কারণ ও বন্ধ করার উপায়

১. খাদ্যাভ্যাস ও ডায়েট

চুল পড়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে খাদ্যাভ্যাস।সুস্থ চুলের জন্য অবশ্যই খাদ্যাভ্যাসের দিকে নজর দিতে হবে।
অপুষ্টিকর খাবার এবং ডায়েটের কারণে চুল পড়ে থাকে।

চুল পড়া প্রতিরোধের সর্বোত্তম উপায় সুষম খাবার।এক্ষেত্রে গাজর, কুমড়া,পেঁপে, টমেটো, পালংশাক, ডিম দুধ সহ সবধরনের হলুদ ও সবুজ শাক সবজি খেতে হবে।

তাছাড়াও বাদাম জাতীয় খাবার চুলের জন্য উপকারি।

২. পর্যাপ্ত পানি পান না করা ও আয়রনযুক্ত পানির প্রভাব

পর্যাপ্ত পানি পান না করার কারণে চুল দুর্বল হয়ে পড়ে।ফলে চুল পড়ে এবং নতুন চুল গজাতে বিঘ্ন ঘটে।এতে চুলের ঘনত্ব কমে যায় ও চুল পাতলা হয়ে যায়।

আবার আয়রনযুক্ত পানিতে গোসল করার কারণেও চুল ফ্যাকাসে ও লালচে হয়ে যায়।আয়রনযুক্ত পানির প্রভাবে চুল রুক্ষ হয়ে চুলের গুনগত মানও নষ্ট হতে পারে।

আরো পড়ুনঃ চোখের সমস্যা ও সমাধান

তাই অবশ্যই বেশি বেশি বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে।এবং আয়রনযুক্ত পানিতে গোসল থেকে বিরত থাকতে হবে।

৩. সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি

সূর্যের ইউভি (uv) রশ্মি ত্বকের জন্য ক্ষতিকর তা আমরা জানি।এটি চুলের জন্যও ক্ষতিকর।

ইউভির কারণে চুল শুষ্ক ও দুর্বল হয়ে যায়।যার কারণে চুল পড়ার হারও বেড়ে যায়।
সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে বাঁচতে ছাতা, ক্যাপ ব্যবহার করা যেতে পারে।

৪. দুশ্চিন্তা

দুশ্চিন্তা চুল পড়ার অন্যতম কারণ।দুশ্চিন্তায় স্বাভাবিকের চাইতে বেশি চুল পড়তে পরে।দীর্ঘদিন দুশ্চিতায় ভুগলে চুল পড়ার পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে।

কাজেই চুল পড়ছে,এটা নিয়েও দুশ্চিন্তা করা যাবে না।বরং এর প্রতিকার খুঁজতে হবে।না হয় চুল পড়ে টাকও হয়ে যেতে পারেন আপনি।

৫. খুশকি

চুল পড়ার আরেকটি কারণ খুশকি। চুল পড়া স্বাভাবিক রাখতে হলে অবশ্যই চুলকে খুশকি মুক্ত রাখতে হবে।
চুলকে খুশকি মুক্ত রাখতে খুশকি বিরোধী শ্যাম্পু ব্যবহার করা যেতে পারে।

৬. ভেজা চুল আঁচড়ানো

আপনার যদি ভেজা চুল আঁচড়ানোর অভ্যাস থেকে থাকে তবে তা পরিত্যাগ করতে হবে।শুষ্ক চুলের তুলনায় ভেজা চুলের গোড়া অনেক বেশি নরম থাকে।ফলে অল্প আঘাতেই চুল উঠে যায়।

তাই গোসল করার পর চুল ভেজা অবস্থায় কোন ভাবেই আঁচড়ানো যাবে না।ভেজা চুলের ঝট খোলার জন্য চুল আঁচড়ানোর পরিবর্তে আঙ্গুলের সাহায্যে আলতু ভাবে ঝট খুলে নিতে পারেন।

৭. অতিরিক্ত ক্যামিকেল ব্যবহার

অতিরিক্ত কেমিক্যাল ব্যবহার করা।কিছুদিন পর পর চুল কালার করা।চুল পড়ার আরেকটি কারণ।

তাই এসব এড়িয়ে চলাই ভালো।

৮. ধুমপান

ধুমপানের কারণে রক্ত নালিকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।এবং রক্ত চলাচল বাধাগ্রস্ত করে।শুধু তাই নয়,ধুুমপান চুলের জন্যও ক্ষতিকর। ধুমপানের কারণে চুল পড়া বৃদ্ধি পায়।

তাই চুল পড়া রোধ করতে হলে ধুমপান পরিহার করতে হবে।

৯. অতিরিক্ত চা, কপি পান করা

অতিরিক্ত চা কপি পানও চুলে পড়ার জন্য দায়ী।তাই চা কপিও কম পান করা শ্রেয়।

১০. বংশগত

বংশগত কারণে চুল পড়ে থাকলে সে ক্ষেত্রে আসলে কিছু করার থাকে না। কারো এ সমস্যা থেকে থাকলে চুল নিয়ে অধিক যত্নবান থাকা উচিৎ। যাতে অন্যান্য কারণে আর চুল না পড়ে।

শেষ কথা

উপরে দেওয়া যেসব কারণে চুল পড়ে সেসব কারন থেকে দূরে থাকলে চুল পড়া বন্ধ করা সম্ভব। আশা করি, চুল পড়া বন্ধ করার উপায় সম্পর্কে জেনেছেন। নিয়ম মেনে চলুন, চুল পড়া বন্ধ করুন।

লেখা ~আহমেদ ইসহাক।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Scroll to Top