পতেঙ্গা সী বিচ ও স্থানীয়দের যত প্রতারণা

পতেঙ্গা সী বিচ মানে প্রতারণার স্বর্গরাজ্য

মনোরম পরিবেশ ও প্রকৃতির এক অনন্য উপহার চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সী বিচ। যা পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত নামেও পরিচিত। আজ আপনাদের সামনে তুলে ধরবো সেখানকার স্থানীয়দের যত সব প্রতারণার চিত্র।

পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের সূর্যাস্তের দৃশ্য (পতেঙ্গা সী বিচ)
পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের সূর্যাস্তের দৃশ্য

ফটো উঠাতে প্রতারণার জাল

পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত যেন ফটোগ্রাফারদের স্বর্গরাজ্য। হবেইবা না কেন? এটা যে একটা জনপ্রিয় পর্যটন এলাকা। খুশির মুহূর্তগুলোকে ধরে রাখতে ক্যামেরার জুড়ি নেই। আর ডিএসএলআর ক্যামেরা হলেতো কথাই নেই। আর এতসব ক্যামেরাম্যান দেখে খুশি হবারই কথা। কিন্তু সমস্যা সেখানে না। সমস্যা অন্যখানে।

পতেঙ্গা সী বিচ এ থাকা এইসব ফটোগ্রাফারের বেশিরভাগই প্রতারক চক্রের সাথে জড়িত। এরা আপনাকে সর্বস্বান্ত করতে সর্বদা প্রস্তুত। ছবি তোলার জন্য আপনাকে নানারকম অফার দিতে তারা পটু।

আপনি ছবি তুলতে রাজি হওয়া মানেই তাদের ফাঁদে পাঁ দিলেন। তারা কৌশলে একই পজিশনে আপনার ১০-১৫ টি পর্যন্ত ছবি তুলে ফেলবে। এটা তাদের প্রতারণার দ্বিতীয় অংশ। এরপর ছবিগুলো দেওয়ার নাম করে আপনাকে তাদের দোকানে নিয়ে যাবে। তাদের দোকানগুলো পতেঙ্গা সী বিচ এর পাশেই থাকে।

আপনাকে তাদের দোকানে নেওয়া তাদের প্রতারণার তৃতীয় অংশ। আপনি তাদের দোকানে যাবেন মানেই সেখান থেকে ছবি না নিয়ে ফিরে আসতে পারবেন না। তাদের ক্যামেরায় তোলা আপনার সব ছবি কিনে নিতে হবে। এছাড়া আপনাকে তারা ছাড়বেনা।

আপনার বিভিন্ন পজিশন থেকে তোলা শতাধিক ছবি তারা আপনাকে কিনে নিতে বাধ্য করবে। আপনি তখন অসহায়ের মত সব কিনে নেওয়া ছাড়া তেমন কিছুই করতে পারবেন না।

তারা আপনাকে বলবে আপনি যেই ছবি নিতে চান না সেটা ডিলিট করে দিবে। আপনাকে একেকটি ছবি দেখাবে আর আপনি বললে একটা একটা করে ডিলিট করে দিবে। আর আপনি যেগুলো নিতে চান সেগুলো রেখে দিবে।

কিন্তু যখন কম্পিউটারে ছবি দেয়ার জন্য প্রস্তুত করবে তখন মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়বে। আপনি যেই ছবিগুলো নিতে চাননা সেগুলো ডিলিট হয়নি। সেগুলোও আছে। তার মানে তারা বাড়তি ছবিগুলো ডিলিট না করে কৌশলে রেখে দিয়েছে। আর এবার তারা আর কোন সুযোগ দিবেনা। সবগুলো ছবি কিনে নিতে বাধ্য করবে।

এরকম একটি অভিজ্ঞতা আমার জানা। তারা ছবিগুলো ডিলিট করেছে বলে আসলে কৌশলে রেখে দিয়েছে। পরে সব ছবি কিনে নিতে বাধ্য করে।

তাই পর্যটন এলাকায় ছবি তোলা ও আরো কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে

পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে কিনাকাটা

স্থানীয় দোকানীরা চওড়া দামে বিভিন্ন জিনিসপত্র বিক্রি করেন। যেই জিনিসের প্রকৃত দাম ২০ টাকা সেটা কিনতে হয় ৩০-৪০ টাকা দিয়ে। যেমনঃ একটি খেলনা গাড়ি নোয়াখালীতে ৫০ টাকা হলে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে তার দাম ৮০-৯০ টাকা।

পানির বোতলে মূল্য ১৫ টাকা লেখা থাকলেও তা কিনতে হয় ২০-২৫ টাকায়। যেটা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের সরাসরি লঙ্গন।

স্পীড বোট প্রতারণা

এমন অভিযোগ আছে যে স্পীডবোটে লোকজনদের সাগরের মাঝখানে নিয়ে লুট করা হয়। এই বিষয়টির কোন প্রত্যক্ষদর্শী বা ভুক্তভোগীর সাথে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে এই বিষয়েও সতর্ক থাকুন।

প্রতারণা এড়াতে ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি হেল্পলাইন

যদিও এটা বলতেই বিবেকবান মানুষেরা বুঝবে এসব প্রতারণায় কার হাত আছে। কেন অবাধে পর্যটন পুলিশ থাকা সত্বেও এসব প্রতারণা সংঘটিত হচ্ছে। কেন এর বিরুদ্ধে অভিযান দৃশ্যমান নয়। তারপরেও মানুষের আস্থার জায়গা ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি হেল্পলাইন ৯৯৯।

আপনি ৯৯৯ এ ফ্রি কল করে জরুরি পুলিশি সেবা নিতে পারবেন। কোন প্রকার ঝামেলায় পড়লে অবশ্যই কল করুন ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি হেল্পলাইন ৯৯৯ এ। আশা করি আপনি আপনার নিরাপত্তা পাবেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top