বেসরকারি নাকি সরকারি চাকরি? সবাই কেন সরকারি চাকরির পিছনে ছোটে?

আসসালামুয়ালাইকুম। কেমন আছে সবাই? আশা করি ভালো আছেন। আজ আমরা জানবো, বাংলাদেশে চাকরির ক্ষেত্রে মানুষের পছন্দ এবং কেন সরকারি চাকরির পিছনে সবাই ছোটে। চলুন শুরু করা যাক।

সরকারি কোন প্রতিষ্টানে চাকরি হলো সরকারি চাকরি। এটা যে কোন শ্রেনীর হতে পারে। ১ম শ্রেনী, ২য় শ্রেনী অথবা ৩য়/৪র্থ শ্রেনী। সরকারি অফিসের পিয়নের চাকরি হলেও সেটা সরকারি চাকরি।

সরকারি বাদে অন্য যে কোন প্রাইভেড ফার্ম বা কোম্পানিতে চাকরি করাকে প্রাইভেট চাকরি বলে। প্রাইভেট জবে কাজের চাপ একটু বেশি থাকে এবং সে তুলনায় বেতন একটু কমই বলা চলে।

সরকারি চাকরির সুবিধা

চাকরির স্থায়িত্বঃ সরকারি চাকরি একবার নিয়োগ এর পর চাকরি স্থায়ী ধরা হয়  যদি চাকরিপ্রার্থীর কোন আইনগত সমস্যা না থাকে।

সরকারি ছুটিঃ সরকারি চাকরির অন্যতম সুবিধা হলো স্বাপ্তাহিক ছুটি। সরকারি বেশির ভাব অফিস শুক্র ও শনিবার বন্ধ থাকে। এ সুবিধার জন্যও অনেকে সরকারি চাকরি পছন্দ করে।

বেটার পে স্কেলঃ সরকারি চাকরির পে-স্কেল ভালো। তাই সবাই অন্য সেক্টর থেকে সরকারি চাকরিকে প্রিফার করে থাকে।

প্রাইভেট না সরকারি চাকরি ?
Image Source: pexels.com

অন্যান্য ভাতাঃ সরকারি চাকরিতে বেতন এর সাথে অন্যান্য কিছু ভাতা পাওয়া যায়। তা হলো বাড়ী ভারা ভাতা, মহার্ঘ ভাতা, চিকিৎসা ভাতা, যাতায়াত ভাতা, বোনাস, টিফিন ভাতা, ভ্রমন ভাতা, উৎসব ভাতা।

সম্মানঃ আমাদের সমাজে যারা সরকারি চাকরি করে তাদের অন্যদের থেকে আলাদা করে দেখা। তাদেরকে ভালো সম্মান দেওয়া হয়ে থাকে সমাজে।

মানসিক প্রশান্তিঃ কিছু কিছু স্টুডেন্ট এর জন্য গভারমেন্ট চাকরি হলো মানসিক প্রশান্তি। তারা সরকারি চাকরি ছাড়া কিছু ভাবতেই পারে না। তারা মনে করে সরকারি চাকরি না পেলে তাদের জীবন বৃথা ।

আরো পড়ুন : দরখাস্ত লেখার নিয়ম ২০২১| চাকরির,উপবৃত্তির, ছুটির আবেদন পত্র

বেসরকারি চাকরির সুবিধাঃ

উন্নত কর্ম পরিবেশঃ প্রাইভেট জবে উন্নত কর্ম পরিবেশ পাওয়া যায়। প্রাইভেট কোম্পানিতে অফিস অথবা ফ্যাকটরি এর পরিবেশ অনেক পরিষ্কার ও সাজানো গোছানো থাকে। এতে কাজের প্রতি মনোযোগ বৃদ্ধি পায়।

স্মার্ট স্যালারিঃ প্রাইভেট জবে ভালো কাজের পারফরমেন্স এর জন্য স্মার্ট স্যালারি অর্জন সম্ভব। তবে এতে কাজের পারফরমেন্স ও গতি মূখ্য বিষয়। তবে ফ্রেশারদের স্যালারি অনেক কম দেওয়া হয়। এখানে অভিজ্ঞতাকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়।

যোগ্যতা প্রমানের সুযোগঃ প্রাইভেট ফার্মে নিজের যোগ্যতা প্রমান এর সুযোগ রয়েছে। এবং প্রাইভেট ফার্মে যে যেই কাজে দক্ষ তাকে সাধারনত সেই কাজ ই দেওয়া হয়। এতে নিজের যোগ্যতা প্রমানের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।

প্রোমোশনের সুযোগঃ প্রাইভেট কোম্পানিতে কাজের পারফরমেন্স ভালো হলে প্রোমোশনের সুযোগ ভালো রয়েছে। কাজ পারলে আপনাকে কাজের জায়গায় প্লেস করবেই।

চাকরির পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতিঃ

চাকরির জন্য প্রস্তুতি সাধারনত স্টুডেন্টরা তাদের গ্রেজুয়েশন এর পর থেকে নিয়ে থাকে। অনেকে গ্রেজুয়েশন এর আগে থেকেই নিতে থাকে। চাকরির টার্গেটের উপর ভিত্তি করে এর প্রস্তুতি ভিন্ন হতে হয়।

প্রস্তুতি যদি সরকারি চাকরির হয় তাহলে প্রচুর পড়তে হবে, অর্থ্যাৎ পড়ার পদ্ধতি হবে এক রকম। আবার চাকরির টার্গেট যদি প্রাইভেট হয় তাহলে পদ্ধতি হবে অন্যরকম।

চাকরির পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে কিছু জিনিস মাথায় রাখতে হবে। তা নিচে দেওয়া হলোঃ

রুটিন করাঃ আপনাকে চাকরির পরীক্ষায় উর্তীর্ন হতে হতে হলে ডেইলি রুটিন করে পড়াশোনা করতে হবে। আপনাকে দিনের বেশিরভাগ সময় টা পড়ার মধ্যে কাটাতে হবে। অনেকে সাজেস্ট করে দিনের ১২-১৪ ঘন্টা পড়ার জন্য।

সিলেবাস জানাঃ আপনাকে চাকরির প্রস্তুতি নিতে হলে প্রথমে পরীক্ষার সিলেবাস জানতে হবে। আপনি যদি সিলেবাস ই না জানেন তা হলে পরিক্ষার প্রস্তুতি কেমনে নিবেন। আর সিলেবাস সম্পর্কে ভালো জ্ঞান না থাকলে আপনি পরীক্ষায় ভালো করতে পারবেন না । চাকরি পাওয়ার সুযোগ একদম কমে যাবে।

বই সংগ্রহঃ আপনাকে সিলেবাস জেনে এর পর বই সংগ্রহ করে পড়া শুরু করে দিতে হবে। আপনার এক্ষেত্রে মাঝে মাঝে ১টি মাঝে মাঝে অনেকে বই লাগতে পারে। তবে বই ও পড়ার প্লান সম্পূর্ন আপনার উপর। আপনার পরিপূর্ন প্লান এর উপর আপনার সফলতা নির্ভর করে।

চাকরির সার্কুলারঃ আপনাকে চাকরির সার্কুলার সম্পর্কে ভালো জ্ঞান ও আপডেট হতে হবে। আপনি যদি সার্কুলার বের হওয়ার পর নাই জানেন তাহলে চাকরির এপ্ল্যাই করতে পারবে না। আর এপ্লাই ছাড়া তো চাকরি পাওয়া সম্ভব না। চাকরির সব সার্কুলার পেতে ভিজিট করুন Job Circular Bangladesh অথবা bdgovtjobs.com

প্রিলি পরীক্ষার প্রস্তুতিঃ চাকরির পরীক্ষার প্রথম ধাপ হলো প্রিলি পরীক্ষা। এর প্রস্তুতি নিতে হলে প্রচুর পরিমান MCQ পরতে হবে কারন পরীক্ষায় শুধু মাত্র বহুনির্বাচনী ই আসবে। সাধারন্ত এই MCQ পরীক্ষা ১০০ নাম্বারের হয়ে থাকে। এই পিলি পরিক্ষায় না উত্তীর্ণ হলে পরে ধাপে বা রাইটিং পরীক্ষায় অংশ নেওয়া যায় না।

রিটেন পরীক্ষার প্রস্তুতিঃ রিটেন পরীক্ষার জন্য আপনার হাতের লিখা ও সময়ের মধ্যে লিখা কমপ্লিট করার যোগ্যতা থাকতে হবে। এবং পরীক্ষার আগে প্রচুর রাইটিংন প্রাকটিস করতে হবে। বিভিন্ন ফ্রি হ্যান্ড রাইটিং সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে হবে। দেশি ও আন্তরজাতিক বিষয়াবলির উপর ভালো কমান্ড রাখতে হবে।

মৌখিক পরীক্ষার প্রস্তুতিঃ আপনি রিটেন পরীক্ষায় টিকলে আপনাকে মৌখিক বা ইন্টারভিউ এর জন্য ডাকা হবে। এতে আপনার পার্সোনালিটি ও এটিটিউড, ব্যবহার পরীক্ষা করা হবে। আপনার কমিউনিকেশন ও আইকিউও চেক করা হবে। আপনি কতটুক মানুষের সাথে ইন্টারেকশন করতে পারেন তা যাচাই করা হবে। আশা উক্ত পোস্ট থেকে সহজে চয়েস করতে পারবেন সরকারি জব করবেন নাকি প্রাইভেট ও চাকরির প্রস্তুতি কিভাবে নিতে হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top