সময়ের আবর্তন ও মানুষের বিবর্তন (প্রবন্ধ)

সময়ের আবর্তন ও মানুষের বিবর্তন (প্রবন্ধ)
মোঃ আরিফ হোসেন

কথিত আছে, মানুষ সময়ের কাছে বন্দী। আসলে কি তাই? আসলেই তাই। সময় ও মানুষের সম্পর্ক যদি আমরা ধারাবাহিক বিশদভাবে আলোচনা করি তাহলে পাবো…

ধরি, মানুষের জীবন হলো রেল-স্টেশনের মত। আর মানুষ হলো চলন্ত রেলগাড়ী। সেখানে সময় হলো জৈবশক্তি। মানুষ নামক কল্পনীয় রেলগাড়িকে সময় নামক কল্পনীয় জৈবশক্তি প্রবাহিত করে। যখন জৈবশক্তি শেষ হয় তখন রেলগাড়ী স্তব্ধ হয়ে যায়।

সময়ের আবর্তন ও মানুষের বিবর্তন
সময়ের আবর্তন ও মানুষের বিবর্তন

জন্ম থেকে মৃত্যু অবধি সময় মানুষে বিভিন্নরূপে বিভিন্নভাবে এই অসীম প্রকৃতির সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। একটা শিশুর জন্ম হলে সময় তার পরিচয় দেয় শৈশবকাল বলে।

সেই শিশুটি বড় হলে কৈশোরকাল। আবার কিছুসময় পর যৌবনকাল। অবশেষে সময় মানুষকে নিয়ে যায় বৃদ্ধকালে। অবশেষে মানুষটির যখন এই অপরিসীম প্রকৃতির খেলায় সময় শেষ হয় তখনই চিরকালের জন্য বিদায় নিতে হয় এই ভবলীলা থেকে।

সকালের সময় আসে একরকম, বিকালের সময় ফিরে যায় অন্যরকম হয়ে। সকালে কেউ রাজা হলেও সময় তাকে বিকালে ফকিরে পরিণত করে।

মানুষ সময়ের কাছে ভিক্ষুক। সময়ের কাছে সবাই আশা করে শুভ কিছু, কল্যাণকর কিছু। যদি তা সাঙ্গ হয় তবে তা সুসময়। আর যদি বিপরীত কিছু হয় তা কুসময় বলে ধরা হয়।

একজন মানুষ উচ্চশিক্ষা অর্জন করে চাকরির জন্য দ্বারেদ্বারে ঘুরে অথচ চাকরি হয় না। অপরদিকে একজন মানুষ পড়ালেখা শেষ না করতেই অনেক ভালো চাকরি পেতে পারে। এই দুটোও সময়েরই আবর্তন।

যে মানুষটি উচ্চশিক্ষা অর্জন করার পরও চাকরি পাচ্ছে না, তখন বুঝতে হবে তার সময় তাকে চাকরি পর্যায়ে নিয়ে যায়নি।

মানুষের জীবনে যে জন্ম ও মৃত্যু নামক গণ্ডি আছে তার প্রতিটি স্টেশনে মানুষকে সময় আপন গতিতে দাঁড় করায়। সেই স্টেশনে হয়তো সুসময়ের দেখা হয় নয়তো কুসময়ের। তবে জগতে অসময় বলতে কিছুই নাই। সেটা সুসময় ও কু-সময়ের মাঝে ফুটবলের মতো।

গতিশীল সময়
গতিশীল সময়

মানুষের কাছে সময়ের গুরুত্ব অপরিসীম। সুসময়কে পেতে মানুষ তার গণ্ডিচ্যূত হতে চায়। সময়কে বন্দী করতে চায় নিজের আয়ত্ত্বে। বাংলাদেশ থেকে আমেরিকা যেতে মানুষের বছরের পর বছর লেগে যেত। কিন্তু মানুষ সময়কে আরও সঙ্কীর্ণ করতে এখন বিমান বা রকেটে করে অল্প সময়ে আমেরিকা যেতে পারে।

কিন্তু তা সত্ত্বেও সময়কে নিজের আয়ত্ত্বে আনতে পারেনি। বরং মানুষ আজন্ম সময়ের কাছে বন্দী।

এই পোস্ট সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন, অভিযোগ, মতামত বা পরামর্শ থাকলে নিচে কমেন্ট করুন। আমরা সকল কমেন্টের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করি। সকল আপডেট সবার আগে পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিন। আর টুইটারে ফলো করুন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top