ধারাবাহিক ভৌতিক গল্প “ভয়ংকর পাতালপুরী” | মোঃ আরিফ হোসেন | ৪র্থ পর্ব

ভয়ংকর পাতালপুরী” একটি ভৌতিক গল্প। এটি মোঃ আরিফ হোসেনের একটি বিশেষ ধারাবাহিক গল্প। ট্রিক ব্লগ বিডিতে এই গল্পটির একেকটি পর্ব প্রতি শনিবার দুপুর ২ টায় প্রকাশিত হবে। আজকে হচ্ছে ভয়ংকর পাতালপুরী ৪র্থ পর্ব

ভৌতিক গল্প- ভয়ংকর পাতালপুরী (৪র্থ পর্ব)
লেখক- মোঃ আরিফ হোসেন

তিনজনে আনমনে হাঁটছি। কারো ঠোঁটে কোন কথার রেখা নেই। এখানে সকাল আর বিকালের পার্থক্য কি? দিন হচ্ছে নাকি রাত বুঝতে পারছি না। হঠাৎ খেয়াল হলো রাকিবের হাতঘড়ি কথা।

এই রাকিব, এই। দ্যাখ্ তো তোর ঘড়িতে কয়টা বাজে?
ঘড়ি! এই যা, ঘড়ি তো বন্ধ! আচ্ছা বুঝেছি। এখানে দুনিয়ার সমস্ত জিনিস অচল।

আমাদের কথা শেষ না হতেই…. একদল ভয়ংকর প্রাণীর আগমন। কি ভয়ঙ্করই না তাদের চেহারা! মাথায় চন্দ্রাকৃতির শিং। দাঁতগুলো সাদা মুলোর মুতো। হাতে লোহার শিকল। দেখেই আমাদের পিলে চমকে গেল। মোহন আমার পিছনে লুকায়।

ধারাবাহিক ভৌতিক গল্প “ভয়ংকর পাতালপুরী” | মোঃ আরিফ হোসেন | ৪র্থ পর্ব

‘এই বজ্জাত মানুষের জাত্, তোরা এই ঘুমন্ত মৃত্যুপুরীতে কি করছিস? তোদের হাড়গোড় আস্ত চিবিয়ে খাবো’।
যেই বলা সেই কাজ। তাদের মধ্যে একজন এসে মোহনের দু-হাত চেপে ধরলো। তার দেখাদেখি আমাকে আর রাকিবকেও ধরলো।

এবার টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছে কোথাও। কোথায় নিয়ে যাচ্ছে জানি না। তবে তাদের চলার গতি এতো ভয়ঙ্কর যে কল্পনাও করা যায় না। উসাইন বোল্ট হয়তো তাদের চলার গতির সাথে দৌড়েও পারবে না। লম্বা লম্বা পা ফেলে আমাদের টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছে।

সামনে মস্ত একটা খাড়া পাহাড়। এবার হয়তো আমাদের টেনেহিঁচড়ে এই পাহাড় টপকাবে!

তা হলো না। পাহাড়ের পাদদেশে পৌঁছাতেই একটা দরজা খুলে গেল। ভিতরে অনেকগুলো প্রাসাদ। জাঁকজমকপূর্ণ প্রদর্শনী লাগানো। কিন্তু কোনকিছুই পৃথিবীর প্রাসাদের মতো হচ্ছে না। তা দেখতে অনেক উন্নত।

মোহনকে ধড়াম করে মেঝেতে ফেল দিল। আমাকে আর রাকিবকে ধরে আছে চারজন বেঁটেখাটো লোক। লোক না। দেবতা বা এ জাতীয় কিছু।

‘এই বজ্জাত মানুষের জাত, উঠে দাঁড়া। আর ইষ্টনাম জপ কর। আজকে তোর নরবলি মাধ্যমে আত্মার প্রশান্তি হবে।’ মোহনকে লক্ষ করে গর্জে উঠলো তাদের রাজা।

লেদাপোকার মত চেহারা। চোখগুলো জ্বলজ্বলে লাল রঙের। মাথায় তীরের ফলার মতো দুটো শিং। এঁকেবেঁকে আমাদের দিকে আসছে। মোহন সামনে ছিলো। সে পিছনে ঘুরে দিল এক দৌড়। ওর দেখাদেখি আমিও। যে করেই হোক এই প্রাণীগুলো থেকে বাঁচতে হবে।

আমাদের যারা বন্দী করছিল, তারা কেউ আশেপাশে নাই।
আমরা একটা নদীর ধারে এলাম। ওমা একি! এদিকে পানিগুলো উল্টো চলে। আর দূরে একটা ঝর্ণা দেখা যাচ্ছে। সেখান থেকে পানির গর্জন শোনা যাচ্ছে।

আমি বা আমরা কেউ উল্টো বয়ে চলা পানিতে নামলাম না। না জানি কি ভয়ংকর বিপদই না আমাদের জন্য অপেক্ষায় আছে।
এমন সময় খানিক দূরে একটা গোঙ্গানি শব্দ ভেসে এলো।

আমি তাড়াতাড়ি ছুটে চলি শব্দটা লক্ষ করে। মোহন আর রাকিব পিছন থেকে আমাকে বাধা দেয়। তাতে কোন লাভ হয় না। ওরা জানে, আমি রহস্যভোজি। রহস্যকে ভোজন না করলে আমার মনের ক্ষিদে মরে না।

সাদাটে গোলাপি রঙের একটা পাথরে ঢিবি। ঢিবি নয়। মস্ত একটা পাথরই বলা চলে। পাথরের ভিতর থেকে গোঙ্গানির শব্দ আসছে…

৪র্থ পর্ব এখানেই শেষ। ৫ম পর্ব আসবে আগামী শনিবার দুপুর ২ টায়

অন্যান্য পর্বের লিংক-

ডিসক্লেইমার

“ভয়ংকর পাতালপুরী” একটি কাল্পনিক ভৌতিক গল্প। বাস্তবের সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই। যদি কোনো ব্যক্তি, স্থান, প্রতিষ্ঠান ইত্যাদির সাথে মিলে যায় এটি নেহাতই কাকতালীয়

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top