আপনি কি ব্রণ সমস্যায় ভুগছেন? কার্যকর কোনো ব্রণ দূর করার উপায় খুঁজে পাচ্ছেন না? ভয় নেই, এই লেখাটি তবে আপনার জন্য।
আজ আমরা বেশ কিছু প্রমাণিত পদ্ধতি আলোচনা করবো যা ব্রণ দূর করতে অত্যন্ত কার্যকর।
প্রায় ৮০% ক্ষেত্রেই ব্রণের প্রতি সংবেদনশীলতার কারণ হল জেনেটিক বা বংশগত। এই সমস্যাগুলো দীর্ঘমেয়াদী হয় বিশেষত যখন ত্বকের মৃত কোষ এবং ত্বকে থাকা তেলগুলো লোমকূপে আটকে যায়।
এই অবস্থার সাধারণ বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে রয়েছে ব্ল্যাকহেডস বা হোয়াইটহেডস, ব্রণ, তৈলাক্ত ত্বক ইত্যাদি। এটি প্রাথমিকভাবে মুখ, বুকের উপরের অংশ এবং পিঠ সহ শরীরের যে সমস্ত জায়গাতে উচ্চ সংখ্যক তেল গ্রন্থি থাকে সেখানকার ত্বককে প্রভাবিত করে।
ব্রণ কি?
ব্রণ ত্বকের এমন একটি অবস্থা যেখানে ত্বকের মৃত কোষ এবং ত্বকের অতিরিক্ত তেল লোমকূপে আটকে যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটি লোমকূপের গোড়ায় তেল গ্রন্থিজড়িত অনেকগুলি অ-প্রদাহজনক এবং প্রদাহজনক ত্বকের ক্ষত সৃষ্টি করতে পারে। যার মধ্যে রয়েছে হোয়াইটহেডস, ব্ল্যাকহেডস, পিম্পল, পুস্টুলস, সিস্ট ইত্যাদি।
সব বয়সের মানুষকে প্রভাবিত করলেও কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে ব্রণ সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। তীব্রতার উপর নির্ভর করে ব্রণ মানসিক যন্ত্রণার কারণ হতে পারে। অনেক সময় ত্বকে স্থায়ী দাগও পড়তে পারে।
ব্রণ কেন হয়?
ব্রণ দূর করার উপায় জানতে হলে প্রথমে জানতে হবে ব্রণ কেন হয়?
আমাদের ত্বকের নীচে তেলগ্রন্থিগুলো ত্বকের ছিদ্রের সাথে সংযুক্ত থাকে। গ্রন্থিগুলো একটি তৈলাক্ত তরল উৎপন্ন করে যাকে সিবাম বলে। এই সিবাম ত্বকের মৃত কোষগুলোকে ছিদ্রের মাধ্যমে ত্বকের পৃষ্ঠে নিয়ে আসে।
কোন কারণে ত্বকের এই ছিদ্রগুলো ব্লক হয়ে গেলে সেখানে ব্রণ বা পিম্পল উঠতে শুরু করে। তাছাড়া ত্বকে থাকা Propionibacterium acne নামক ব্যাক্টেরিয়া পিম্পল হওয়ার অন্যতম কারণ।
হরমোনজনিত কারণেও ব্রণ হতে পারে। এই ক্ষেত্রে অ্যান্ড্রোজেনের মাত্রা বৃদ্ধিকে দ্বায়ী বলে মনে করা হয়। এই হরমোনের মাত্রা বয়ঃসন্ধি শুরু হলে বেড়ে যায় এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে ইস্ট্রোজেনে রুপান্তরিত হয়।
ক্রমবর্ধমান এন্ড্রোজেনের মাত্রা ত্বকের নীচে তেল গ্রন্থিগুলোর বৃদ্ধি ঘটাতে থাকে। বর্ধিত গ্রন্থি অনেক বেশি সিবাম উৎপাদন করে যা ত্বকের ছিদ্রগুলোর দেয়াল ভেঙ্গে ফেলতে পারে। যার ফলে ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ এবং ব্রণের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে।
এছাড়াও অন্যান্য বেশকিছু কারণ রয়েছে যেগুলো ব্রণকে ট্রিগার করতে পারে, যেমন-
- এন্ড্রোজেন এবং লিথিয়াম থাকে এমন ঔষধ গ্রহণ করা।
- চির্বযুক্ত প্রসাধনী ব্যবহার করা।
- হরমোনের পরিবর্তন।
- আবেগী মানসিক যন্ত্রণা।
- অনুপযুক্ত মেকআপ পণ্য ব্যবহার করা।
- দিনশেষে মেকআপ ধুয়ে না ফেলা এবং স্বাস্থ্যবিধি অনুশীলন না করা।
- এবং পরিমার্জিত চিনি, লবণ এবং কার্বোহাইড্রেটের উচ্চ উপাদানযুক্ত খাবার গ্রহণের কারণেও ব্রণ হতে পারে।
আরো পড়ুনঃ ব্রণ দূর করার ঔষধের নাম
ব্রণের প্রকারভেদ
সাধারণভাবে আমরা মুখের ছোট ছোট ফুসকুড়িকে ব্রণ হিসাবে জানলেও প্রকৃতপক্ষে এটি বেশ কিছু প্রকার হতে পারে। এগুলোকে আকার, রঙ এবং ব্যথার স্তরের উপর ভিত্তি করে ভাগ করা হয়।
- হোয়াইটহেডস: এগুলি ত্বকের নীচে থাকে এবং তুলনামূলকভাবে ছোট আকৃতির হয়ে থাকে।
- ব্ল্যাকহেডস: পরিষ্কারভাবে দৃশ্যমান। এগুলি কালো এবং ত্বকের উপরিভাগে সহজেই দেখা যায়।
- প্যাপিউলস: এগুলো ছোট, সাধারণত গোলাপী ফুসকুড়ি, ত্বকের পৃষ্ঠে দৃশ্যমান হয়।
- পুস্টুলস: ত্বকের পৃষ্ঠে স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান হয়। এদের গোড়ায় লাল এবং উপরের দিকে পুঁজ থাকে।
- নোডুলস: ত্বকের পৃষ্ঠে স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান। এগুলি বড়, শক্ত, বেদনাদায়ক পিম্পল যা ত্বকের গভীর পর্যন্ত বিস্তৃত থাকে।
- সিস্ট: এগুলোও ত্বকের পৃষ্ঠে স্পষ্টভাবে দেখা যায় এবং বেদনাদায়ক ও পুঁজ ভরা হয়। সিস্ট ত্বকে দাগ সৃষ্টি হওয়ার অন্যতম কারণ হয়ে থাকে।
ব্রণ দূর করার উপায়
ব্রণ দূর করার উপায় খুব জটিল কিছু নয়। তবে এগুলো আপনাকে নিয়মিত মেনে চলতে হবে। সহজ কিছু নিয়ম মেনে চললে অচিরেই আপনি ব্রণ দূর করতে পারবেন।
1. নিয়মিত মুখ পরিস্কার করুন
তেল গ্রন্থিগুলো সারাদিন সক্রিয় থাকে এবং এগুলো ময়লা, মেকআপ এবং দূষণের কারণে জমাট বেঁধে যেতে পারে। যা ত্বকের ছিদ্রগুলোকে ব্লক করে দেওয়ার অন্যতম কারণ এবং ব্রণের কারণ হতে পারে। তাই নিয়মিত মুখ পরিস্কার করুন।
বাইরে থেকে ফেরার পরে, বা ব্যায়ামের পরে মুখ ধোয়ার বিষয়টি খুব জরুরী হয়ে যায়। বেশিরভাগ স্কিনের ডাক্তার বা বিউটিশিয়ান পরামর্শ দেন আপনি এমন পরিস্থিতে গোসল করে ফেলা সম্ভব না হলেও অন্তত একটি ক্লিনজিং তোয়ালে ব্যবহার করে আপনার মুখ পরিস্কার করে ফেলুন। এতে ব্রণের প্রবণতা অনেক কমে যাবে।
2. স্যালিসাইলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ ক্লিনজার ব্যবহার করুন
ব্রণ বা ব্ল্যাকহেডস থেকে মুক্তি পাওয়ার ক্ষেত্রে স্যালিসিলিক অ্যাসিডও খুব শক্তিশালী ভূমিকা পালন করতে পারে। এটি ত্বকের পৃষ্ঠ থেকে মৃত কোষ এবং অতিরিক্ত তেল অপসারণ করতে সাহায্য করে। তবে ব্লাকহেডস দূর করতে ভিটামিন “এ” ভূমিকা রাখতে পারে। তাই যদি স্যালিসিলিক অ্যাসিডের সাথে ভিটামিন “এ” ব্যবহার করা যায় তাহলে আরো ভাল ফল পাওয়া সম্ভব।
ভিটামি “এ” একটি পাইপ ক্লিনারের মতো কাজ করে, যে কারণে তেল আটকে থাকে না। সেই সঙ্গে স্যালিসাইলিক অ্যাসিড ত্বকের ক্ষতিকর উপাদনকে দূর করার মাধ্যমে ব্রণের প্রাদুর্ভাব মুক্ত রাখতে সহায়তা করে। এছাড়াও এই উপাদানটি ত্বকের অবাঞ্চিত দাগ দূর করতেও ভূমিকা রাখে।
3. মুখ থেকে আপনার হাতকে দূরে রাখুন
অনেক সময় আমরা মুখে থাকা ব্রণ বা পিম্পলকে দূর করার জন্য আঙ্গুল বা নখ ব্যবহার করে উঠিয়ে ফেলতে চাই বা চেষ্টা করি। আমাদের কাছে মনে হয় ওই নির্দিষ্ট ব্রণ থেকে মুক্তি পেতে এটিই তাৎক্ষণিক এবং সেরা উপায়। কিন্তু এটি একটি চরম ভুল।
বেশিরভাগ চর্মরোগ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে, আপনার হাত বা নখ ব্যবহার করে পিম্পলগুলোকে উঠিয়ে ফেলার চেষ্টা করলে ব্রণ সারতে অনেক বেশি সময় লাগে। তাছাড়া এর মাধ্যমে মুখে দাগ সৃষ্টি হয়ে যাওয়ার সম্বাবনা খুব বেশি রয়েছে। তাছাড়া এর মাধ্যমে ব্রণ ত্বকের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই কখনই হাত বা নখ দিয়ে ব্রণ উঠিয়ে ফেলার চেষ্টা করবেন না।
4. বরফ ব্যবহার
বিরক্তিকর ও বেদনাদায়ক পিম্পলকে নিয়ন্ত্রণ করার অন্যতম উপায় হল বরফ প্রয়োগ করা। এর মাধ্যমে ব্রণ ছড়িয়ে পড়তে পারে না এবং ধীরে ধীরে এর প্রাদুর্ভাব কমে যেতে শুরু করে। একটি কাপড়ে কিছু বরফ মুড়ে পিম্পল এর জায়গাতে ৩ থেকে ৪ মিনিটের জন্য ধরে রাখুন। বরফ দ্রুত গলে যেতে থাকলে একটি প্লাস্টিকের স্যান্ডউইচ ব্যাগে কয়েকটি কিউব ফেলে দিন। ত্বককে প্রশমিত করতে এবং ফোলাভাব কমাতে সারা দিনে কয়েকবার এই প্রক্রিয়ার পুনরাবৃত্তি করুন।
5. মেকআপ ব্যবহারে সতর্ক থাকুন
সৌন্দর্য পণ্যগুলি প্রাপ্তবয়স্কদের ব্রণের সবচেয়ে সাধারণ কারণগুলির মধ্যে একটি। বিশেষ করে আমাদের মুখের ত্বক অত্যন্ত সেনসিটিভ এবং খুব সামান্য কারণেই এখানে সমস্যা দেখা দিতে পারে। মেকআপ পন্যগুলোতে যদি একটিও এমন উপাদান থাকে যা আপনার ত্বকের জন্য ক্ষতিকর তাহলে সেটি থেকে বিভিন্ন ধরণের সমস্যা হতে পারে যার মধ্যে ব্রণ অন্যতম।
তাছাড়া অনেকে মুখে থাকা ব্রণকে আড়াল করতে বা সাময়িকভাবে ব্রণ দূর করার উপায় হিসাবে ভারি মেকআপ ব্যবহার করেন। দুর্ভাগ্যবশত এগুলো সাময়িকভাবে পিম্পলগুলোকে আড়াল করলেও স্থায়ীবাবে মুখে ব্রণের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই মেকআপ ব্যবহারে যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করুন। চেষ্টা করুন হালকা ধরণের মেকআপ ব্যবহার করতে এবং এমন উপাদান সমৃদ্ধ মেকআপ ব্যবহার করতে যা বরং ত্বকের জন্য উপকারি।
6. ব্রণ দূর করার ঘরোয়া প্রতিকার
এমন অনেক ঘরোয়া প্রতিকার রয়েছে যেগুলো ব্যবহার করে খুব সহজেই ব্রণকে দূর করতে পারবেন। এমন কিছু কার্যকর ব্রণ দূর করার উপায় নীচে বর্ণণা করছি।
- চা গাছের তেল: চা গাছের তেল তার ব্যাকটেরিয়ারোধী বৈশিষ্ট্যের জন্য বিখ্যাত। খুব সামান্য পরিমাণ নারকেল তেলের সাথে 2 ফোঁটা টি ট্রি অয়েল বা চা গাছের তেল যুক্ত করে একে পাতলা করে পিম্পলের উপর ঘষুন। এটি কয়েক ঘন্টার জন্য রেখে দিন এবং গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ব্রণ দূর করতে থেরাপি অত্যন্ত কার্যকর।
- অ্যালোভেরা: অ্যালোভেরা ত্বকের যত্নে বিশ্বের সবচেয়ে নামী উপাদানগুলির মধ্যে একটি। প্রদাহরোধী উপাদান থাকার কারণে এটি ত্বকে প্রশান্তি দেয় এবং ত্বকের ক্ষতিগ্রস্ত অংশকে সারিয়ে তুলতে সহায়তা করে। রাতে ঘুমানোর পূর্বে তাজা অ্যালোভেরা জেল ব্রণের উপর লাগিয়ে রাখলে এটি ব্রণ দূর করতে সাহায্য করতে পারে।
- মধু: পিম্পলযুক্ত ত্বকের জন্য মধু বিস্ময়কর কাজ করতে পারে। এর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্যগুলি প্রদাহ কমাতে পারে এবং নিরাময়কে তরান্বিত করতে পারে। আক্রান্ত স্থানে এক বা দুই ফোঁটা মধু সারারাতের জন্য লাগিয়ে রাখুন এবং পরের দিন সকালে পরিস্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
- অ্যাসপিরিন চূর্ণ: আপনি যদি এই ব্যাপারটি প্রথমবারের মতো জানেন তাহলে হয়ত কিছুটা অবাক হবেন। সাধারণত অ্যাসপিরিন ট্যাবলেট আমরা মাথা ব্যথা বা এমন সমস্যার জন্য ব্যবহার করি। তবে এটির চূর্ণ ব্রণ সারাতেও ভূমিকা রাখতে পারে। একটি অ্যাসপিরিন ট্যাবলেট গুড়া করে সূক্ষ্ম পাউডারে পরিণত করুন এবং কয়েক ফোঁটা জল দিয়ে পেস্টে পরিণত করে নিন। ব্রণের উপর হালকাভাবে ব্যবহার করুন, এটি প্রদাহ বিরোধী প্রকৃতির এবং ব্রণের সমস্যাকে কার্যকরভাবে প্রশমিত করবে।
- গ্রিন টি: ব্রণ দূর করার উপায় হিসাবে গ্রিন টি বেশ কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। এটি ত্বক ভালভাবে পরিস্কার করে এবং ত্বকের তৈলাক্তভাবকে দূর করে ত্বককে ব্রণ মুক্ত রাখতে সহায়তা করে। সবচেয়ে ভাল হয় যদি আপনি গ্রিন টি একটি ক্লিনজারের সাথে ব্যবহার করতে পারেন। এক্ষেত্রে ক্লিনজারের সাথে গ্রিন টি মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিটের জন্য অপেক্ষা করুন এবং এরপর পরিস্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত এটি ব্যবহারের মাধ্যমে ব্রণ দূর করতে পারবেন।
এগুলো ছাড়াও আরো অনেক ঘরোয়া প্রতিকার রয়েছে, তবে উপরে বর্ণিত এই পদ্ধতিগুলো বেশ কার্যকর হিসাবে প্রমানিত। আপনি এগুলোর মধ্যে থেকে যে কোন একটি বা একাধিক পদ্ধতিকে ব্রণ দূর করার উপায় হিসাবে ব্যবহার করতে পারেন।
ব্রণ দূর করতে টিপস্
ব্রণ প্রতিরোধ করতে বা ব্রণ দূর করার উপায় হিসাবে আপনি নীচের টিপস্গুলো মেনে চলতে পারেন। এগুলো আপনাকে ব্রণ মুক্ত থাকতে সহায়তা করবে।
- ত্বক স্ক্রাব করবেন না বা ব্রণ ফাটাবেন না, কারণ এটি সংক্রমণকে আরো দীর্ঘায়ীত এবং জটিল করে তুলতে পারে।
- মুখ স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন।
- কথা বলার সময় টেলিফোনটিকে মুখ থেকে দূরে রাখুন, কারণ এতে সিবাম এবং ত্বকের অবশিষ্টাংশ থাকতে পারে।
- নিয়মিত চশমা পরিষ্কার করুন যেহেতু সেখানে সিবাম এবং ত্বকের অবশিষ্টাংশ থাকতে পারে।
- যদি পিঠে, কাঁধে বা বুকে ব্রণ হয় তাহলে ঢিলেঢালা পোশাক পরার চেষ্টা করুন। আঁটসাঁট পোশাক, যেমন হেডব্যান্ড, ক্যাপ এবং স্কার্ফ এড়িয়ে চলুন বা ব্যবহার করলে নিয়মিত ধুয়ে ফেলুন।
- তেল-ভিত্তিক পণ্য এড়িয়ে চলুন, ঘুমানোর আগে মেকআপ তুলে ফেলুন।
- শেভ করার সময় ইলেকট্রিক শেভার বা ধারালো সেফটি রেজার ব্যবহার করুন। শেভিং ক্রিম লাগানোর আগে উষ্ণ সাবান পানি দিয়ে ত্বক এবং দাড়ি নরম করুন।
- অত্যধিক সূর্যের এক্সপোজার এড়িয়ে চলুন, কারণ এটি ত্বকে বেশি সিবাম তৈরি করতে পারে।
- উদ্বেগ এবং চাপ এড়িয়ে চলুন, কারণ এটি কর্টিসল এবং অ্যাড্রেনালিনের উৎপাদন বাড়াতে পারে।
সাধারণ প্রশ্নোত্তর
কি খেলে ব্রণ দূর হয়?
খাদ্যতালিকায় আঁশযুক্ত খাবার বেশি থাকলে তা ব্রণ কমাতে সহায়তা করে। তাছাড়া এই ধরণের খাবার আপনার রক্তে চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। খাবারগুলোর মধ্যে রয়েছে মটর, শিম, ডাল, গাজর, ওটমিল সহ বিভিন্ন সবজি ও ফল।
ছেলেদের মুখে ব্রণ হওয়ার কারণ কি?
হরমোনের তারতম্য, জীবাণুর আক্রমণ, দুশ্চিন্তা, ত্বকের অযত্ন, তৈলাক্ত ও অস্বাস্থকর খাবার, কম পরিমাণে ঘুমানো, অতিরিক্ত ঘাম হওয়া ইত্যাদির কারণে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ছেলেদের মুখে ব্রণ হতে পারে। তবে ছেলেদের বা মেয়েদের ব্রণ হওয়ার কারণের মধ্যে খুব বেশি তফাৎ নেই। আমরা উপরে ব্রন হওয়ার কারণগুলো উল্লেখ করেছি যা ছেলে বা মেয়ে উভয়ের জন্য সমানভাবে কার্যকর।
মুখে ব্রণ হলে কি মাখা উচিত?
এই সময় মুখে স্যালিসাইলিক অ্যাসিড এবং ভিটামিন এ রয়েছে এমন ধরনের পন্য ব্যবহার করা উচিত। তাছাড়া আমরা ঘরোয়া কিছু প্রতিকার বিষয়ে উপরে বর্ণণা করেছি। এগুলো মুখে ব্যবহার করতে পারেন, ব্রণ ভাল হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। তবে গোলাপ জল নিয়মিত ব্যবহার ব্রনের দাগ কমাতে সহায়তা করে। দারুচিনি গুড়ার সাথে এই উপাদানটি মিশিয়ে ব্রণের উপর লাগানোর ২০ মিনিট পরে ধুয়ে ফেলুন। এতে ব্রণের সংক্রমণ, দাগ এবং চুলকানি কমে যাবে।
তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণ দূর করার উপায় কি?
আপনার ত্বক যদি তৈলাক্ত হয়ে থাকে তাহলে সেখানে সহজেই ধুলা ময়লা আটকে যেতে পারে। এর ফলে লোমকূপগুলো ব্লক হয়ে যায়, ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ বৃদ্ধি পায় এবং ব্রণের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যায়। তাই তৈলাক্ত ত্বকের ব্রণ দূর করতে হলে প্রথমত আপনাকে ধূলা ময়লা থেকে দূরে থাকতে হবে। এছাড়া নিয়মিত ত্বক পরিস্কার রাখতে পারলে আপনি ব্রণ থেকে দূরে থাকতে পারবেন।
শেষ কথা
বয়ঃসন্ধিকাল সহ যে কোন বয়সের মানুষই ব্রণে আক্রান্ত হতে পারেন। এটি এমন একটি সমস্যা যা আমাদের প্রায় প্রত্যেকেই জীবনের কোন না কোন পর্যায়ে ভোগ করে থাকে। ব্রণ হলে আমরা খুব ব্যস্ত হয়ে ভাবতে থাকি যে ব্রণ দূর করার উপায় কি? কারণ এটি যতটা না কষ্টকর, তারচেয়ে বেশি মানসিক যন্ত্রণা দেয়।
আমরা এই লেখায় ব্রণ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করেছি। ব্রন দূর করার কার্যকর বিভিন্ন উপায় এবং এটি প্রতিরোধ করার জন্য প্রয়োজনীয় টিপস্ শেয়ার করেছি। আশা করি, লেখাটি আপনাকে সাহয়তা করবে। স্বাস্থ্য বিষয়ক যেকোনো টিপস ফলো করার আগে আমাদের ডিসক্লেইমার পেজটি দেখে নিন। আপনার কোন মতামত বা পরামর্শ থাকলে আমাদেরকে কমেন্ট সেকশনের মাধ্যমে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ।