বর্তমান যুগ তথ্য প্রযুক্তির যুগ। আর ভিডিও ছাড়া বর্তমান প্রযুক্তির কথা চিন্তাই করা যায়না। YouTube, Likee, TikTok ইত্যাদি মাধ্যমে প্রচুর ভিডিও নিয়মিত পাবলিশ হচ্ছে। আপনিও হয়তো নিজের ভিডিও পাবলিশ করে নাম, খ্যাতি কামাতে ও অনলাইনে ইনকাম করতে চান। আর সেজন্য প্রয়োজন ভিডিও এডিটিং। আজকে তাই মোবাইল ও কম্পিউটারের জন্য সেরা ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার এর রিভিউ নিয়ে আসলাম।
উইন্ডোজ ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার
বর্তমানে উইন্ডোজের যে কয়টি সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয়ে থাকে তারমধ্যে অন্যতম একটি সফটওয়্যার হচ্ছে filmora। এটি ব্যবহার করে প্রফেশনাল মানের ভিডিও এডিটিং করা যায়। এটি ফ্রি এবং পেইড দুই ভাবেই ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
তাছাড়া এটি যখন ডাউনলোড করবেন ওয়াটারমার্ক থাকবে। আপনারা চাইলে ওয়াটারমার্ক দূর করতে পারবেন। ওয়াটারমার্ক দূর করতে হলে নির্দিষ্ট পরিমাণের টাকা পে করতে হবে। মনে রাখবেন, এই টাকা পে কিন্তু শুধু ওয়াটারমার্ক দূর করার জন্য নয়। যখন কেউ পেইড সফটয়্যার ব্যবহার করে তখন সে প্রফেশনালি ভিডিও এডিটিং করতে পারবে। কারণ আপডেটেড টুুলস গুলো সে পাবে।
এই সফটওয়্যারটি এতো জনপ্রিয়তা পাওয়ার পিছনে অন্যতম কারণ হচ্ছে এটি ব্যবহার করলে একসাথে স্ক্রিন রেকর্ডিং, অডিও রেকর্ডিং, ভিডিও এডিটিং করতে পারবেন। তাছাড়া ভিডিও কাটা-ছেড়া, এফেক্টস, মিউজিক, ফটো,অডিও সহ অনেক কিছু যোগ করতে পারবেন।
অনেকেই চায় যে তারা একটি সফটওয়্যার ব্যবহার করেই অনেকগুলো কাজ করতে। কিন্তু তারা উপযুক্ত সফটওয়্যার পায় না। তাদের জন্য আমি এটা সাজেস্ট করবো।
এই সফটওয়্যার ব্যবহার করে ভিডিও এডিটং করে সরাসরি ব্লগ, ইউটিউব, Likee, TikTok, ফেসবুকে ভিডিও আপলোড করতে পারবেন।
অনেকেই মনে করে থাকেন যে, এটি তারা ব্যবহার করতে পারেন না বা আদৌ ব্যবহার করতে পারবেন কি না। তাদের জন্য সুখবর হলো এটি ব্যবহার একদম সহজ। যারা কম্পিউটার ব্যবহার করতে জানে তারা সহজেই এটি ব্যবহার করতে পারবে।
এটি ব্যবহার করতে তেমন কোনো বেগ পেতে হয় না কাউকে। এই সফটওয়্যার টি নানারকম ভার্সনের রয়েছে। সর্বশেষ এটির ১০ ভার্সন বের হয়েছে। এর পূর্বে আরও অনেক রকম ভার্সনের সফটওয়্যার রয়েছে। এটির কর্তৃপক্ষ দিনদিন তা আপডেট করে আপলোড করে দিচ্ছে।
যারা উইন্ডোজের জন্য ভিডিও এডিটিং করতে চাচ্ছেন তাদেরকে বলবো আপনারা চোখ বন্ধ করে নিঃসন্দেহে এটি ব্যবহারের জন্য ডাউনলোড করতে পারেন। কারণ এটি যেরকম সুবিধা দেয় তা অন্য কোনো সফটওয়্যার থেকে আপনি আশা করতে পারবেন না। আর এটির ব্যবহার এখন আগের থেকে সবার উপরের কাতারেই অবস্থান করছে।
Download filmora for all device
মোবাইলের ভিডিও এডিটিং অ্যাপ্লিকেশন
বর্তমানে নানারকম মোবাইল উপযোগী ভিডিও এডিটিং অ্যাপ্লিকেশন আছে। যা ব্যবহার করে খুব সহজেই যে কেউ অনেক ভালো মানের ভিডিও এডিট করতে পারে। এখন অনেক জনপ্রিয় কিছু অ্যাপ ব্যবহার ডেভেলপ হচ্ছে ভিডিও এডিটিং এর জন্য। তাই নিচে জনপ্রিয় কিছু অ্যাপের নামসহ এর রিভিউ দেওয়া হলো ঃ-
১. KineMaster Pro
আমার মতে এটির সাথে এখন অনেকেই পরিচিত হয়ে গেছেন। কারণ যারাই এখন মোবাইলের সাহায্যে এডিট করে তারা সবাই এটি ব্যবহার করে থাকে। যারা ইউটিউবিং করে তারা সহজেই এটি ব্যবহার করে ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করতে পারে।
এটি ব্যবহারে ওয়াটারমার্ক আসতে পারে, ওয়াটারমার্ক চাইলে সরানো যায়। ওয়াটারমার্ক ছাড়া অ্যাপ চাইলে ডাউনলোড করতে পারবেন। এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে অনেকটা advanced এবং professional ভাবে ভিডিও এডিটিং করা যায়।
২. Quik Video Editor
এই অ্যাপটি অনেক ভাবে জনপ্রিয়তার চূড়ায় পৌঁছেছে। এটি ব্যবহারে খুব দ্রুত ভাবে এডিটিং এর কাজ শেষ করা যায়। আপনার বানানো ভিডিও, ফটো ক্লিপ বেচে নিয়ে খুব কম সময়েই এডিট করতে পারেন। এই এডিটরটির নির্দিষ্ট মানের টুলস রয়েছে যা আপনার ভিডিওকে করে তুলবে আরও আকর্ষণীয়।
অ্যাপটি আপনারা ফ্রীতেই ব্যবহার করার সুযোগ পাচ্ছেন। বর্তমানে এটি ব্যবহারের মাত্রা দিনদিন ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
Download Quik Video Editor
৩. Power director
এই সফটওয়্যারটি ব্যবহার করেও আপনারা ভালো এবং প্রফেশনাল মানের ভিডিও এডিটিং করতে পারবেন। কিন্তু এর বিশেষত্ব হচ্ছে এটিতে কিছু এডভান্স লেভেলের টুলস রয়েছে যা আপনারা অন্য কোনো অ্যাপে পাবেন না।
এছাড়াও অ্যাপটিতে আপনারা আরও কিছু দরকারি মানের টুলস পাচ্ছেন। সেগুলো হলো ভিডিও কাটা এবং জোড়া দেওয়া, trimming, merging, subtitles দেয়া, video effect করা ইত্যাদি।
৪. Adobe Premiere clip
এটি দিয়েও খুব ফাস্ট ভিডিও এডিটিং করা যায়।অন্যান্য অ্যাপের মতো এই অ্যাপটি ব্যবহার করে ভিডিও কাটা-ছেড়া করা যায়। কিন্তু এর বিশেষত্ব হলো এটি ব্যবহার করে স্লো মোশনে ভিডিও এডিট করতে পারবেন যা অনেক অ্যাপে নেই
তাছাড়া অ্যাপটি ব্যবহার করতে পারবেন একদম ফ্রিতেই। কোনো টাকা পয়সা দিতে হবে না। এটিতে আলাদা আলাদা ভিডিও এফেক্টস, প্রফেশনাল মানের কিছু টুলস রয়েছে যা দিয়ে ভালো মানের ভিডিও বানানো সম্ভব।
৫. Filmora Go – free video editor
আগে আপনাদের জানিয়েছিলাম filmora এর উইন্ডোজ ভার্সন সম্পর্কে। এখন জানবেন মোবাইল ভার্সন সম্পর্কে। আগেই বলে নেই উইন্ডোজে এটি ব্যবহারে যেরকম সুবিধা পাওয়া যায় তা মোবাইলে পাবেন না। তবে মোবাইলের ক্ষেত্রে অন্যান্য অনেক অ্যাপের তুলনায় ভালো মানের সুবিধা পাবেন এডিটিং এর ক্ষেত্রে।
filmora অ্যাপটি ব্যবহার করে মিউজিক ,এফেক্টস , টাইটেলস যোগ করতে পারবেন। তাছাড়া এটি ব্যবহারও খুব সহজেই করা যায়।আলাদা কোনো বেগ পেতে হয় না।
উপরের যে কয়টা অ্যাপ ভিডিও এডিটিং নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে তা প্রত্যেকটিই তাদের কাজের জন্য সেরা। যেকোনো একটি ব্যবহার করেই আপনারা এডিটিং করতে পারবেন। চাইলে একটি একটি করে সবকয়টি ডাউনলোড করে দেখে নিতে পারেন যে কোনটি আপনার প্রয়োজনের সেক্টরে পরে। আর সেটিই ব্যবহার করুন।
আরো পড়ুনঃ-