VPN এর কাজ কি? কিভাবে ডাউনলোড করবেন? সুবিধা ও অসুবিধা

আপনি যদি ইন্টারনেট জগতের মানুষ হন তাহলে ভিপিএন (VPN) শব্দটির সাথে অবশ্যই আপনি কম বেশি পরিচিত। কিন্তু ভিপিএন এর কাজ কি? কিভাবে ভিপিএন ডাউনলোড করতে হয়? সেই বিষয়টি হয়তো জানেন না।

চিন্তার কোন কারণই নেই। কেননা আপনি এখন সঠিক জায়গায় আছেন। আজকের লেখাটি পূর্ণাঙ্গ পড়লে আপনি ভিপিএন (VPN) সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পাবেন। একইসাথে কিভাবে ডাউনলোড করবেন ও এর সুবিধা-অসুবিধা সম্পর্কে জানতে পারবেন। কথা না বাড়িয়ে চলুন শুরু করা যাক।

ভিপিএন কি?

ভিপিএন শব্দটির সাথে কম বেশি অনেকেই পরিচিত। কিন্তু ভিপিএন (VPN) মানে কি সেটা অনেকেই জানেনা। VPN= Virtual Private Network । অর্থাৎ ভিপিএন মানে হলো ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক।

ভিপিএন এর কাজ কি? কিভাবে ডাউনলোড করবেন? সুবিধা ও অসুবিধা

ভিপিএন কি নিরাপদ?

ভিপিএন নিরাপদ কিনা সেটা এক বাক্যে উত্তর দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ এই উত্তর হ্যাঁ বা না দুইটাই হতে পারে। ট্রাস্টেড ও পেইড ভিপিএন বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নিরাপদ। তবে ফ্রি ও অবিশ্বস্ত ভিপিএন নিরাপদ নয়।

ভিপিএন এর কাজ কি?

ভিপিএন কি কি কাজে লাগে কিংবা এর সুবিধা কি সেই বিষয়ে জেনে নেওয়া জরুরি। চলুন আমরা ভিপিএন এর কাজ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।

ISP থেকে ডাটা গোপন রাখেঃ

অনেকেই এই বিষয়টির সাথেও পরিচিত। কিন্তু এর আসল অর্থ কি সেটা বেশিরভাগ লোকই জানেনা, এমনকি অনেক টেকনোলজি পার্সনও এটা জানেন না। VPN মূলত পাবলিক নেটওয়ার্কে আপনাকে প্রটেকটেড রাখে। আপনার ব্যক্তিগত তথ্যকে এনক্রিপ্ট করে রাখে।

আপনার ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার (ISP) আপনার সম্পর্কে সকল ডাটা কালেক্ট করে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই ডাটা তারা নিরাপদেই রাখে। তবে হ্যাকাররা আপনার ISP কে হ্যাক করলে আপনার সকল ডাটাও হ্যাক হয়ে যাবে।

এছাড়াও প্রত্যেকটি ISP নিজ নিজ দেশের সরকারের কাছে দায়বদ্ধ। সরকার চাইলেই আপনার ডাটা তারা সরকারকে দিতে বাধ্য থাকবে। এছাড়াও কিছু ISP ইউজারের ডাটা বিজ্ঞাপনদাতা প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করতে পারে। VPN আপনার ব্রাউজিং হিস্টোরি আপনার ISP থেকেও গোপন রাখে।

তাই VPN ব্যবহার করলে আপনি আপনার ডাটা গোপন রাখতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই ট্রাস্টেড VPN ব্যবহার করতে হবে।

কান্ট্রি রেস্ট্রিকটেড কন্টেন্ট এক্সেসঃ

VPN আপনার লোকেশন গোপন রাখতেও সহযোগিতা করে। অনেক সময় কিছু কিছু কন্টেন্ট নির্দিষ্ট দেশের মানুষ ছাড়া অন্য কেউ এক্সেস করতে পারেনা। এক্ষেত্রে আপনি VPN এর সহযোগিতা নিয়ে ঐ কন্টেন্ট এক্সেস করতে পারবেন।

ভিপিএন কিভাবে কাজ করে ও ভিপিএন ব্যবহারের নিয়ম
ছবিঃ Shahin taj fokir

আইপি ব্লক কন্টেন্ট এক্সেসঃ

বেশিরভাগ লোকই শেয়ার আইপি ব্যবহার করে ইন্টারনেট এক্সেস করে। তাই কিছু কিছু ওয়েবসাইটে অনেকসময় আইপি ব্লক হয়ে যায়। তাই আমরা আর সেই ওয়েবসাইট এক্সেস করতে পারিনা। VPN ব্যবহার করে আপনার আইপি পরিবর্তন করে সেই কন্টেন্ট বা ওয়েবসাইট খুব সহজেই এক্সেস করতে পারবেন।

এছাড়াও আরো অনেক কাজে VPN ব্যবহৃত হয়ে থাকে। একেক ব্যক্তি একেক প্রয়োজনে ভিপিএন ব্যবহার করে থাকে।

ভিপিএন এর ক্ষতিকর দিক

VPN এর কাজ সম্পর্কে তো জানা হলো। এগুলো VPN এর সুবিধা বা উপকারি দিক। কিন্তু কিছু ক্ষতিকর দিকও রয়েছে। চলুন সেই বিষয়ে জেনে নেওয়া যাক।

স্লো ইন্টারনেট স্পীডঃ

VPN ব্যবহারের ফলে ইন্টারনেটের ল্যাটেন্সি বেড়ে যায়। কারণ আপনার ব্রাউজারের রিকুয়েস্ট ভিপিএন সার্ভার হয়ে মূল ওয়েবসাইটের সার্ভারে পৌঁছায়। একইভাবে আবার মূল সার্ভার থেকে ভিপিএন সার্ভার হয়ে ব্রাউজারে ডাটা শো হয়। তাই ইন্টারনেট স্পীড কিছুটা স্লো মনে হয়।

কালেকশন ড্রপঃ

ফ্রি ভিপিএনগুলোর স্ট্যাবিলিটি খুবই দুর্বল হয়ে থাকে। তাই মাঝেমধ্যেই কানেকশন ড্রপ হয়ে যায়। এটি খুবই বিরক্তিকর। এই সমস্যার জন্য Paid VPN ব্যবহার করতে পারেন।

ডাটার অবৈধ ব্যবহারঃ

ট্রাস্টেড VPN না হলে আপনার ডাটার অবৈধ ব্যবহার হতে পারে। এক্ষেত্রে আপনি ঝামেলায় পড়তে পারেন। তাছাড়া অনেক ফ্রি VPN কোম্পানি ইউজারের ডাটা বিজ্ঞাপনদাতা প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করে থাকে। তাই VPN নির্বাচনের সময় অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে।

vpn ব্যবহারের সময় ট্রাস্টেড সোর্স যেমন প্লে স্টোর, অ্যাপ স্টোর থেকে ডাউনলোড করবেন। আর ডাউনলোড বা ইন্সটল করার সময় রিভিউইয়ের সংখ্যা ও রেটিং দেখে নিবেন। একইসাথে ডাউনলোড সংখ্যাটাও খেয়াল রাখবেন।

কোন ভিপিএন ভালো?

কোন ভিপিএন ভালো সেই সম্পর্কে আসলে সঠিকভাবে বলা সম্ভব নয়। তবে আমরা প্লে স্টোরের ডাউনলোড ও রিভিউয়ের ভিত্তি করে Free VPN এর একটি তালিকা তৈরি করেছি। একইসাথে সেখানে ভিপিএন ব্যবহারের নিয়মকানুনও তুলে ধরা হয়েছে। নিচে সেই পোস্টের লিংক দেওয়া হলো।

পোস্টঃ সেরা ৭ টি ফ্রি ভিপিএন ও ভিপিএন ব্যবহারের নিয়ম

তবে ফ্রি ভিপিএন এ কানেকশন স্ট্যাবিলিটি তুলনামূলক দুর্বল হয়। এছাড়াও এই ধরণের ভিপিএনে আয় করার জন্য বিজ্ঞাপন দেখানো হয়। অনেকেই এটি পছন্দ করেনা। এছাড়াও কানেকশন ছেড়ে দিলে খুবই বিরক্ত লাগে। তাছাড়া ইউজারের ডাটা বিক্রির ঘটনাও ঘটে থাকে।

এই ধরণের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে Paid VPN ব্যবহার করতে পারেন। পেইড ভিপিএনে সার্ভার সংখ্যা বেশি থাকে ও এনক্রিপশন খুবই হাই কোয়ালিটির হয়ে থাকে। তাই এক্ষেত্রে আপনার কানেকশন যেমন স্ট্যাবল হবে ঠিক তেমনই ডাটার নিরাপত্তাও নিশ্চিত হবে।

পেইড ভিপিএন কোনটা ভালো?

অনেক অনেক পেইড ভিপিএন মার্কেটে এভেইলেবল। তার মধ্যে অ্যান্ড্রয়েড ইউজারদের জন্য VeePN VPN- Secure VPN Proxy নামক ভিপিএনটি খুবই জনপ্রিয়। এখান থেকে Android vpn apk download করে নিতে পারেন।

VeePN VPN- Secure VPN Proxy এর ফিচারসমূহঃ

  • 1) 2500+ servers all over the world
  • 2) User-friendly apps and clients
  • 3) Automatic configuration
  • 4) Top-notch encryption protocols
  • 5) Strict No Logs policy
  • 6) Cross-platform software
  • 7) No activity logs. No connection logs
  • 8) Bank-Level 256-Bit Encryption
  • 9) Unlimited Traffic and Bandwidth
  • 10) 10 Simultaneous Connections

এছাড়াও ১ দিনের ফ্রি ট্রায়ালের ব্যবস্থা রয়েছে। চাইলে ট্রায়াল নিয়ে দেখতে পারেন।

শেষ কথা

ভিপিএন এর কাজ কি? ডাউনলোড করার নিয়ম, সুবিধা ও অসুবিধা ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করলাম। একটি ভালো ভিপিএন আপনার ডাটাকে গোপন রাখবে ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। তাই ভালো ও ট্রাস্টেড VPN ব্যবহার করুন। সম্ভব হলে পেইড ভিপিএন ব্যবহার করুন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top