আমাদের প্রতিদিনের সবচেয়ে ব্যবহৃত জিনিস হচ্ছে মোবাইল ফোন। প্রযুক্তি প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হয়, নতুনত্বের সৃষ্টি করে। গত দুই দশকে প্রযুক্তির জগতে যে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন এনেছে স্মার্ট মোবাইল ফোন।
এই স্মার্টফোন আমাদের যোগাযোগের মাধ্যমকে করেছে অনেক সহজলভ্য। স্মার্টফোন বলতে মূলত টাচস্ক্রিন কে বুঝায়। এই টাচস্ক্রিনে স্পর্শের মাধ্যমে হ্যান্ডসেটগুলো ব্যবহার করা হয় বলে স্মার্টফোনের ডিসপ্লের প্রতি বিশেষ নজর দেওয়া উচিৎ।
মোবাইল ফোনের ডিসপ্লে সুবিধামতো না হলে পরতে হয় নানান সমস্যায়। মোবাইল ফোন কেনার আগে কোন ধরনের ডিসপ্লে কিনবেন তা আগে থেকে ধারণা থাকা ভালো। বিভিন্ন প্রযুক্তি সম্পন্ন কিছু ডিসপ্লে সম্পর্কে তথ্য জেনে নেওয়া যাক।
তাছাড়া নিম্নক্ত প্রযুক্তির মোবাইলগুলো আপনি MobileDokan.club এই ওয়েবসাইটে পেতে পারেন।
১। থিন ফিল্ম ট্রানজিস্টর লিকুইড ক্রিস্টাল ডিসপ্লে (LCD Display)
বর্তমান সময়ে যে ডিসপ্লেগুলো ব্যবহার করা হয় সেগুলোর মধ্যে টিএফটি এলসিডি ডিসপ্লে অন্যতম। এটি সাধারণত অল্প বাজেটের স্মার্টফোনে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
এ ডিসপ্লেতে থিন ফিল্ম ট্রানজিস্টর ব্যবহার করে ছবিকে নিখুত ভাবে প্রদর্শন করা হয়। এতে মান সম্পন্ন ছবি ও উচ্চ রেজ্যুলেশনের ভিডিও দেখা যায়।
দিনের আলোতেও ভালভাবে ছবি বা ভিডিও দেখা যায় এই ডিসপ্লের মাধ্যমে। সাধারণত ২৫৬ হাজার কালার পর্যন্ত সমর্থন করে থাকে এই ডিসপ্লেতে।
২। অ্যামোলেড ডিসপ্লে (AMOLED Display)
অ্যামোলেড ডিসপ্লে এর পূর্ণরূপ হলো একটিভ-ম্যাট্রিক্স অরগানিক লাইট-ইমিটিং ডায়োট। এলইডি ডিসপ্লের মতোই কাজ করে থাকে অ্যামোলেড ডিসপ্লে।
অ্যামোলেড ডিসপ্লে প্রযুক্তিসম্পন্ন মোবাইল ফোনের ব্যাটারি আয়ু দীর্ঘ হয়। এটি সর্বোচ্চ ১৬ মিলিয়ন কালার প্রদর্শন করতে পারে, ফলে ছবি ও ভিডিও মান সম্পন্ন পাওয়া যায়।
অ্যামোলেড ডিসপ্লে এলসিডির চেয়ে আলাদা সাব-পিক্সেল ব্যবহার করে ছবি প্রদর্শন করে থাকে। এর স্ক্রিনও অনেক সংবেদনশীল হওয়ায় স্পর্শ করার সাথে সাথে সাড়া দেয়। এ ধরনের ডিসপ্লে নির্মাণের খরচ বেশি হওয়ায় মোটামোটি মধ্যম বাজেটের মোবাইলে এ ধরনের ডিসপ্লে ব্যবহার হয়ে থাকে।
৩। সুপার অ্যামোলেড ডিসপ্লে ( Super AMOLED Display)
অ্যামোলেড ডিসপ্লের আরও আধুনিক প্রযুক্তি হলো সুপার অ্যামোলেড ডিসপ্লে, যা স্যামসাং মোবাইল ফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের তৈরি করে থাকে।
এই ডিসপ্লে সব ধরনের সুবিধা দিয়ে থাকে। যেমন, বেশি উজ্জ্বল, শক্তি সঞ্চয়ী ও অল্প স্পর্শে দ্রুত সাড়া দেয়। ডিসপ্লের দিক থেকে এই ডিসপ্লে সবচেয়ে হালকা। উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করায় ব্যয়বহূল স্মার্টফোনে এ ধরনের ডিসপ্লে ব্যবহৃত হয়।
৪। রেটিনা ডিসপ্লে (Retina Display)
রেটিনা ডিসপ্লে বর্তমান সময়ে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন ডিসপ্লে , যা আইপিএস এলসিডি ও ব্যাকলাইট এলইডির সমন্বয়ে তৈরি করা হয়ে থাকে।
এ ডিসপ্লের রেজ্যুলেশন অত্যন্ত উন্নতমানের (৬৪০×৯৬০) পিক্সেল যা মানুষের চোখে কখনই একক পিক্সেলে আলাদাভাবে দেখা সম্ভব নয়। এ ডিসপ্লের রেজ্যুলেশন বেশি হওয়ার কারণে খুব সহজেই অত্যধিক তীক্ষ্ণ লেখা পড়া যায় সুন্দরভাবে। ছবি ও ভিডিও দেখা যাবে স্পষ্ট।
একাধিক উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করায় এই ডিসপ্লে নির্মানে খরচ বেশি হওয়ায় অধিক ব্যয়বহুল স্মার্ট ফোনে যেমন আইফোন-৫, আইফোন-৬, আইফোন-৬এসে রেটিনা ডিসপ্লে ব্যবহার করা হয়।
৫। হেপটিক টাচ স্ক্রিন (Heptic Touch Screen)
হেপটিক প্রযুক্তির টাচ স্ক্রিন ডিসপ্লে স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ব্ল্যাকবেরি ও নকিয়া এ প্রযুক্তির স্ক্রীন তাদের স্মার্টফোন গুলোতে ব্যবহার করছে।
এ প্রযুক্তির ডিসপ্লের মোবাইল ফোনে অল্প স্পর্শ করলে তা নিখুঁতভাবে শনাক্ত করতে পারে এবং সে অনুযায়ী কাজ করে। ফলে মোবাইল ফোনের টাইপিং সুবিধা, নির্ভুলতা, অপেক্ষাকৃত সহজ ও আরামদায়ক।
এ প্রযুক্তির ডিসপ্লে নির্মাণেও খরচ তুলনামুলক বেশি। তাই বেশি দামের স্মার্টফোনে এ ডিসপ্লে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
এছাড়াও আরও অনেক প্রযুক্তি সম্পন্ন ডিসপ্লে রয়েছে। যেমন, রেজিসটিভ টাচস্ক্রিন ডিসপ্লে, ক্যাপাসিটিভ টাচস্ক্রিন ডিসপ্লে, ওএলইডি ডিসপ্লে, গরিলা গ্লাস ডিসপ্লে ইত্যাদি। মোবাইল ফোন কেনার ক্ষেত্রে অবশ্যই ডিসপ্লেটি কেমন হবে তা বিবেচনা করা প্রয়োজন।