স্মার্টবোর্ড হলো ডিজিটাল টিচিংয়ের বা শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে সর্বাধুনিক প্রযুক্তিগত একটি আবিষ্কার। এটা দেখতে বড় টিভি মনিটরের মত, আর মনিটরের ডিসপ্লেটি সম্পূর্ণ টাচিং সিস্টেম। আপনি ডিসপ্লেতে টাচ করে অনেক ধরনের কাজ করতে পারবেন। আপনি চাইলে আঙুল দিয়েও টাচ করতে পারবেন, আর চাইলে এটার সাথে আলাদাভাবে কলম দেয়া হয় সেটও ব্যবহার করতে পারবেন।
এটার সাথে রয়েছে বিল্ট-ইন স্পিকার, মাইক্রোফোন ও স্ট্যান্ড। মোটামুটি স্মার্টবোর্ডের পরিচয় পর্বতো হলো, এখন একটি স্মার্টবোর্ড ঠিক কি কি কাজে কাজে ব্যবহার করা যায় সেই বিষয়ে জেনে নেই।
অনলাইন ও অফলাইন ক্লাস নেয়া
বেশিরভাগ ক্লাসরুমে সাদা-কালো বোর্ড, চক-ডাস্টার, মার্কার ব্যবহার করা হয়, এবং উচ্চশব্দে শিক্ষককে লেকচার দিতে হয়। এতে করে ক্লাসরুমের কেউ কেউ কথা শুনতে পায় না। যাইহোক, এই সাদাকালো বোর্ডের পরিবর্তে ডিজিটাল ইন্টার্যাক্টিভ স্মার্টবোর্ড ব্যবহার করা হলে তাহলে এটা লেখার কাজে ব্যবহার করা যাবে। আর এই বোর্ডের সাথে বিল্ট-ইন স্পিকার ও মাইক্রোফোন আছে বিধায় টিচারের লেকচার অনেক দূর পর্যন্ত যাবে।
ছবি, ভিডিও প্রদর্শন
স্মার্ট বোর্ডের স্ক্রিনে শুধু লেখাই নয়, কম্পিউটারের/ ল্যাপটপের সাথে কানেক্ট করে সাথে যে কোন ছবি, ভিডিও, প্রামাণ্যচিত্র, তথ্য-উপাত্ত প্রদর্শন করা যায়। এতে করে শিক্ষাদানের প্রক্রিয়া আরো সহজ ও ফলপ্রসূ হয়।
তাছাড়া আপনি হয়তো দেখে থাকবেন বিভিন্ন অনলাইনভিত্তিক টিচিং বা ক্লাসে আজকাল স্মার্টবোর্ড ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। কারণ এই বোর্ড দিয়ে লেখালেখি, প্রেজেনটেশন, প্রজেক্টর হিসেবে ব্যবহার করা যায় বিধায়, টিচারদের কাছে এর গ্রহণযোগ্যতা দিনকে দিন বেড়েই যাচ্ছে।
প্রজেক্টর হিসেবে ব্যবহার
হ্যাঁ, আপনি একটি স্মার্টবোর্ডকে প্রজেক্টর হিসেবেও ব্যবহার করতে পারেন কম্পিউটার/ল্যাপটপের সাথে কানেক্ট করে। উপরন্তু, স্মার্টবোর্ড একটি প্রজেক্টরের থেকেও বেশি রেজুলেশন সমৃদ্ধ ছবি, ভিডিও প্রেজেন্ট করতে পারে। তাছাড়া প্রজেক্টরের মতো আলাদাভাবে প্রজেক্টর ডিভাইস, স্ক্রিন, সরঞ্জাম কিনে ইন্সটলেশনের মতো ঝামেলার কাজও নেই।
ডিজিটাল টুলস এক্সেস
স্মার্ট বোর্ড সাধারণত উইন্ডোজ ও অ্যান্ড্রয়েড এই দুই অপারেটিং সিস্টেমেই চালান যায়। তাই আপনি এই অপারেটিং সিস্টেম এর যে কোন ধরনের এপ্স ও সফটওয়্যার প্রয়োজন অনুসারে ব্যবহার করতে পারবেন।
3D প্রেজেন্টেশন ও অ্যানিমেশন
যে কোনো বিষয় নিখুঁতভাবে বোঝার জন্য 3D ভিডিও খুবই কার্যকরী। স্মার্টবোর্ড 3D ভিডিও ও অ্যানিমেশন ভিডিও প্রদর্শনে খুবই কার্যকরী। বিশেষ করে হাসপাতাল, ল্যাব, জিমনেসিয়াম, ট্রেইনিং ইত্যাদি স্থানে এই বোর্ড ব্যবহার করা হয়।
রিমোট এক্সেস
অনলাইন ক্লাস ও ট্রেইনিং এর ক্ষেত্রে পৃথিবীর যে কোন প্রান্ত থেকে যে কেউ মোবাইল ও কম্পিউটারের মাধ্যমে ক্লাসে জয়েন হতে পারবে। এতে করে শিক্ষার্থীর কোন ক্লাস মিস যাবে না, এবং নিজের মোবাইল/কম্পিউটার ডিভাইসে লাইভ বোর্ডে দেখানো ক্লাস করতে পারবে।
এক নজরে দেখে নেই কোথায় কোথায় স্মার্ট বোর্ড ব্যবহার করা যেতে পারে
শ্রেণীকক্ষঃ শিক্ষা পদ্ধতি আধুনিকীকরণ ও উন্নত করার ক্ষেত্রে ইন্টারেক্টিভ স্মার্টবোর্ড শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে করে শিক্ষার্থীরা প্রযুক্তির সাথে আরো পরিচিত হয় ও খুব সহজেই শিখতে পারে।
কর্পোরেট অফিসঃ বিভিন্ন কর্পোরেট অফিসে উপস্থাপনা, ব্রেনস্টর্মিং সেশন, এবং সহযোগী মিটিংয়ের জন্য, যে কোন ডেটা প্রদর্শনের জন্য স্মার্ট বোর্ড ব্যবহার করা হয়৷
প্রশিক্ষণ কেন্দ্রঃ যে কোন বিষয়ের উপর প্রশিক্ষণে স্মার্টবোর্ড দুর্দান্তভাবে প্রশিক্ষককে সহায়তা করে এবং, প্রশিক্ষণার্থীরা সহজেই বিষয়বস্তু রপ্ত করতে পারে।
কনফারেন্স/ সম্মেলন এবং কর্মশালাঃ অফিস, সেমিনার, সভাতে তথ্য উপস্থাপন করতে স্মার্ট বোর্ড অনেক কার্যকরী।
কমিউনিটি সেন্টারঃ কমিউনিটি সেন্টারে যেখানে অনেক মানুষের একসাথে সমাগম হয় সেখানে একটা স্মার্টবোর্ড খুবই দরকারি জিনিস। যার ফলে অনুষ্ঠানের অনেক ছবি ভিডিও প্রদর্শন করা যায়।
জাদুঘরঃ জাদুঘর এবং গ্যালারি ইন্টারেক্টিভ প্রদর্শনী এবং শিক্ষামূলক উপস্থাপনাগুলির মাধ্যমে দর্শকদের অভিজ্ঞতা বৃদ্ধি করে।
হাসপাতাল ও ল্যাবঃ স্বাস্থ্যসেবামূলক প্রতিষ্ঠান যেখানে প্রশিক্ষণের প্রয়োজন পড়ে বিশেষ করে হাসপাতাল ল্যাবে স্মার্ট বোর্ড ব্যবহার করা যেতে পারে। আপনি যদি এই আর্টিকেল পড়ে একটি স্মার্টবোর্ড সম্পর্কে আরো জানতে চান, বা সরাসরি দেখতে চান তাহলে অনলাইনে অনেক আমদানিকারক ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান খুঁজে পাবেন। আপনি তাদের সাথে কথা বলে এর কার্যকারিতা আরো জানতে পারেন।