কবিতা কেমিক্যাল নগরী -সব্যসাচী নজরুল

“কেমিক্যাল নগরী”
সব্যসাচী নজরুল

মুক্ত আলো-বাতাস, হীম-শীতল হাওয়া, শিশিরের স্পর্শ হীন এ শহর আমার নয়…!
না না না, এ শহর আমার হতেই পারে না!

আমার শহর, হ্যাঁ হ্যাঁ আমি একটি পরিছন্ন আবাসভূমি, আলোকিত শহর চেয়েছিলাম।
যেখানে আমার প্রতিটি শ্বাস-প্রশ্বাস হবে নিরাপদ। প্রজন্মের পর প্রজন্ম, আগামী প্রজন্ম বেড়ে ওঠবে আলো-হাওয়ায়, ফুলেল শোভায়। যেখানে জীবনের জয়গান উৎসারিত হবে প্রতিটি পদযাত্রায়, কোলাহলে, মিছিলে, মিছিলে….

অগনিত শবদেহবাহী, শবযাত্রা বাহী নিরব নিস্তব্ধ নিথর কাঁধ গুলো, অঢেল অশ্রু বাহী মনুষ্যরা বুক চাপড়ে হাহাকার করবে না, নেত্র নদীর অশ্রুধারা বুড়িগঙ্গার পথ ধরবে না?
কোথায় আমার আলোকিত শহর?
কেমিক্যালের লেলিহান শিখায় দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকা হঠাৎ আলোক বিচ্ছুরিত এ শহর আমি চাই না!
অগ্নি কুন্ডে ভস্মীভূত অগনিত লাশের এ শহর আমার না?

কেমিক্যালের আশটে বিদঘুটে ঝাঝালো দূর্গন্ধ মাখা এ শহর বুঝি তোমার?
আচ্ছা এ সীসা দুষণে, গাছপালার ছায়া হীন এ বদ্ধ পরিবেশে তুমি, তোমরা দম নাও কি করে…?

যেখানে দমের দাম নেই, যেখানে জীবনের দাম নেই, পদযাত্রার নিরাপত্তা নেই, হরদম বিদগ্ধ অনলে হৃদয় পোড়া জীবনের নিরাপত্তা নেই! যেখানে হরহামেশাই কেমিক্যালের অগ্নি কুন্ডে, ভীষণ ভয়ানক, ভয়াবহ আগুনের লেলিহান শিখায় পুড়ে ধ্বংস লীলায় নিশ্চিহ্ন, ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে জীবন, স্বপ্ন আশা, চাওয়া-পাওয়া সব, সব, সবকিছু।

কেবলই পরে থাকা মৃত্যু নগরী, এ যেন জনমানবশূন্য প্রাণহীন কেমিক্যাল নগরী?
আচ্ছা, কেউ কি বলতে পারো?
কেন কেন কেন এমন হয়?
কেন এতো জীবন, এতো প্রাণ বড় বেশি অসময়ে জলন্ত উতপ্ত অগ্নি কুন্ডে ভস্মীভূত হয়ে ছাই হয়ে বাতাসে ভেসে উড়ে যায়?

বাঁচাও, বাঁচাও, বাঁচাও…. বলতে থাকা, বাকরুদ্ধ আওয়াজ গুলো, কেমিক্যাল নগরীর আকাশে বাতাসে মিশে যাওয়া তৃঞ্চাত্ব আত্মারা সব সীসার আড়ালে মিশে অজস্র অশ্রু ঝরিয়ে কি যেন বলতে চায়!
এ শহর মনুষ্য কুলের নয়, এ শহর কেমিক্যালের!
এ নগরী আমার নয়, এ এক মৃত্যু নগরী!
এ এক কেমিক্যাল নগরী?

রচনাকাল: ২১/২/১৯
ভোর: ৫: ১৫ মি:

আরো কবিতা পড়তে আপনি ক্লিক করুন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top