ফেসবুক কি? ফেসবুকের ইতিহাস ও নানা অজানা তথ্য নিয়ে আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট। আশা করি এই পোস্ট থেকে ফেইসবুক সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারবেন।
ফেসবুক কি?
ফেসবুক হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। এটি বাংলাদেশেও সর্বাধিক জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া।
ফেসবুকের ইতিহাস থেকে জানা যায়, এটি একটি আমেরিকান প্রতিষ্ঠান। ফেসবুকে যে কেউ ফ্রিতে একাউন্ট বা আইডি খুলতে পারে।
ফেসবুক আইডির মাধ্যমে নিজের বন্ধু,পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনদের সাথে যোগাযোগ করা যায়। চ্যাট, স্ট্যাটাস, ভয়েস কল, ভিডিও শেয়ারিং ইত্যাদি ফেসবুকের জনপ্রিয় ফিচার।
ফেইসবুকের মাধ্যমে ব্যবহারকারীগণ বন্ধু সংযোজন, বার্তা প্রেরণ এবং তাদের ব্যক্তিগত তথ্যাবলী হালনাগাদ ও আদান প্রদান করতে পারেন। এর পাশাপাশি ব্যবহারকারীরা তাদের শহর, কর্মস্থল, বিদ্যালয় এবং অঞ্চল-ভিক্তিক নেটওয়ার্কেও যুক্ত হতে পারেন।
ফেসবুকের ইতিহাস
ফেসবুকের ইতিহাস অনেক চমৎকার ও কৌতূহল বৃদ্ধি করার মতো। ফেইসবুক একটি আমেরিকান প্রতিষ্ঠান। কিন্তু এটি শুরুতে প্রতিষ্ঠান হিসেবে চালু করা হয়নি।
ফেসবুক কত সালে আবিষ্কার হয় ?
ফেসবুক ২০০৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারী আমেরিকার মার্ক জাকারবারগ আবিষ্কার করেন।
মার্ক জাকারবার্গ ২০০৪ সালের ৪ই ফেব্রুয়ারি ফেসবুক প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি যদিও ফেসবুক প্রতিষ্ঠা করেছেন কিন্তু এর বর্তমান মালিক ফেসবুক ইনক (facebook inc)।
মার্ক জাকারবার্গ হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালীন তার রুমমেট কম্পিউটার বিজ্ঞান বিষয়ের ছাত্র এডওয়ার্ডো সেভারিন, ডাস্টিন মস্কোভিত্স এবং ক্রিস হিউজেসের যৌথ প্রচেষ্টায় ফেসবুক নির্মাণ করেন।
জাকারবার্গ হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ২য় বর্ষে থাকাকালীন সময়ে, ২৮/০৮/২০০৩ তারিখে ফেসম্যাস নামক একটি সাইট তৈরি করেন। এটি ফেসবুকের পূর্বসূরি সাইট।
২০০৪ সালে তিনি ফেসম্যাস থেকে অনুপ্রেরণা পান। আর ফেসবুক প্রতিষ্ঠা করার কথা ভাবেন। সেই বছরেরই ৪ ই ফেব্রুয়ারি তিনি তার বন্ধুদের সাথে নিয়ে সেই ঐতিহাসিক কাজটি করে পেলেন।
তিনি দিফেসবুক.কম এর কোড লেখা শুরু করেন ২০০৪ এর জানুয়ারি মাসে। শিঘ্রই মার্ক জাকারবার্গ এর সাথে যোগ দেন ডাস্টিন মস্কোভিৎজ (প্রোগ্রামার), ক্রিস হুগেস ও এডোয়ার্ডো স্যাভেরিন (ব্যবসায়িক মুখপাত্রও) এবং অ্যান্ডরু ম্যাককলাম (গ্রাফিক্ আর্টিস্ট)।
প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে ফেসবুকের ওয়েব লিংক ছিল https://thefacebook.com। এটি আস্তে আস্তে ব্যপক জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করে। ২০০৪ এর ডিসেম্বরেই ফেসবুকের ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১০ লাখে পৌঁছায়।
২০০৫ সালে ফেসবুকের নাম পরিবর্তন করা হয়। তখনই বর্তমান নাম “ফেসবুক (Facebook)” প্রদান করা হয়। ২০০৫ সালের ডিসেম্বর মাসেই ফেসবুকের ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৫৫ লক্ষ ছাড়ায়।
২০০৫ সাল পর্যন্ত এর ব্যবহারকারীরা ছিলেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা। কিন্তু ২০০৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এটি সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। তখন ৩ মাস পরেই ব্যবহারকারী ১ কোটি ২০ লক্ষ ছাড়িয়ে যায়।
২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে কানাডা ও ব্রিটেনের পর ফ্রান্স ও স্পেনে ফেসবুকের ব্যবহার শুরু হয়। এই বছরের এপ্রিল মাসে ফেসবুকের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফিচার “চ্যাট” চালু হয়।
আরো পড়ুনঃ ফেসবুক একাউন্ট খোলার নিয়ম
২০০৯ সালের শুরুর দিকে ফেসবুকের ব্যবহারকারী ছিল ১৫ কোটির বেশি। আর ডিসেম্বরে তা ৩৫ কোটিতে পৌঁছায়।
২০১০ সালে ৫৫ কোটি আর ২০১৭ সালে ব্যবহারকারী প্রায় ১৫০ কোটি হয়। ২০১৭ সালে ফেসবুক গুগলকে টপকে বিশ্বের সর্বাধিক জনপ্রিয় ওয়েবসাইটের তালিকায় শীর্ষে উঠে আসে।
ফেসবুকের জনক বা নির্মাতা কে?
ফেসবুকের জনক বা নির্মাতা হচ্ছেন মার্ক জাকারবার্গ। তবে তিনি এর একক প্রতিষ্ঠাতা নয়। তার সঙ্গে তার কিছু বন্ধু ও রুমমেটও ফেসবুক নির্মাণের পিছনে কাজ করেছে।
তবে বন্ধুর নাম ইতিমধ্যেই উপরে বলা হয়েছে।
ফেইসবুক সম্পর্কে আরো কিছু পোস্ট…….
- ফেসবুক স্ট্যাটাস ও বাংলা ক্যাপশন ২০২৪
- ছেলেদের রোমান্টিক নামের তালিকা ২০২৪
- ফেসবুক পাসওয়ার্ড ভুলে গেছি | করণীয় কি?
- 500+ মেয়েদের ফেসবুক আইডির নাম
- ১০০% হারানো ফেসবুক আইডি ফিরে পাওয়ার উপায়
ফেসবুকের সুবিধা ও অসুবিধা
ফেসবুক বিশ্বের সর্বাধিক জনপ্রিয় সোশ্যাল নেটওয়ার্ক। এর যেমন সুবিধা আছে তেমনি কিছু অসুবিধাও আছে। চলুন জেনে নেই ফেসবুকের সুবিধা ও অসুবিধা।
আরো পড়তে পারেনঃ ১০০+ মেয়েদের ফেসবুক প্রোফাইল নাম
ফেসবুকের সুবিধা ও উপকারিতা
ফেসবুকের সুবিধাগুলো তালিকা আকারে নিচে দেওয়া হলো। এই তালিকায় ফেসবুকের সকল সুবিধা ও উপকারিতা তালিকাভুক্ত করা সম্ভব নয়। শুধু সচরাচর বিষয়গুলোই দেওয়া হলো।
- ফেসবুকের মাধ্যমে খুব সহজেই বন্ধুদের সাথে চ্যাট করা যায়।
- খুব সহজেই ফ্রিতে ভয়েস ও ভিডিও কল করা যায়।
- যাদের সাথে ব্যক্তি জীবনে কম দেখা হয় ফেসবুকে তাদের খোঁজখবর রাখা অনেকটাই ডাল ভাত।
- খুব কম সময়ে কারো সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়।
- পুরনো বন্ধুদের সহজেই খুঁজে পাওয়া যায়।
- ফেসবুকের মাধ্যমে অনেকে তাদের পরিবারও খুঁজে পেয়েছেন।
- খুব সহজেই সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজে অংশগ্রহণ করা যায়।
- ঘরে বসেই ফেসবুকের মাধ্যমে ব্যবসা করা যায়।
- খুব সহজেই গরিব দুঃখীদের সাহায্য করা যায়।
- ফেসবুকে এখন রক্তদান কর্মসূচি পরিচালিত হয়। ফলে অনেকের জীবন রক্ষা করছে।
- অনলাইন মার্কেটিং করা সহজ হচ্ছে।
- অনলাইন শপ চালানো সহজ হয়। ক্রেতাদের সাথে সহজেই যোগাযোগ স্থাপন করা যায় ইত্যাদি।
ফেসবুকের অসুবিধা ও অপকারিতা
ফেসবুকের এত এত সুবিধা ও উপকারিতা থাকা সত্বেও এর অনেক অসুবিধা ও অপকারিতা রয়েছে। সমাজে এর ব্যপক প্রভাব পড়ে। নিচে ফেসবুকের কিছু অসুবিধা ও অপকারিতা সম্পর্কে একটি তালিকা দেওয়া হলো।
- ফেসবুকের মাধ্যমে সম্প্রতি গুজব মহামারীর মত ছড়িয়ে যাচ্ছে। যেমনঃ পদ্মা সেতু নিয়ে মাথা কাটার বা কল্লা কাটার গুজব।
- সময় অপচয় করা।
- ফেক ফেসবুক আইডি খুলে অন্যকে বিপদে ফেলা।
- আইডি হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে কাউকে বিপদে ফেলা, তার টাকা হাতিয়ে নেওয়া ইত্যাদি।
- ভুয়া প্রেমের ফাঁদে পেলে সর্বস্ব লুটে নেওয়া।
- কারো ছবিকে পর্নোগ্রাফির মতো করে উপস্থাপন করে তার সামাজিক মানসম্মান নষ্ট করা।
- অনেকেই উল্টাপাল্টা স্ট্যাটাস দিয়ে রাজনৈতিক সমস্যায় জড়িয়ে পড়েছেন।
- ফেসবুকে অনেকেউ শত্রুকে ব্যক্তিগত হুমকি ধমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ইত্যাদি।
আরো পড়তে পারেনঃ ফেসবুকে বেশি লাইক পাওয়ার উপায়
ফেসবুকের ইতিহাস: ফেসবুক ও বাংলাদেশ
বাংলাদেশে যারা ইন্টারনেট ব্যবহার করে তাদের মধ্যে ৮০ শতাংশ মানুষেই ফেসবুক ব্যবহার করে। (সূত্রঃ যুগান্তর)। ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসের জরিপ অনুযায়ী ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চল মিলিয়ে প্রায় ২ কোটি ২০ লাখ মানুষ সক্রিয়ভাবে ফেসবুক ব্যবহার করছে (সূত্র : দৈনিক বণিক বার্তা, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭)।
ফেসবুক ও বাংলাদেশ নিয়ে অন্য কোন সময় আলাদা কোন পোস্ট লিখবো। এখন সংক্ষেপে কিছু বিষয় তুলে ধরছি।
ফেসবুক মূলত বাংলাদেশে জনপ্রিয়তা পায় ২০১০ এর পরে। ২০১৫ এর পর সেই জনপ্রিয়তা আরো অনেক বেশি বৃদ্ধি পায়।
বাংলা নিউজ ২৪ ডট কম ২০১৭ সালে তাদের একটি খবরে বলেছে, বাংলাদেশের পৌনে সাত কোটি ইন্টারনেট গ্রাহকের মধ্যে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা আড়াই কোটি। তারা তথ্যসূত্র হিসেবে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগকে উল্লেখ করেন।
সেই সময় বিটিআরসি বাংলাদেশের ইন্টারনেট গ্রাহকের সংখ্যা ৬ কোটি ৭২ লাখ ৪৫ হাজার বলে উল্লেখ করেন। মোবাইল ইন্টারনেট গ্রাহক ছিল ৬ কোটি ৩১ লাখ ২০ হাজার। আর ফেসবুক ব্যবহারকারী ছিল ২ কোটি ৫০ লক্ষ।
জঙ্গি হামলা এবং সন্ত্রাসীদের যোগাযোগ বন্ধ করতে ২০১৫ সালের ১৮ নভেম্বর থেকে ২২ দিন বাংলাদেশে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগের বেশ কয়েকটি অ্যাপ বন্ধ রেখেছিল সরকার।
আরো পড়তে পারেনঃ মোবাইল দিয়ে ফেসবুক আইডি ডিলিট করার নিয়ম
তবে সরকার সেই সময় নিশ্চিত করেছিল যে তারা ফেসবুক চিরতরে বন্ধ করেননি। পরবর্তীকালে অবশ্য ফেসবুকসহ সেইসব সামাজিক মাধ্যম আবার খুলে দেওয়া হয়।
আরো পড়ুন সর্বশেষ পোস্টগুলো……..
- বোর্ড চ্যালেঞ্জ করার নিয়ম ২০২৪ | খাতা পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন
- নম্বর সহ পরীক্ষার রেজাল্ট দেখার নিয়ম | সবার আগে ফলাফল দেখুন
- ডিজিটাল স্মার্টবোর্ড দিয়ে শিক্ষার নতুন দিগন্তের সূচনা!
- আধুনিক খাটের উপকারিতা ও বৈশিষ্ট্যসমূহ
- কেন গিগাবিট রাউটার ছাড়া অন্য রাউটার কেনা উচিত নয়?
ফেসবুক স্ট্যাটাস
ফেসবুকে জনপ্রিয় ফিচারের মধ্যে একটি হচ্ছে ফেসবুক স্ট্যাটাস। কোন ব্যক্তি ফেসবুকে তার অনুসারীদের উদ্দেশ্যে কিছু লিখতে চাইলে “ফেসবুক স্ট্যাটাস” নামক ফিচারটি ব্যবহার করেন।
কোন কিছু স্ট্যাটাসে লিখলে তা বন্ধু ও অনুসারীদের কাছে পৌঁছায়। বর্তমানে ফেসবুক স্টেটাসে ছবি ও ভিডিও যোগ করা যায়।
ধন্যবাদ, ফেসবুক বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য শেয়ার করার জন্য।
কমেন্ট করার জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ
ধন্যবাদ
কমেন্ট করার জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ।
tnx vai onk kisu janlam
কমেন্ট করার জন্য ধন্যবাদ
ফেসবুক বিষয়ে অনেক কিছু শেয়ার করেছেন।
ধন্যবাদ, সাথেই থাকুন