বিদেশ গমনকারীদের জন্য পুলিশ ক্লিয়ারেন্স একটি অত্যাবশ্যকীয় কাজ। কিন্তু এই একটি কাজের জন্য আমাদেরকে যথেষ্ট দুঃচিন্তায় থাকতে হয়। কিন্তু আপনি চাইলেই অনলাইনেই পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদন করতে পারবেন। চলুন অনলাইনে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদন করার নিয়ম জেনে নেওয়া যাক।
আজকের লেখাটি পড়লে আপনি যা যা জানতে পারবেনঃ
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স কি?
- কিভাবে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদন করতে হয়?
- আবেদন করতে কি কি লাগে?
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স কত দিনে পাওয়া যায়?
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট মেয়াদ কতদিন ইত্যাদি
পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট কি?
কোন প্রকার অপরাধের সাথে জড়িত নয়, একইসাথে একজন সুনাগরিক এর পক্ষে বাংলাদেশ পুলিশের প্রত্যয়নপত্রকে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট বলে।
অর্থাৎ আপনি এই দেশে থাকা অবস্থায় কোন অন্যায় কাজের সাথে জড়িত হননি এর প্রমাণপত্র হলো পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট। এক্ষেত্রে আবেদনকারীর নামে কোন ফৌজদারী মামলা চলমান আছে কিনা সেটি চেক করা হয়।
কোন ব্যক্তি কোন অপরাধমূলক কাজের সাথে জড়িত থাকলে তিনি এই সার্টিফিকেট পাওয়ার যোগ্য নন। সাধারণত এমন ব্যক্তিকে বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে ক্লিয়ারেন্স দেওয়া হয়না। যারা কোন প্রকার অন্যায়মূলক কাজের সাথে জড়িত নয় তারা এই সার্টিফিকেট সহজেই নিতে পারবেন।
পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট কি কাজে লাগে?
সাধারণত যারা নতুন করে বিদেশ যেতে ইচ্ছুক বা যাবেন তাদের জন্য অবশ্যই পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট নিতে হবে। অন্যথায় সেই ব্যক্তি বিদেশ যেতে পারবেন না।
একইসাথে বাংলাদেশে অবস্থানকারী বিদশী নাগরিকদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার ক্ষেত্রেও পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটের প্রয়োজন হয়। এছাড়াও আরো কিছু বিশেষ কাজে এই সার্টিফিকেটের দরকার হতে পারে।
পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট পেতে কোথায় যোগাযোগ করতে হয়?
পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটের জন্য আবেদন করতে হলে আপনাকে নিকটস্থ থাকায় যোগাযোগ করতে হবে। এছাড়াও আপনি আমাদের দেওয়া নিয়ম অনুসরণ করে অনলাইনের মাধ্যমেও এই আবেদনটি সম্পন্ন করতে পারবেন।
তাহলে এখন প্রশ্ন হলো পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট কিভাবে পাবো? চিন্তার কিছুই নেই। লেখাটি পড়তে থাকুন। পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট আবেদন করার নিয়ম কানুন বিস্তারিত জানতে পারবেন।
পুলিশ ক্লিয়ারেন্স কিভাবে করব?
পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদন করা খুবই সহজ। যেকোন ব্যক্তি চাইলেই ঘরে বসে এই আবেদনটি করে নিতে পারবেন। তবে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটের জন্য আবেদন করার জন্য আপনাকে কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে।
পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় শর্তাবলী
পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট পাওয়ার জন্য যেকোন আবেদনকারীকে নিম্নে বর্ণিত ৬ টি শর্ত পূরণ করতে হবে।
- আবেদনকারীর পাসপোর্টের মেয়াদ কমপক্ষে ৩ মাস থাকতে হবে।
- আবেদনকারীর পাসপোর্টে উল্লেখিত স্থায়ী কিংবা বর্তমান ঠিকানার যে কোন একটি অবশ্যই সংশ্লিষ্ট মেট্রোপলিটন / জেলা পুলিশের আওতাধীন এলাকায় অবস্থিত হতে হবে। একইসাথে আবেদনকারীকে অবশ্যই ঐ ঠিকানার বাসিন্দা হতে হবে ।
- মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের (এম আর পি) এর ক্ষেত্রে যদি পাসপোর্টে ঠিকানা উল্লেখ না থাকে তবে ঠিকানার প্রমাণ স্বরূপ জাতীয় পরিচয় পত্র/জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র/স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর এর সনদপত্রের ফটোকপি ১ম শ্রেণীর সরকারী গেজেটেড কর্মকর্তা দ্বারা সত্যায়িত করে দাখিল করতে হবে ।
- বিদেশে অবস্থানকারী বাংলাদেশী পাসপোর্টধারী কোন ব্যক্তির পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট পাওয়ার জন্য তিনি যে দেশে অবস্থান করছেন সে দেশে বাংলাদেশ দূতাবাস/হাইকমিশন কর্তৃক পাসপোর্টের তথ্য পাতার সত্যায়িত কপি তার পক্ষে করা আবেদনের সাথে দাখিল করতে হবে ।
- প্রবাসী বা বিদেশগামী বাংলাদেশী নাগরিক এবং বাংলাদেশে বসবাস করে স্বদেশে/বিদেশে প্রত্যাবর্তনকারী বিদেশী নাগরিকদের জন্য প্রয়োজনীয় পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এই অনলাইন সিস্টেমের মাধ্যমে ইস্যু করা হয়।
- বাংলাদেশের অভ্যন্তরে চাকুরী কিংবা অন্য কোন কাজে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স প্রয়োজন হলে সংশ্লিষ্ট জেলা কিংবা সিটি এসবি শাখায় যোগাযোগ করুন।
প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র
পুলিশ ক্লিয়ারেন্স পেতে হলে আপনাকে কিছু ডকুমেন্ট প্রদান করতে হবে। সেগুলো হলোঃ
- অনলাইনে যথাযথভাবে পূরণকৃত আবেদন পত্র ।
- ১ম শ্রেণীর গেজেটেড কর্মকর্তা দ্বারা সত্যায়িত পাসপোর্টের তথ্য পাতার স্ক্যানকপি অথবা বিদেশে অবস্থানকারী বাংলাদেশী নাগরিকগনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দেশে বাংলাদেশ দূতাবাস কর্তৃক সত্যায়িত পাসপোর্টের তথ্য পাতার স্ক্যানকপি অথবা বিদেশী নাগরিকদের ক্ষেত্রে নিজ দেশের জাস্টিস অব পিস (Justice of Peace) কর্তৃক সত্যায়িত পাসপোর্টের তথ্য পাতার স্ক্যানকপি।
- বাংলাদেশ ব্যাংক/ সোনালী ব্যাংকের যে কোন শাখা থেকে (১-৭৩০১-০০০১-২৬৮১) কোডে করা ৫০০/- (পাঁচশত) টাকা মূল্যমানের ট্রেজারী চালান অথবা অনলাইনে ক্রেডিট/ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে নির্ধারিত সার্ভিসচার্জ সহ ফি প্রদান।
বিদেশ যাওয়ার জন্য পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদন
বিদেশ যাওয়া সহ যেকোন কাজে পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের জন্য একই নিয়মে আবেদন করতে হবে। কিভাবে আবেদন করবেন সেটা নিচে থেকে দেখে নিন।
দুইভাবে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদন করা যায়। প্রথমত, সরাসরি নিকটস্থ থানায় গিয়ে। দ্বিতিয়ত, ঘরে বসে অনলাইনের মধ্যমে। আমরা আজকে অনলাইনের মাধ্যমে কিভাবে ঘরে বসে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদন করতে পারবেন সেই নিয়মটি জানাবো। যারা পড়তে পছন্দ করেন না তারা চাইলে নিচের ভিডিওটি দেখে নিতে পারেন।
ধাপ-১ঃ পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করুন
অনলাইন যেকেউ নিজের অথবা অন্যের জন্য পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এর জন্য সর্বপ্রথম https://pcc.police.gov.bd/ords/f?p=PCC:REGISTRATION:: লিংকে ক্লিক করতে হবে।
লিংকে ক্লিক করার পর একটি রেজিস্ট্রেশন ফরম ওপেন হবে। এখানে আবেদনকারীর নাম, ইমেইল (যই থাকে), মোবাইল নম্বর, NID নম্বর ও নতুন একটি পাসওয়ার্ড দিয়ে ক্যাপচা এন্ট্রি (অংক সমাধান) করে Continue বাটনে ক্লিক করার মাধ্যমে একটি একাউন্ট খুলতে হবে।
বিঃদ্রঃ যাদের বয়স ১৮ বছরের কম বা যারা বাংলাদেশের নাগরিক নয় তারা Foreign/ Child অপশনে টিক দিয়ে দিবেন। সেক্ষেত্রে আর NID নম্বর দেওয়ার প্রয়োজন হবেনা।
ধাপ-২ঃ একাউন্ট ভেরিফাই করুন
এই ধাপে আপনাকে sms এর মাধ্যমে একাউন্ট ভেরিফাই করার একটি পদ্ধতি দেওয়া হবে। এই নিয়মটি অনুসরণ করে মোবাইল থেকে একটি sms সেন্ড করতে হবে। ফিরতি ম্যাসেজে একাউন্ট ভেরিফাই হওয়ার একটি কনফার্মেশন sms পাবেন।
ধাপ-৩ঃ পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের জন্য লগিন করুন
উপরের দিকের মেন্যু থেকে Apply বাটনে ক্লিক করুন। Apply বাটন খুঁজে না পেলে এখানে ক্লিক করুন। এখানে আপনার মোবাইল নম্বর ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগিন করে নিন।
ধাপ-৪ঃ ব্যক্তিগত তথ্য দিন
এ পর্যায়ে আপনাকে আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে। যেভাবে পূরণ করবেনঃ
- Purpose: বিদেশ যেতে চাইলে Go abroad সিলেক্ট করুন। অন্যথায় Others সিলেক্ট করুন।
- Country of Travel: এখানে আপনি যেই দেশে যেতে চান সেই দেশ সিলেক্ট করুন।
- Personal Information: এই সেকশনে আপনার পাসপোর্ট অনুযায়ী তথ্যগুলো পূরণ করতে হবে।
Personal information এ যা যা দিতে হবেঃ
- PASSPORT NO: এখানে আবেদনকারীর পাসপোর্ট নম্বর দিতে হবে।
- Issuing Country: Bangladesh সিলেক্ট করুন।
- Issue Date: যেই তারিখে পাসপোর্ট ইস্যু হয়েছিলো সেই তারিখ দিন।
- Issue Place: কোন স্থান থেকে পাসপোর্ট ইস্যু হয়েছিলো সেই স্থান সিলেক্ট করুন। যেমনঃ Noakhali
- Expiry Date: পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ দিন।
- Mobile No: এখানে আপনার নিজের নামে রেজিস্ট্রেশন করা একটি মোবাইল নম্বর দিন।
- Email: যদি থাকে তাহলে আপনার নিজের ইমেইল এড্রেসটি দিয়ে দিন।
- NID: এই ঘরে আপনার NID বা স্মার্ট আইডি নম্বরটি দিয়ে দিন।
- Full Name: পাসপোর্ট অনুযায়ী আপনার পূর্ণ নাম লিখুন।
- Father’s / Husband’s Name: এই ঘরে আপনার বাবার নাম লিখুন। বিবাহিত নারী হলে স্বামীর নাম লিখুন।
- Relation: উপরে যার নাম দিয়েছেন সেই অনুযায়ী সম্পর্ক সিলেক্ট করতে হবে। বাবা হলে Father এবং স্বামী হলে Spouse সিলেক্ট করুন।
- Mother’s Name: এই ঘরে আপনার মায়ের নাম পাসপোর্ট অনুযায়ী লিখুন।
- Date of Birth: আপনার জন্মতারিখ সিলেক্ট করুন।
- Salutation: আপনি ছেলে হলে Mr. , মেয়ে হলে Ms. এবং তৃতীয় লিঙ্গের হলে None সিলেক্ট করুন।
- Photo (Maximum 150 KB): এ পর্যায়ে আপনার একটি পাসপর্ট সাইজের ফর্মাল ছবি দিতে হবে। ছবিটি অবশ্যই 150 KB সাইজের মধ্যে হতে হবে। ছবির সাইজ বেশি হলে এখানে ক্লিক করে সাইজ কমিয়ে নিন।
সবকিছু ঠিকঠাকভাবে পূরণ করা হলে Save & Continue বাটনে ক্লিক করে পরবর্তী ধাপে এগিয়ে যান।
ধাপ-৫ঃ Personal Address দিন
এই ধাপে আপনার ব্যক্তিগত ঠিকানা দিতে হবে। এই ধাপে ৩টি ধাপে ফরম পূরণ করতে হবে। ধাপগুলো হলোঃ Emergency Contact Address, Permanent Contact Address এবং Present Address । যে যে তথ্য দিতে হতে পারেঃ
- District/Metro: এখানে আপনার জেলা অথবা মেট্রোপলিটন এলাকা সিলেক্ট করুন।
- Thana: এখানে আপনার থানা সিলেক্ট করুন।
- Post Office: এই আপনার পোস্ট অফিসের নাম দিন।
- Village/Area/Sector: আপনার এরিয়া বা গ্রাম অথবা সেক্টর দিন।
- Road: এই ঘরে আপনার রোডের নাম দিন (যদি থাকে)।
- House: হাউজ নম্বর দিন। (যদি প্রযোজ্য হয়)
- Post Code: আপনার এলাকার পোস্টাল কোড দিয়ে দিন।
এরপর Delivery Type এর ঘরে By Hand সিলেক্ট করুন। একইসাথে Delivery From এর ঘরে SP Office/Metro HQ সিলেক্ট করে Save & Continue বাটনে ক্লিক করে পরবর্তী ধাপে এগিয়ে যান।
ধাপ-৬ঃ ডকুমেন্ট জমা দিন
এই ধাপে আপনার ডকুমেন্টগুলো জমা দিতে হবে। যে যে ডকুমেন্ট লাগবে সেটা আরেকবার দেখে নিন।
- Passport
- National ID
- Birth Certificate
- Ward Councilor Certificate
- Others
এই ডকুমেন্টগুলোর স্ক্যান কপি প্রত্যেকটির পাশের Add লেখায় ক্লিক করে যুক্ত করে দিতে হবে। যেই যেই ডকুমেন্ট সফলভাবে আপলোড হবে তার পাশে টিক মার্ক উঠবে। সবশেষে Save & Continue বাটনে ক্লিক করে পরবর্তী ধাপে এগিয়ে যান।
ধাপ-৭ঃ সবকিছু ঠিক আছে কিনা যাচাই করুন
আপনি পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদন করার নিয়ম অনুযায়ী শেষের দিকে পৌঁছে গেছেন। এই ধাপে আপনি সবকিছু ঠিকঠাক আছে কিনা তা দেখে নিন। এখানে আপনি Refference Number পেয়ে যাবেন।
Final Submit এর পাশে টিক মার্ক দিয়ে Continue বাটনে ক্লিক করুন।
ধাপ-৮ঃ Payment বা পুলিশ ক্লিয়ারেন্স চালান
এই পর্যায়ে পেমেন্ট বা পুলিশ ক্লিয়ারেন্স চালান সম্পন্ন করার জন্য আপনি ৪ টি তথ্য দেখতে পাবেন। এগুলো হলোঃ
- Ref NO
- Passport No
- Name
- Mobile
সব ঠিক আছে কিনা দেখে নিন। এখন আপনি পেমেন্ট দেওয়ার জন্য প্রস্তুত। এক্ষেত্রে ২ ধাপে পেমেন্ট দিতে পারবেন। একটি হলো মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে আর অন্যটি হলো সোনালী ব্যাংক ট্রেজার শাখার মাধ্যমে চালান করে।
আমরা মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে বিকাশে পেমেন্টের পদ্ধতি উল্লেখ করলাম। এক্ষেত্রে ১ম অপশনের Click বাটনে ক্লিক করুন। নতুন একটি ট্যাবে পরের পেজটি ওপেন হবে।
এখানে আপনি একটি চালান ফরম দেখতে পাবেন। এখানে কিছুই পূরণ করতে হবেনা। সব আগে থেকেই পুরণ করা থাকবে। নিচের দিকে গেলে পরিশোধ নামে একটি বাটন পাবেন। সেখানে ক্লিক করুন।
এখানে পেমেন্ট করার Sonali Bank, Card ও Mobile Banking নামক ৩ টি অপশন পাবেন। এক্ষেত্রে বিকাশে পেমেন্ট করার জন্য Mobile Banking সিলেক্ট করুন। এরপর bKash সিলেক্ট করুন। এরপর Pay with bKash বাটনে ক্লিক করুন। এটি আপনাকে পেমেন্ট গেটওয়েতে নিয়ে যাবে।
পেমেন্ট করার জন্য আপনার বিকাশ নম্বর দিয়ে Confirm বাটনে ক্লিক করুন। এই পর্যায়ে মোবাইলে পাওয়া sms এ ৬ ডিজিটের যে কোড পাবেন সেটি দিয়ে Confirm করুন। সবশেষে আপনার বিকাশ পিন কোড দিয়ে পেমেন্ট সম্পন্ন করুন।
সব ঠিক থাকলে আপনাকে পেমেন্ট সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ার একটি বিজ্ঞপ্তি দেখানো হবে। এই পেজে চালান ডাউনলোড করুন বাটনে ক্লিক করুন। এরপরের পেজে প্রিন্ট বাটনে ক্লিক করে PDF আকারে চালান ফরম ডাউনলোড করে নিন।
ধাপ-৯ঃ পুলিশ ক্লিয়ারেন্স চালান আপলোড করুন
৮ম ধাপে আপনি যেই পেজে এসেছিলেন পুনরায় সেই পেজে ফিরে যান। এখানে ২য় অপশনে Scan and Click here to upload challan. এই লেখার Click বাটনে ক্লিক করুন। এখানে আপনাকে কিছু তথ্য দিতে হবে। সেগুলো হলোঃ
- Bank Name: এখানে SONALI BANK সিলেক্ট করুন।
- District: বিকাশে পেমেন্ট করে থাকলে DHAKA সিলেক্ট করুন। অন্যথায় আপনার ব্যাংকের ব্র্যাঞ্চের জেলা সিলেক্ট করুন।
- Branch: বিকাশে পে করলে LOCAL OFFICE BRANCH সিলেক্ট করুন। অন্যথায় আপনার ব্র্যাঞ্চের নাম সিলেক্ট করুন।
- Chalan Date: চালান্নের তারিখ সিলেক্ট করুন।
- Chalan No: এখানে চালান নম্বরটি লিখে দিন।
সব ঠিকভাবে পূরণ করা হলে Check Chalan বাটনে ক্লিক করুন। আপনার তথ্য ঠিক থাকলে আপনার নামটি নিচে দেখাবে। যদি আপনার না দেখায় তাহলে কিছুক্ষণ (১২-২৪ ঘন্টা) অপেক্ষা করে পুনরায় চেক করুন। এটি আপডেট হতে কিছুক্ষণ সময় লাগতে পারে।
যদি আপনার নামটি শো করে তাহলে পাশে (কম্পিউটারে) অথবা নিচের দিকে (মোবাইলে) চালান ফরম আপলোড করার একটি অপশন পাবেন। সেখানে আপনার ডাউনলোড করা চালানটি Upload করে দিন।
শেষ ধাপঃ আবেদন জমা দিন
এ পর্যায়ে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদনটি জমা দিতে Finish বাটনে ক্লিক করুন। আপনার পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদনটি সফলভাবে জমা দেওয়া হলো।
আবেদনটি ডাউনলোড করতে চাইলে My Account অপশনে গিয়ে Token Id নম্বরে ক্লিক করলেই আবেদনটি ডাউনলোড করার অপশন পাবেন।
বিঃদ্রঃ একাধিক পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদন করে থাকলে সবগুলো আবেদনের জন্য একটি করে Token Id দেখতে পাবেন। পাশে নাম, মোবাইল, পাসপোর্ট নম্বর ও জেলার নাম দেখে আপনার Token Id তে ক্লিক করে আপনার আবেদন ডাউনলোড করতে হবে।
পুলিশ ক্লিয়ারেন্স চেক
পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদন করার পর আবেদনের সর্বশেষ অবস্থা চেক করার দরকার হতে পারে। এক্ষেত্রে My account এ গিয়ে Appication Status সেকশনে Ref No, Passport No, Mobile No নামে ৩ টি খালি ঘর দেখতে পাবেন। ঘরগুলো যথাযথভাবে পূরণ করে Search বাটনে ক্লিক করুন।
সার্চ বাটনে ক্লিক করার পর আপনার আবেদনের বর্তমান অবস্থা দেখতে পাবেন। এই সহজ পদ্ধতিতে আপনি পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট যাচাই করতে পারবেন। আর আপনার পুলিশ ক্লিয়ারেন্স রেডি হলে মোবাইলে ম্যাসেজ আসবে।
আরো পড়ুনঃ অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করার নিয়ম
পুলিশ ক্লিয়ারেন্স চালান কত টাকা?
পুলিশ ক্লিয়ারেন্স করার জন্য আপনাকে ৫০০ টাকা চালান জমা দিতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি সোনালী ব্যাংক, কার্ড বা মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে চালান জমা দিতে পারবেন।
পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদন করার পর পুলিশ তদন্তে আসে কিনা?
এক্ষেত্রে কোন বাধ্যবাধকতা নেই। পুলিশ তদন্তের প্রয়োজন হলে আপনার বাসায় আসতে পারে। কিন্তু প্রয়োজন না হলে নাও আসতে পারে। তবে আপনাকে থানায় যেতে হবেনা।
পুলিশ ক্লিয়ারেন্স কত দিনে পাওয়া যায়?
পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট কত দিনে পাওযা যাবে এটি নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়। তবে মেট্রোপলিটন এলাকার ক্ষেত্রে ৭ দিন সময় লাগতে পারে। আর মেট্রোপলিটন এলাকার বাহিরে সাধারণত ১৫ দিনের মধ্যেই পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট হাতে পাওয়া যায়।
আরো পড়ুনঃ থানায় জিডি করার নিয়ম কানুন ও একটি নমুনা কপি
পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট নমুনা
অনেক পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটটি দেখতে কেমন হবে? চলুন এক নজরে দেখে নেওয়া যাক।
পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট মেয়াদ কতদিন থাকে?
পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটের মেয়াদ কতদিন থাকে এই ব্যাপারে আমরা সম্পূর্ণ নিশ্চিত হতে পারিনি। তবে এর সম্ভাব্য মেয়াদ ৯০ দিন বা ৩ মাস।
পুলিশ ক্লিয়ারেন্স হেল্পলাইন নম্বর
পুলিশ ক্লিয়ায়ারেন্স করার সময় কোন সমস্যায় পড়লে বা কোন কিছু জানার থাকলে আপনি চাইলে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স হেল্পলাইনে যোগাযোগ করতে পারেন। এক্ষেত্রে দুইটি মাধ্যম রয়েছে। মোবাইল নম্বর ও ইমেইল। নিচে সেগুলো উল্লেখ করা হলো।
সিনিয়র সিস্টেমস এনালিস্ট
বাংলাদেশ পুলিশ
পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স
৬, ফিনিক্স রোড, ফুলবাড়িয়া
ঢাকা – ১০০০
- হেল্পলাইন নম্বরঃ 01320001824/ 01320001825/ 01755660172 (রবিবার থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৫টা সরকারি ছুটি ব্যতীত)
- ইমেইলঃ ssaphq@gmail.com
শেষ কথা
আজকের আর্টিকেলে আমরা পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আবেদন করার নিয়ম ও এর আদ্যোপান্ত নিয়ে আলোচনা করলাম। আশা করি, লেখাটি সম্পূর্ণ পড়ার পর পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সম্পর্কে আপনি পূর্ণাঙ্গ ধারণা পেয়েছেন। কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করতে পারেন।
ঢাকার বাইরে থেকে অনলাইনে আবেদন করেছি । এখন, ৪/৫ দিনের ভেতরে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট পাওয়ায় কোন উপায় আছে কি?
আপনি যদি Express Delivery তে আবেদন করে থাকেন তাহলে সবকিছু দ্রুত হবে।
এত তথ্যবহুল উপকারী আর্টিকেল শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
কমেন্ট করার জন্য ধন্যবাদ।