মা হতে পারিনি বলে…( ডিভোর্স
লেখাঃ ফারিয়া আলম মিম
পর্ব – ১
” কি রে তুই এখন ও কাদঁছিস????
“কি করব তুমি বল??
” কার জন্য চোঁখের জল ফেলছিস??? যে তোর সাথে প্রতারনা করল?? উওর দে??
“- মা প্লিজ এভাবে বল না,,, খুব কষ্ট লাগছে,, মনে হচ্ছে দুনিয়াটাই মিথ্যা।
তোকে না কতবার বলেছি অতীতের কথা মনে করে শুধু শুধু কষ্ট পাস না। অতীতকে ভুল গিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে চল দেখবি ভাল লাগবে।
” মা শত চেষ্টা করে ও যে পারছি না,, কি করব বুঝতে ও পারছি না।
শোন পারতে যে তোকে হবেই তোর যে ১ টা মেয়ে আছে,,,, তার কথা ভেবে না হয় অতীত জীবনকে ভুলে যা।
মা,, ও মা,, আমার ভাগ্যটা কি ছোট থেকে এভাবেই যাবে! কষ্ট ছারা কি আর সুখের দেখা পাব না আমি???
” মা, তুমি কি বলতে পারো সুখ কিনতে কতগুলো টাকার দরকার হয়????
” মা রে এইসব ভেবে কষ্ট নিয়ে নিজেকে আর কষ্ট দিস না। আল্লাহ ধৈয্য ধারনকারীদের পছন্দ করে তুই কি সেটা জানিস না???
” জানি মা,,, তবে…..?
- হয়েছে এটা নিয়ে আর কোন কথা চলবে না।। যা তারাতারি রেডি হহহ তো দেখি।।।
” কোথায় যাবে মা??
- তোর আন্টির বাসায়।।
মুচকি হাসি দিয়া,,,😊😊
- ৫ মিনিট দাড়াও আমি রেডি হয়ে আসতেছি।।।
একটু পর এসে দেখি মা কাঁদছে….
” মা, তোমার চোঁখে পানি কেনো?? তুমি কান্না করছো????
” জানি না হঠ্যাঁৎ করেই কেন জানি চোঁখের কোণে পানি চলে আসল।
“” চল মা। আবার রাত হয়ে যাবে ফিরতে ফিরতে।
” মোবাইলটা সাথে নিস।
- কি করবা মোবাইল দিয়া।
- পথে কত বিপদ আপদ হতে পারে না,,, আজকাল রাস্তার যে পরিস্থিতি।
- হুম।
- বাসা থেকে নেমে অটোর জন্য অপেক্ষা করছিলাম। কোথায় ও কোন অটো দেখছিলাম না।
- কি রে একটা অটোর দেখা ও তো পেলাম না,,, এখন এভাবে দাড়িয়ে থাকতে কি ভাল লাগছে।
” মা চল,, তার চেয়ে বাসায় যাই। দিবা ও আবার চলে আসবে। তখন ওকে সামলাতে ওর মামার যে কষ্ট হবে। যেই দুষ্ট হয়েছে না।
- হঠ্যাৎ করেই আমাদের সামনে একটা অটো এসে থামল।
- আফা অটোতে ওঠেন,,,কই যাইবেন আপনেরা। চলে আমি নিয়া যাই আপনাগো।
- আমরা রুপাতলি বরিশাল বিশ্ব বিদ্যালয়ের সামনে যাব।
- উঠেন।
- আমি আর মা অটোতে উঠলাম।
- আফা কিছু মনে না করলে একখান কথা কইতাম,,, আপনে যদি কিচ্ছু মনে না হরতেন।
- জ্বি।। আপনি আমাকে বলছেন??
- হহহ।। আপনেরে কইতাছি।
- আপনি আমাকে চিনেন??
- না আফা। তবে দেখতাম আপনেরে একটা ভাইজানের লগে ঘুরতে। তা আফা এখন হেই ভাইজানরে দেহি অন্য একখান মহিলার লগে রাস্তায় ঘুরতে। কারন টা বুঝবার পারলাম না তাই আপনে জিজ্ঞাস করলাম।
- আচ্ছা আপনি এখন আপনার মুখটা বন্ধ করে ঠিক ভাবে অটো চালান।( মা)😡😡
” ভার্সিটির সামনে গিয়ে অটোটা থামল।
- গাড়ি থেকে নেমে ভাড়ার টাকা দিতেই,,,,
লোকটি বলল,,,
- আফা ভাড়া লাগবো না।
- মানে??
আর কেনো লাগবে না??? - আমি আমার বইন আর মা কে আনলাম তাই আইজকা ভাড়া নিতাম না। অন্য এক সময় নিমু। এহন মুই জাই।
আরে আরে কি বলছেন আপনি টাকা টা নিয়া যান।
” বলছি না মুই ভাড়া নিতাম না,, তো নিতামই না।
আইচ্ছা আফা আপনেরা কি আবার বাসায় যাইবেন নি।
- হুম। ধরেন ১ ঘন্টা পর আবার বাসায় যাবো।
- ওহহহ। তাইলে মুই এহানেই অপেক্ষা করি,,, আপনেরা কাজ সাইরা আহেন।
- আপনি এতখন দাড়িয়ে থাকবেন। আপনার লছ হবে না।
- আরে আফা কি হের লছ। আপনে যান তো।
- আন্টির বাড়িতে ঢোকার আগে থমকে দাড়িয়ে ভাবলাম,, প্রায় ২ বছর আগে আন্টির বাসায় দুজনে এক সাথে আসছিলাম আর এখন সব কিছু শুধুই স্মৃতি। কথাটা মনে করে চোখ দুটো জলে ছলছল করছে।
একটু বাদেই,, - মোহনা,, এই মোহনা,,,তুই কি দরজার কাছে এভাবে দাড়িয়ে থাকবি নাকি ভিতরে আসবি।
- আন্টির কথাটা কানে আসতেই অন্য মনস্ক থেকে ফিরে এসে উওর দিলাম।
‘
“আসসালামু আলাইকুম। আন্টি কেমন আছেন??
“” ওয়ালাইকুম আসসালাম।আলহামদুলিল্লাহ। তুমি কেমন আছো?
” আলহামদুলিল্লাহ।
- ভিতরে আয়।
- ভিতরে ঢুকে দাড়িয়ে আছি।
- কি ব্যাপার মোহনা তুই এমন করছিস কেন??? তুই কি এ বাড়ির মেহমান নাকি??
- কি বলেন আন্টি।
- তাহলে এদিক ওদিক তাকাচ্ছিস যে?? মনে হয় আমার বাড়িতে নতুন এসেছিস। আর আমি বাহিরের লোক।
- কি যে বলেন। আপনার আর কোন পরিবর্তন হল না।
- আচ্ছা বাদ দে….
এখন বল তোর কি অবস্থা। আর কি সিদ্ধান্ত নিছিস আমাকে তো কিছু বললি না। - আন্টি আমি এখন ও কোন সিদ্ধান্তে যেতে পারিনি। তাই আপনাকে ও কিছু জানতে পারিনি।
- শোন তুই যেভাবে সিদ্ধান্ত নিচ্ছিস তাতে তোর মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার সময় হয়ে যাবে।
- আন্টি কি যে বলেন। হইলে হবে একবার তো বিয়ের সাধ পাইছি তাই দ্বিতীয় বার পেতে চাই না।
” বুঝলাম,, তবে তোর জীবন কি এভাবে যাবে??? আজ তোর মা বেঁচে আছে কালকে তো আর থাকবে না। তোর ভাইটা বিয়ে করলেই বউকে নিয়ে ভিন্ন হয়ে যাবে। তখন তোকে আর দিবাকে কে দেখবে।
- বুঝি তো আন্টি। তাইত ভয় লাগছে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে।
”
” - শোন ভয় পেলে জীবনে কিচ্ছু করতে পারবি না। তুই অনেক সাহসি মেয়ে তাই তো তোকে আমার খুব পছন্দ। আর তোকে বিয়ে দিতে পারলে আমি নিজেকে ধন্য মনে করব।
” আন্টি একটা কথা বলব,,,,, - হুম,,বল।
- বিয়ে করাটা কি খুব জরুরি??
- এই কথা বলছিস কেন মোহনা??
- আমার বিয়ে করার কোন ইচ্ছাই নাই। একবার তো বিয়ে করছি তাই দ্বিতীয়বার করতে চাই না।
- তোর যা মন চায় কর গিয়া।😡😡
- সোফা থেকে উঠে আন্টি চলে যেতে চাচ্ছিল,,, তার হাতটা টেনে ধরে আমার পাশে বসিয়ে বললাম,,, বাহ্ বা কত্ত রাগ দেখান আপনি।😁😁
- আমাকে ধরলি কেন??? ছার আমাকে।।। তোর যেটা ভাল লাগে কর।
- রাগ কইরেন না প্লিজ। আপনি ছেলে দেখেন,,, আমি বিয়ে করব।
“” যাক অবশেষে রাজি হইলি তাহলে।
- ভিতর থেকে মা বের হয়ে বলল,,, মোহনা আন্টিকে এই মাএ যা বলছিস সব সত্যি তো???
- হুম। 😊😊
মা হতে পারিনি বলে…(ডিভোর্স)
লেখাঃ ফারিয়া আলম মিম
পর্বঃ২
” আন্টির সাথে বেশ জমিয়ে আড্ডা মারছিলাম,, ঠিক তখন ফোনটা বেজে উঠল।
” ফোনের স্কিনের দিকে তাকিয়ে দেখি দীপের কল,,
” আচমকাই লাফিয়ে উঠে কলটা রিসিভ করলাম।
” আপু তুমি কোথায়??
ভাই,, আন্টির বাসায় আসছি।
দিবাকে নিয়ে বাসায় আসলাম অনেকটা সময় হল। এতখন ভালই ছিল কিন্তুু এখন আর থাকতে চাচ্ছে না।
তুই ওকে নিয়ে আবার বাহিরে কিছুখনের জন্য বের হহহ,, আমি ৩০ মিনিটের ভিতর বাসায় আসতেছি।
হুম।
তুই এখন যাবি??? (আন্টি)
হ্যাঁ।
মা চল,,, এখনকার মত বিদায় নেই,, পরে এক সময় আবার আসব। আন্টির বাসা থেকে বের হয়ে দেখি সেই অটো ড্রাইভার এখন ও বসে আছে। আমাদের দেখেই গাড়ি থেকে নামল।
” আপনি এখন ও বসে আছেন যাননি।
না।
আফা,, আপনেরে না কইলাম আপনাগো রে নিয়া হের পর যামু।
হুম বলেছিলেন। আচ্ছা চলেন।
” ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি ৭.৪০ বাজে।
মোহনা,,,
বল মা।
তুই তোর আন্টিকে যা বললি সেটা সত্যি কি??
মন থেকে বলছিলি। না এমনি বললি।
মা,, প্লিজ এখন থাক না,,, পরে… না হয় আলোচনা করা যাবে…
হুম।
৮.১০ বাজল।
ঠিক তখনই অটোটা গেটের সামনে এসে থামল।
ঘর থেকে দিবার কান্নার আওয়াজ শোনা যাচ্ছিল।
” গাড়ি থেকে নেমেই ঘরের উদ্দেশ্যে দৌড় দিলাম। রুমের ভিতর ঢুকে দেখি,,
দিপাকে ঠান্ডা করার জন্য দীপ বাঘের অভিনয় করতে লাগল কিন্তুু তারপর ও দিবা ঠান্ডা হচ্ছিল না।
দৌড়ে গিয়ে দিবাকে কোলে তুলে নিলাম।
আপু তুমি আসছ।
হুম। কতখন ধরে দিবা কান্না করছে??
এই তো মাএ।
দিবাকে কোলে নিয়ে বাহিরে নামলাম।
মা বলল,, মোহনা ঘরে যা মা,, রাতে মেয়েকে নিয়ে বাহিরে থাকা ঠিক হবে না।
” মায়ের কথামত দিবাকে নিয়ে ঘরে গেলাম।
” আপু আমার কোলে দাও দিবাকে। তুমি গিয়ে ফ্রেশ হও আর ড্রেস চেইন্জ কর।
আচ্ছা।
ওয়াশরুমে গিয়ে আয়নার সামনে দাড়িয়ে নিজের চেহারা দেখে নিজের প্রতি খুব ঘৃনা লাগছিল। লজ্জায় নিজের চেহারাটা দেখতে ইচ্ছা করছিল না। ঝরনাটা ছেরে চিৎকার করে কান্না করছে। পানি পরার এত জোড়ে শব্দ হচ্ছিল যে মোহনার কান্নার আওয়াজ বাথরুমের বাহিরে শোনা যাচ্ছিল না। ঘন্টা খানেকপর বাথরুম থেকে বের হয়ে মায়ের কাছে গেল।
মা,, দিবা কোথায়??
দীপের সাথে দোকানে গেছে।
ওহহ।
তোর কি শরীর খারাপ??
না।
তাহলে হঠ্যাৎ করে এই রাতে গোছল করলি যে।। দুপুরে না করলি।
মাথাটা খুব ব্যাথা করছিল তাই আবার গোছল করলাম।
হুম। রাতে দিবাকে কি খাওয়াবি??
এখন খিঁচুরি রান্না করব। মেয়েটা কয়েকদিন ধরে সেরেলাক খেতে চাচ্ছে না। তাই ভাবছি খিঁচুরি রান্না করে খাওয়াব।
তা ঠিক বলছিস। শুকিয়েও গেছে।
দীপ দিবাকে নিয়ে বাসায় এসে মোহনার কাছে দিয়ে বলল,,, আপু সানি ভাইকে দেখালাম ওই মহিলার সাথে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে। আমাকে দেখে কপালটা ঘুচিয়ে চলে গেলো। এখন আর আমাকে চিনে না।
দীপ। তোকে না কতবার বলছি ওনার কথা আমার সামনে বলবি না।
কেনো আপু। কি হয়েছে তাতে। শত হলে ও তো উনি দিবার বাবা।
” দীপ তুই কি সজ্ঞানে আছিস নাকি কিছু খেয়ে আছিস??
‘না আপু আমি ঠিক আছে।
” ঠিক থাকলে এটা বললি কিভাবে??
”
দীপের কথাটা শুনে হাতের কাছে গ্লাস পেলাম আর সেটা ধরে দেয়ালের সাথে ছুঁরে ফেললাম।
দীপ ভয় পেলে গেলো। আপু কি করলা তুমি এটা?? আমি কি বেশি বলে ফেলেছি।
দীপ তুই আমার চোঁখের সামনে দিয়া যা না হলে আমি কি করে ফেলব আমি নিজেই জানব না।
দীপ সোজা ওর রুমে চলে গেলো।
দিবাকে কোলে নিয়ে মোহনা ও তার রুমে চলে যায়।
রাত প্রায় ১১ টা….
মোহনা,,, দরজাটা খোল।
মা পরে আস। এখন কথা বলার ইচ্ছা নাই।
আরে একবার তো খোল।
উফ রাগ করে দরজাটা খুলে দিলাম।
মোহনা,, দীপ নিজের রুমের দরজা ভিতর থেকে আটকে দিছে। অনেকবার নক করলাম,, ডাকলাম,, কিন্তুু খুলল না। আর কোন সাড়া ও পাচ্ছি না। আমার যে খুব ভয় করছে।
রুম থেকে বের হয়ে সোজা গিয়ে দীপের দরজার কাছে দাড়িয়ে ডাক দিলাম।
” দীপ।
” দীপ,, দরজা খোল। তুই দরজা আটকে কি প্রমান করতে চাস তুই যেটা বলছিস সেটা সঠিক আর আমি যেটা করেছি সেটা ভুল।
” দীপ তুই দরজা খুলবি না আমি বাসা ছেড়ে চলে যাব।
দীপ দরজাটা খুলেই মোহনার পা দুটো জড়িয়ে ধরে বলল আপু আমার ভুল হয়ে গেছে প্লিজ আমায় ক্ষমা করে দাও।
দীপ কে তুলে বুকে জড়িয়ে ধরে খুব কান্না করলাম।
আপু প্লিজ কান্না করো না। তোমার কান্না এখন আর সহ্য হয় না।
দীপকে নিয়ে খাবারের টেবিলে বসে দুই ভাই বোনে রাতের খাবার শেষ করে হাসি মুখে যে যার রুমে চলে আসলাম।
” দিবাকে ঘুম পড়িয়ে মোহনা মাথাটা খাটের সাথে হেলান দিয়া বসে আছে আর নিরবে চোঁখের জল ফেলছে।
নিজের অতীতের ঘটে যাওয়া ঘটনা মনে করছে আর কান্না করছে।😭😭
মা হতে পারিনি বলে…(ডিভোর্স)
লেখাঃ ফারিয়া আলম মিম
পর্ব-৩
মোহনা ভাবছে কি হল তার জীবনে সব কিছু এভাবে এলোমেলো হয়ে যাবে এটা তার কল্পনার বাহিরে ছিল।
“এই জীবনে বেঁচে থাকা আর না থাকা সমান কথা।”
“মরতে ও পারছে না সামনে ভেসে উঠছে দিবার মুখটা???”
বাপ তো হারিয়েছে জন্মবার আগেই এবার যদি মাকে ও হারিয়ে ফেলে কি হবে দিবার?? সব দিক বিবেচনা করেই কিছু করতে পারছে না মোহনা।
প্রায় ১৫ বছর আগের কথা….
মোহনার বাবা ছিল একজন কাটিং মাস্টার। বেশ অভাব অনটনের মাঝেই মোহনার বড় হওয়া। খুব একটা চাকচিক্য ছিল না মোহনার। বাবার সংসারে রাত দিন পরিশ্রম করতে হত মোহনার। কারনটা ছিল মোহনার মা ওর বাবার কাজে সাহায্য করত। মোহনার বাবা ও শারিরীক ভাবে সুস্থ ছিল না। তাই মায়ের জায়গায় মোহনা সব কাজ করত। তবু ও কখন ও নিজের কষ্টের কথা মা কে জানাত না।
একরাতে মোহনার বাবা হঠ্যাৎ করেই ঘুমের ঘোরে স্টোক করে। সাথে সাথে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে ডাক্তার জানায় তিনি আর কখন ও হাটতে পারবেন না। মোহনা কথাটা শুনে সেদিন খুব কেঁদেছিল?? আর ভেবেছিল কি হবে এখন ওদের?? বাবাই তো ছিল ওদের একমাএ ভরসা। মা আর ছোট ভাইকে এখন কে দেখবে?? মোহনা তখন কেবল মাএ ১০ম শ্রেনিতে পরত আর ভাইটা ৫ম শ্রেনিতে। এই পরিস্থিতিতে মোহনার কি ছিল মনের অবস্থা??
তারপর ও একবারের জন্য ও ভেঙ্গে পরেনি। আল্লাহর উপর ছিল অটুট বিশ্বাস মোহনার। হাসপাতালের সামনে দাড়িয়েই দুই হাত তুলে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ জানায় এই বিপদ থেকে আল্লাহ তুমি রহম করো আমাদের।
মোনাজাত শেষ করেই মায়ের কাছে যায়।
” – নিজের কষ্ট সব উপেক্ষা করে মাকে বুকে জড়িয়ে ধরে শান্তনা দিচ্ছিল। অসুস্থ বাবাকে নিয়ে মোহনা বাসায় যায়। রাতে বিছানায় শুয়ে শুয়ে ভাবছে কিভাবে এই সংসারটাকে ধরে রাখবে???
পরেরদিন বাসার সব কাজ শেষ করে বিকালবেলা উঠানের এক কোণে তে
দাড়িয়ে গুমরে গুমরে কান্না করছিল মোহনা। মোহনার কান্না দেখে এক ভদ্র মহিলা সামনে এগিয়ে এসে বলল কি হয়েছে তোমার তুমি এভাবে কান্না করছো কেন??
- মহিলাটিকে দেখে মোহনা ঘরে চলে গেলো,,,
” খানিকটা বাদে আবারও মোহনা বাহিরে আসে। হঠ্যাৎ করেই মোহনার চোঁখ পরল উঠানের সেই কোণেটার দিকে।
” একি,,, অবাক চোঁখে তাকিয়ে নিজের চোঁখকে যেনো বিশ্বাস করতে পারছিল না। কি দেখছে এটা!! স্বপ্ন না কি সত্যি। সাথে সাথে নিজের হাতে চিমটি কাটল। উফ,, মা গো মা,, এত তো দেখছি সত্যি।
সামনে এগিয়ে যায় মোহনা।
” কি ব্যাপার আপনি???
এখানে এখন ও দাড়িয়ে আছেন যে,,, কোন সমস্যা নাকি???
- না। কোন সমস্যা না। আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করছিলাম।
- চোঁখ মুখ তারিয়ে মোহনা ভারি গলায় জবাব দিল,,, আমার জন্য অপেক্ষা করছেন কি জন্য?? তাছাড়া আমি তো আপনাকে চিনি না। জীবনে এই প্রথম দেখলাম আপনাকে।
” তুমি কি মোহনা?? - অজানা মহিলাটির মুখে আমার নামটা শুনে কিছুটা ঘাবরে গিয়ে উওরে বললাম,,,
” হ্যাঁ। আমি মোহনা। আপনি আমার নাম জানলেন কিভাবে??
” মাহিলাটির ঠোঁটের কোণে মুচকি হাসি দিয়া জবাব দিল,,, হ্যাঁ। ছোটবেলায় তোমাকে দেখেছি বড় হওয়ার পর এই প্রথম দেখে কনফিউশন হয়ে গিয়েছিলাম তাই শিউর হওয়ার জন্য এখানে দাড়িয়ে ছিলাম। সেদিনের সেই ছোট্ট মোহনা আজকে কত্ত বড় হয়ে গেছে ভাবলেই অবাক হয়ে জাই।
“- শোনেন কিছু মনে না করলে একটা কথা জিজ্ঞাস করব?? - আমি জানি তুমি কি জানতে চাইছো?? আমি কে আর তোমার ব্যাপারে এত কিছু জানি কিভাবে এই তো??
- হ্যাঁ। দয়া করে যদি বলতেন।
- আরে পাগলি আমি তোমার আন্টি। আমি ঢাকা থাকি। তুমি তোমার মাকে গিয়ে বল,,, সানির আম্মা আসছে???
- নামটা আগেই মায়ের মুখে শুনেছিলাম। সাথে সাথে আন্টিকে সালাম করলাম। হাত ধরে বাসায় নিয়ে ঢুকলাম। ঘরে ঢুকেই চেঁচাতে লাগল মোহনা…. দেখো মা বাসায় কাকে নিয়ে এসেছি। ভিতরে মা জামা সেলাই করছিল আমার গলার আওয়াজ পেয়ে দৌড়ে সামনের রুমে এসে আন্টিকে দেখে অবাক হয়ে যায়।
দেখে মনে হচ্ছিল ভুত দেখেছে।
মা,,মা,, সত্যি আন্টি?? তুমি অবাক হয়ো না।
‘
” মা এক পা, দু পা করে এগিয়ে গিয়ে আন্টিকে জড়িয়ে ধরে কান্না করল আর বলল এত বছরে বুঝি আমাদের মনে পরল তোর??? - আপা তুমি আমাকে ভুল বুঝ না। তুমি তো সব বিষয় জানো।
- তুমি যেদিন একা বিয়ে করেছিলে সেদিন থেকেই তো মা তোমাকে শাস্তি হিসাবে তোমাকে ত্যাগ করেছেন। আর আমাকে দিয়ে ওয়াদা করিয়ে নিয়েছিল যেনো তোমার সাথে কোন যোগাযোগ না রাখি। তাহলে আজকে কেন আসলি আমার কাছে?? এতটা বছর আমি কিভাবে বেঁচে আছি একমাএ আল্লাহ আর আমি জানি।
- আপা,, মা আর বেঁচে নেই আমাদের মাঝে। শিরিন তুই,,, এসব কি বলিস?? মা আর নেই বলেই হাউ মাউ করে কান্না শুরু করল।
” আপা এখন আর কান্না করে কি হবে??? আল্লাহর মাল আল্লায় নিয়ে গেছে। মা যাওয়ার আগে ভাটিখানার ১০ শতাংশ জমি আর বাবার পেনশনের ৫ লাখ টাকা তোমার নামে উইল করে দিয়ে গেছে। - শিরিন কি বলিস তুই?? মা এত কিছু আমাকে দিয়ে গেছে??
- হুম। আমি সময় করে সব কিছু তোমায় বুঝিয়ে দিব।
- হুম দিস।
- মোহনা তুমি কি সে পরছো???
- আন্টি আমি ১০ম শ্রেনিতে পরি।
- আপা আমি তবে এখন জাই অন্য এক সময় আসবো। কি বলিস শিরিন তুই,, মাএ তো আসলি এসেই চলে যেতে চাইছিস। সন্ধ্যার পরে গেলে কি হবে। আসলে আপা সানি বাসায় এসে পরবে আর যদি আমাকে দেখতে না পায় তাহলে সারা এলাকা মাথায় তুলবে। তাছারা বরিশালে সানি তেমন কিছু চিনে না,,,খুব দুষ্ট আমার ছেলেটা। তা সানিকে ও সাথে করে নিয়ে আসলে দোষটা কি হত।
- মুচকি হাসি দিয়া বের হয়ে যেতে লাগল আর বলতে লাগল আপা আসবে আসবে সময় হলেই আসবে। এখনকার মত যাচ্ছি আপা বলেই বাসা ত্যাগ করল মূহুতেই।
- মা,,, আন্টিটা তো দেখছি অনেক ভাল,আর খুব মিশুক ও বটে। মোহনা তোর আন্টি আমাকে অনেক ভালবাসে কিন্তুু মায়ের জন্য পারেনি।
ওয়াদার থেকে তো সম্পর্ক বড় না। যাকে ওয়াদা দেওয়া হবে সেই ওয়াদা যেনো অক্ষরে অক্ষরে পালান করা।
“বুঝেছি,, মা বুঝেছি,, এখন খিদা লাগছে কিছু খেতে দাও তো।
“” একটু বস আমি এখুনি তোর জন্য রুটি আর চা করে দিচ্ছি। বসে বসে টিভি ছেরে একটা মুভি দেখছি হঠ্যাৎ দরজায়,,, ঠক ঠক আওয়াজ আসল।
” কে???
” দরজার পাশ থেকে,,, মোহনা দরজাটা খোল তো। - দরজাটা খুলতেই দেখি পাশের বাড়ির আন্টি। কি করছো তুমি?? আমি টিভি দেখছিলাম। কিছু বলবেন কি আন্টি?? হ্যাঁ কিছু বলার ছিল তোমার মায়ের কাছে। তিনি কি ফ্রি আছেন। ইয়ে মানে আন্টি,, আমার তো খিদা লাগছে তাই মা আমার জন্য নাস্তা বানাচ্ছে। বিকালে কে এসেছিল তোমার বাসায়??? আমার আন্টি। কেমন আন্টি তোমার?? আমার মায়ের ছোট বোন। তাই! তাহলে এতদিন কোথায় ছিল?? তোমরা যে এত কষ্ট করেছো কখন ও তো তোমাদের খোঁজ নেওয়ার প্রয়োজন মনে করেনি তবে আজ কেনো আসল??? তোমার নানি তোমার মাকে সম্পত্তি আর টাকা দিছে তাই খাতিল করতে এসেছে। আন্টি আমি তো এসবের কোন মানেই বুঝতেছি না। আপনি কি বলছেন আমার মাথায় ঢুকছে না।
-তোমার বুঝতে হবে না,,, তুমি গিয়ে দেখো তোমার মায়ের কাজ শেষ হয়েছে কি না??
- দেখছি।
- আন্টি মায়ের বোধঁহয় দেরি হবে এর থেকে আপনি এখন যান,,, মায়ের কাজ শেষ হলে আপনার বাসায় পাঠিয়ে দিব।
- আচ্ছা।
- মা নাস্তা নিয়ে খেতে ডাক দিল। দৌড়ে মায়ের কাছে গিয়ে মাকে জড়িয়ে ধরে বললাম,,,মা আল্লাহ বুঝি এবার মুখ তুলে তাকিয়েছে তার বান্দার দিকে।
- হ্যাঁ রে। আল্লাহর কাছে লক্ষ লক্ষ শুকরিয়া। রুটি খাচ্ছি আর চিবুতে চিবুতে বলছি মা পাশের বাড়ির আন্টি এসেছিল তোমার সাথে নাকি তার জরুরি কথা আছে। আমি নাস্তা খাই তুমি কি কথাটা শুনে এসো। ঠিক আছে আমি যাচ্ছি তুই তোর বাবার দিকে খেয়াল করিস।
- যাও মা। তুমি কোন চিন্তা করো না। আমি আছি বাবার খেয়াল রাখার জন্য। নাস্তা শেষ করে বাবার রুমে জাই। মোহনাকে দেখা মাএই বাবা শোয়া থেকে উঠে বসল। বাবা উঠলা কেন শুয়ে থাক। না রে মোহনা। সারাদিন শুয়ে থাকতে থাকতে এখন আর ভাল লাগছে না। বাবা তুমি রুটি খাবে???? না রুটি খাব না একটু বাদেই ভাত খাব।
- হুম। তাহলে আমি জাই। কথাটা বলেই বাবার রুম দিয়ে বের হয়ে আসি। দরজার দিকে তাকিয়ে দেখলাম মা ও ভিতরে প্রবেশ করছে। মায়ের মুখটার দিকে ভাল করে তাকিয়ে দেখি কেমন জানি একটা চিন্তিত দেখাচ্ছে মা কে।
“- কি হল মায়ের কিছু বুঝতে পারছিলাম না” যাওয়ার সময় তো ঠিক ছিল আসার পর চেহারার রং ই যে পাল্টে গেছে….
মা হতে পারিনি বলে( ডিভোর্স)
লেখাঃ ফারিয়া আলম মিম
পর্বঃ ৪
” মোহনা মায়ের দিকে অপলোক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল। মা মোহনাকে দেখে ও না দেখার ভান করে নিজের রুমের ভিতরে প্রবেশ করল। মোহনা ও মায়ের পিছু পিছু রুমের ভিতর ঢুকল।”
- পিছন ফিরে তাকিয়ে বলল,, কিছু বলবি তুই??
- কিছু কথা জানার ছিল তোমার কাছে।
- বল। কি বলবি??
- একটা বিষয় খেয়াল করলাম,,, আন্টির বাসা থেকে আসার পর তোমাকে খুব চিন্তিত মনে হচ্ছে??? এর কারনটা কি জানতে পারি???
- খানিকটা চুপ করে থেকে উওরে বলল,,, এখন জানার কোন প্রয়োজন নেই। যখন দরকার হবে তখন বলব।
- মায়ের কথাটার উওর শুনে মনে মনে কষ্ট পেল মোহনা। চোঁখ দুটো দিয়ে কান্না চলে আসল,, আর এ কান্না যেন থামার না। কারনটা ছিল মোহনার মা এভাবে কখন ও কথা বলেনি তাই হয়ত কষ্টটা বেশি পেল মোহনা।
- মায়ের চোঁখ মোহনার দিকে পরল সাথে সাথেই বলল কি রে তুই কান্না করছিস কেন??? কি হল আবার!
” কথাটা ঘুরিয়ে মোহনা উওর দিল,,, কিছু হয়নি মা,,, চোঁখে কি যেনো একটা পরল। - ওহহহ। যা গিয়ে চোঁখে পানি দিয়ে আয়।
- মোহনা রুম থেকে বেড়িয়ে সোজা বাথরুমে প্রবেশ করল। প্রায় আধাঁ ঘন্টা পর বাহিরে বেরিয়ে এসে দরজা খুলে সিড়িঁর উপর গিয়ে বসল।
” মোহনা,,, এখানে বসে আছিস কেন???
” এমনি মা,,,
-” এমনি কেউ এভাবে বসে??? উঠ খাবি চল!
” তুমি যাও মা,, আমি আসছি।
-” না। এখনই আমার সাথে চল কথাটা বলেই হাতটা ধরে টেনে সাথে করে খাবারের টেবিলের কাছে নিয়ে যায়। - মোহনা চুপটি করে বসে থাকে,, কোন কথা বলছে না।
-” মোহনা তোর কি হয়েছে একটু বলবি??? - কাঁদো কাঁদো স্বরে উওর দিল কিছু হয়নি মা।
-” বুঝতে পারছি আমি,, তুই রাগ করেছিস! তোর সাথে তখন এমনটা করেছি বলে তার জন্য গোসা করেছিস। - না মা।
“- খাবার প্লেটে নিয়ে মা নিজ হাতে মোহনাকে খাইয়ে দিল। খুব তৃপ্তি সহকারে খাবারটা শেষ করল মোহনা। - খাওয়া শেষ করে নিজের ঘরে যাওয়ার জন্য পা বাড়ায় মোহনা,,, সাথে সাথেই পিছন থেকে মায়ের ডাক??? শোন তোর সাথে আমার কিছু কথা ছিল???
- পিছনে ফিরে তাকিয়ে বলল,,, বল মা কি বলবা।
” হাসান কে তোর কেমন লাগে??
-” মায়ের কথাটা শুনে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে মোহনা। মুখ দিয়া ম্যা ম্যা শব্দ বের হচ্ছে। - কি হল বল,,, তোকে কি জিজ্ঞাস করলাম ??
“- মা,, কি বলছ তুমি আমি তো কিছু বুঝতেছি না। হাসান ভাইয়াকে কেমন লাগে সেটা জানতে চাচ্ছো কেন???
“- হ্যাঁ কি না তাই বল। - তোমার এই প্রশ্নের উওর আমার কাছে নেই।
- হাসানের মা তোর সাথে হাসানের বিয়ের প্রস্তাব রাখল। আমি তার প্রশ্নের ভাল মন্দের কোন উওর দেইনি।এখন তুই বল তোর কি এই বিয়েতে সম্মতি আছে???
“- মোহনা মাথাটা নিচু করে দাড়িয়ে রইল কোন উওর দিল না। - আবার জিজ্ঞাস করল কিছু তো একটা বলবি???
- আমি কি বলব,, তোমার যেটা ভাল মনে হয় তাই করো মা।
- মেয়ের কথা শুনে মনটা খুশিতে ভরে গেলো। তাহলে বিয়েটা পাক্কা।
তাছারা হাসান খুব ভাল ছেলে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পরে,, তাবলিক করে,, সাথে প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক। বয়সটা একটু বেশি হবে তবে আমাদের পরিস্থিতি এবং সব দিক বিবেচনা করলে প্রস্তাবটা ঠিক আছে।
-” মায়ের কথাগুলো শুনে মোহনা ফুফিয়ে ফুফিয়ে কান্না করছে। কি রে তুই কান্না করছিস কেন?? এই বিয়েতে কি তুই রাজি না??? - তেমন কিছু না মা।কেন জানি বিয়ের কথাটা শুনে কষ্ট লাগছে। ধুর বোকা মেয়ে হয়ে জন্মগ্রহণ করেছো যখন বিয়ে তো করতেই হবে।
- মাকে জড়িয়ে ধরে মোহনা খুব কান্না করল। মা ও নিজেকে সামলাতে পারল না তিনি ও কেঁদে দিলেন।
পরেরদিন সকালে হাসানের মা এসে বিয়ের দিন তারিখ সব ঠিক করে পাকা করে গেলেন আগামী শুক্রবার জুম্মার নামাজের পরে বিয়ে।
“- হাসানের মায়ের কথাগুলো মোহনা দরজার আড়াল থেকে শুনে নিয়েছিল।
“- অবাক হয়ে একা একাই বিড় বিড় করতে করতে বলল,,,এত তারাতারি বিয়ে???
“- হাসানের মা চলে যাওয়ার পরে মোহনাকে ডেকে বিয়ের দিন তারিখ সব জানিয়ে দিল মা।
“- কৌতহলি হয়ে জবাব দিল মা,, এত তারাতারি বিয়ে???
” হ্যাঁ।
- হাসানের ছুটি আছে ৭ দিনের তাই শুভ কাজে দেরি করতে চাইছেন না তারা। আমি ও আর ফেলতে পারলাম না। তারাতারি বিয়েটা হয়ে গেলেই আল্লাহর দরবারে লাখ লাখ শুকরিয়া। মায়ের কথাগুলো শুনে নিজের রুমে গিয়ে বসে পরল মোহনা।
- রাতের খাওয়া শেষ করে শুয়ে পরল। মনটা ভাল লাগছিল না তার। সারাটা রাত দুচোঁখের পাতা এক করতে পারল না বিয়ের চিন্তায়।
রাত ৩ টায় শোয়া থেকে উঠে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করে কুরআন শরীফ পরতে বসল মোহনা।
কুরআন শরীফ পরতে পরতে ফজরের আজান দিয়ে দিল। বুকের সাথে জরিয়ে ধরে কুরআন শরিফ আলমারির উপরে রাখল। জায়নামাজে দাড়িয়ে ফজরের নামাজ আদায় করল মোহনা। মোনাজাত ধরে আল্লাহর কাছে দুই হাত তুলে ফরিয়াদ জানাল,, হে আল্লাহ তোমার প্রতি আমার অটুট বিশ্বাস তুমি যা করবে অবশ্যই বান্দার মঙ্গলের জন্যই করবে। নামাজ পরে বিছানার উপর হেলান দিয়ে শুয়ে পরে কখন জানি ঘুমিয়ে পরল টের ও পায়নি।
মা হতে পারিনি বলে( ডিভোর্স)
লেখাঃ ফারিয়া আলম মিম
পর্বঃ ৫
সকালবেলা,,,
-মোহনা,,, মোহনা,,, তুই আজকে কতবেলা করে ঘুমাবি???? নাস্তা কি খাওয়া লাগবে না??? না কি আজকে ঘুমিয়ে দিনটা পার করে দিবি।
- মায়ের ডাক শুনতেই লাফিয়ে উঠে মোহনা। চোঁখে মুখে তার ঘুম,,, এই তো কিছুখন আগেই ঘুমিয়ে পরেছিল। চোঁখ দুটো,,, দুই হাত দিয়ে ডলতে ডলতে বলল,, মা,, তুমি নাস্তা টেবিলে রাখ আমি ৫ মিনিটে হাত মুখ ধুয়ে আসতেছি।।
হঠ্যাৎ করে ঘুম থেকে উঠার কারনে মোহনা থর থর করে কাপছে,,, হাটার মত শক্তি ছিল না মোহনার। তারপর ও কষ্ট করে হাত মুখ ধুয়ে নাস্তার টেবিলে বসে নাস্তা করল। নাস্তা খেতে খেতে বলল মা,, তুমি খেয়েছো??
- হুম।
“-মোহনা তোর চোঁখ লাল কেনো??? রাতে কি ঘুমাও নি?? - মায়ের দিকে তাকিয়ে অনেকখন পর উওর দিল, মোহনা,,,মা রাতে ঘুমাতে পারিনি।
- কেনো?? কি হয়েছে তোর??
“- জানি না মা,,, ঘুম আসছিল না,,, শেষে নামাজ পরে সকালবেলা একটু ঘুমিয়ে পরছিলাম।
- তাহলে এখন গিয়ে ঘুমিয়ে পর,, না হয় আবার শরীর খারাপ লাগবে???
- ঠিক আছে মা যাচ্ছি।
- নাস্তা শেষ করে বিছানায় গিয়ে শুয়ে পরলাম মোহনা,,
বেলা ১২ টায় ঘুম ভাঙ্গল মেহনার…
ঘুম থেকে উঠে শরীরটা আগের থেকে একটু ভাল লাগছিল,,, আস্তে আস্তে বিছানা থেকে নেমে মায়ের কাছে রান্না ঘরে ঢুকল।।
- মা কি রান্না করছো আজ??
-গরুর গোশত,, পোলাউ, ফিন্নি। - এ মা,, হঠ্যাৎ এত কিছু???? আজকে কি কোন বিশেষ কারন আছে নাকি???
- মুচকি হাসি দিয়ে মা বলল,, আজকে আমার একমাএ মেয়ে মোহনার জন্মদিন। তুই ভুলে যেতে পারিস কিন্তুু আমি ভুলিনি।
- মা কে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিল মোহনা। সত্যি মা তোমার কোন তুলনা হয় না।
- এখন কান্না থামিয়ে গোছলটা সেরে নে। দুপুরে কয়েকজন হুজুরদের দাওয়াত দিছি তারা খেতে আসবে আর তোর জন্য দোয়া পরাবে।
- ঠিক আছে মা এখুনি যাচ্ছি।
- ওহহ আরেকটা কথা,,, তোর আন্টি কে বলছি তারা ও আসবে বাসায়।
- জ্বি মা। মায়ের সাথে কথাটা শেষ করেই গোছল করতে ঢুকলাম। অনেকদিন পর আজকে চুলে শ্যাম্পু করব😊😊😊😊
প্রায় ১ ঘন্টা পর গোছল করে বের হয়ে উঠানে গিয়ে জামা কাপড় রশিতে মেলে দিলাম। রাস্তার দিকে তাকিয়ে মোহনার নজর পরল হাসান ভাইয়ের উপর,,, তিনি হয়ত বাসায় যাচ্ছেন। তাকে দেখে লজ্জায় লাল হয়ে যাওয়ার মত অবস্থা। শুক্রবার যে বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করা হয়েছে। হাসান ভাই মাথাটা নিচু করেই বাসার দিকে রওনা দিল। কি যে হাসি পাচ্ছিল মোহনার,,, ভাবতে লাগল হাসান ভাইকে তো কখন এমনটা করতে দেখিনি,,, আজকে তাকে অন্য রকমই লাগছিল।
-“এই মোহনা,,একা একা এভাবে হাসছিস কেন??? কি দেখলি আবার??
- মা,, কি বলব,, মাএ হাসান ভাইকে রাস্তার সামনে দেখালাম। আমার দিকে চোঁখ পরাতে এমন ভাবে দৌড় দিল,,, মনে হচ্ছিল দিন দুপুরে ভুত দেখেছে😁😁😁
- এই যা,,, তুই তো বলদীর মত কথা বলা শুরু করলি??? হাসান তো জানে আজ বাদে কাল তোর সাথে তার বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করা তাই তো লজ্জায় লাল হয়ে পালিয়েছে।
“- এ,,,মা,,, আমার তো একটু ও খেয়াল ছিল না,,, এই ক….থা….টা।
- থা…..ম….বি তুই,,,,😒😒
- মা,, এভাবে বল কেনো??? আমি বুঝি ভয় পাই না।
“- হয়েছে এত নেকামি করতে হবে না তোকে।।।
- আমি নেকামি করি😭😭😭
- এবার কান্না থামিয়ে,,, তারাতারি গিয়ে টেবিলে খাবার সাজা,,, হুজুরদের আসার সময় হয়ে গেছে।
“- জ্বি হুকুম মা,,, যাচ্ছি। কথাটা বলেই পা দুটো ঝাপটাতে ঝাপটাতে ঘরের ভিতর ঢুকে গেলো। টেবিলের উপর প্লেট, গ্লাস,,, সব খাবার সহ সাজিয়ে রেখে মোহনা নিজের ঘরে ঢুকে গেলো। জায়নামাজ বিছিয়ে জোহরের নামাজ আদায় করে নিল মোহনা। নামাজ শেষ করে জায়নামাজ গুছাতে গুছাতে মায়ের ডাক,, মোহনা,,, তোর আন্টি চলে এসেছে এদিকে আয় তো।
- জ্বি, আসছি মা।
- আসসালামু আলাইকুম আন্টি।
- ওয়ালাইকুম আসসালাম।
- আন্টি ভাল আছেন??
- আলহামদুলিল্লাহ,,, তুমি কেমন আছো??
- আমি ও আল্লাহর রহমতে ভাল আছি।
- মোহনা তোমাকে তো আজকে দারুন লাগছে??? সেদিনের সাথে আজকে কোন মিল নেই।
- মোহনা লজ্জায় লাল হেয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়ে গেলো। কি বলছেন আন্টি???
- হুম,, ঠিক বলছি। আমার ছেলে সানি বিকালে আসবে।
-” মোহনার মা উওরে বলল,,, ঠিক আছে আসুক। - এরই মাঝে ঘরের দরজায় নক করল,,, বাড়িতে কেউ আছেন???
- মোহনার মা দরজাটা খুলে দিয়ে হুজুরদের দেখে সালাম দিয়ে ভিতরে আসতে বলল,,,
” একে একে হুজুরদের খাওয়ার পর্ব শেষ করে তাদের বিদায় দিয়ে,,,
সবাই এক সাথে খেতে বসল।
“- খেতে খেতে মোহনার মা,,, তার বোনকে বলল,,, জমি কবে দলিল করে দিবি সে দিকে কিছু ভেবেছিস।
- হ্যাঁ,,, আপা,,, ভেবেছি,,, খুব তারাতারি তোমার নামে দলিল করে দিব।
“- মোহনা,,, গোশতের বাটি টা এদিকে দে তো।।
“- গোশতের বাটি টা এগিয়ে দিল মোহনা। - বাটি থেকে গোশত চামচে করে তুলে মোহনার মা,,, তার বোনের প্লেটে দিল।।
- এ কি,,, কি কর আপু,,, এত গোশ কি খাওয়া যায় নাকি???
- আরে কি বলিস,, এত গোশ কই,,, মাএ দুই পিচ।
- জাই হোক আপু,, গোশ খাওয়ার সময় তো সামনে। এখন না হয় কম ই খেলাম।
- আন্টির কথাগুলো শুনে হা করে তাকিয়ে ঢোক গিলছে মোহনা,, কিছু বুঝতেছে না তার কথা।
‘”- খাওয়া শেষ করে মোহনা টেবিল ছেরে নিজের রুমে গিয়ে বিছানায় শুয়ে পরে।
“- আন্টি ও পিছনে পিছনে রুমে গিয়ে খাটের উপর বসে পরে। - ঘুমাবেন আন্টি??
- না। একটু পাশে সরো আমি এমনি শুয়ে থাকবো।
- জ্বি,,
- কথা বলতে বলতে মোহনা ঘুমিয়ে পরে।
বিকালে
মোহনা,, এই মোহনা,,, উঠ,, সন্ধ্যা হয়ে গেছে।
“- আড় মোড়া দিতে দিতে বলল,, হেয়ালি করো না মা,,মাএ শুইলাম এরই ভিতর সন্ধ্যা হল কিভাবে??
- হো হো করে কে যেন হেঁসে উঠল।
-“চোঁখ মেলে সামনে তাকিঁয়ে দেখে আন্টি দাড়িয়ে। লজ্জায় কুকড়ে যাওয়ার পালা,,, তোতলাতে তোতলাতে,,, তু…..মি।
- হুম।
-কিছু মনে করবেন না,,, আমি ভাবিছি মা,,
- বুঝতে পারছি যে তুমি আপুকে ভেবেই কথাগুলো বলেছো। এবার তারাতারি উঠে রেডি হও।
- কেনো আন্টি??? কোথায় ও কি যাবেন??
- হ্যাঁ। সানি আসলে আমরা আজকে রেস্টুরেন্টে যাব রাতের ডিনার করতে।
- আন্টির কথা শুনে খুশিতে হাসতে লাগল মোহনা।
- এ কি হাসছো কেন???
- ঘুরতে যাব তাই হাসতেছি। কথা শেষ করতে না করতেই,,,,
মা,, মা,, কোথায় তুমি??
- মনে হচ্ছে সানি এসে গেছে। তুমি রেডি হও আমি আসতেছি।
“- কৌতুহল বশত বিছানা দিয়ে নেমে
পর্দাটা ফাঁকা করে বারান্দায় তাকায় মোহনা। তাকিঁয়ে দেখল একটি ছেলে,,, মনে মনে ভাবল,,, নিশ্চয়ই আন্টির ছেলে সানি ভাইয়া হবে।
“- বারান্দা থেকে ডাক দিল,, মোহনা এদিকে আসো তো।
- রুম থেকে বেড়িয়ে বারান্দায় গেল মোহনা।
“-আন্টি আমাকে ডেকেছেন??? - হুম। এই হল সানি। আমার একমাএ সন্তান।
- আসসালামু আলাইকুম।
- ওয়ালাইকুম আসসালাম।
- সানি এই হল আমার বড় বোনের মেয়ে মোহনা।
সানিঃ মা চল,, বাহিরে জাই।। না হলে দেরি হয়ে যাবে।
- সানির মাঃ তুই এখানে বস আমি আপুকে রেডি হতে বলি। মোহনা তুমি ও যাও তারাতারি রেডি হয়ে এসো।
২০ মিনিট পর
” মোহনা একটা নীল রংয়ের শাড়ি পরে সামনে আসল। মোহনাকে দেখে তো সবার হুশ উড়ে গেলো???
“- কি দেখছে এসব??
সানির মাঃ মাসআল্লাহ তোমাকে তো দারুন লাগছে। চোঁখ তো ফিরাতে পারছি না। সাথে সাথে চোঁখের কাজল এনে মোহনার কানের নিচে দিয়ে বলল,, কারো নজর জানি না লাগে আমার বউ মার।
“-মোহনাঃ আন্টির কথা গুলো শুনে,, বোকার মত ঢেব ঢেব করে তাকিয়ে,,,
ঢোক গিলছে আর বলছে,,, আন্টি কি বললেন???? ব….উ……মা???
“- সানির মাঃ হুম। কেনো অবাক হয়ে গেলা নাকি???
“- মোহনাঃ ভ্রু কুচকে বলল,, না কিছু না,,, চলেন কোথায় নাকি যাবেন??
- মোহনার মাঃ ভিতর থেকে বেড়িয়ে,, কি বিষয় নিয়ে কথা হচ্ছে জানতে পারি কি???
- সানির মাঃ আপু সময় হলে সব জানতে পারবা। এখন তো চল।
সন্ধ্যা ৭.৩০
সবাই একসাথে বাসা থেকে বের হয়ে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছে। এমন সময় একটা বেবি ট্যাস্কি এসে পরল। সবাই মিলে ট্যাস্কিতে উঠে রওনা দিল।
২০ মিনিট যাওয়ার পর রেস্টুরেন্টে গিয়ে পৌছাল সবাই। আন্টি মায়ের হাত ধরে হাঁটতে লাগল।
মোহনার কাছে কেমন কেমন জানি মনে হল,,, সানি ভাইয়া কিভাবে জানি তাকাচ্ছে,,,ভ্রু দুটো একবার কুচকায় আবার একা একা কি জানি বিড়বিড় করতে থাকে। যেই মোহনা তাকায় সাথে সাথে সে অন্য দিকে তাকায়।
“- রেস্টুরেন্টের ভিতর প্রবেশ করে কর্নারের একটা টেবিল সিলেক্ট করে সেখানে বসল সবাই।
একটু পরেই ওয়েটার চলে আসে,,, স্যার টেবিলের উপর মেনু কার্ড দেখে অর্ডার করেন কি খাবেন।
- সানি মেনু কার্ডটা খুলে খাবারের নামগুলো পরতে থাকল,,, গ্রিল,, চিকেন রেজালা,, নান রুটি,, কোল্ড কফি, হট কফি, ফালুদা, শিক কাবাব,, তন্দুল রুটি,, লাচ্ছি,,, এক শ্বাসে সব পরা শেষ করে বলল,,, কি কি অর্ডার দিব বল।
- সানির মাঃ মোহনা তুমি বল কি অর্ডার করবে???
“- মোহনাঃ আন্টি গ্রিল আর নান রুটি।
“- সানিঃ ওয়েটার গ্রিল আর নান রুটি আনবে,,, সাথে কোল্ড লাচ্ছি।
৩০ মিনিট পর……
ওয়েটার সব খাবার টেবিলে পরিবেশন করল। একে একে সবাই খাওয়া শেষ করল।
” টেবিল ছেড়ে সানি বিল দিতে যায়।
সানির মাঃ আপু তোমাকে একটা কথা বলব,,,,
মোহনার মাঃ হা বল।
সানির মাঃ আমার সানি কে তোমার কেমন লাগে??
- মোহনার মাঃ সানি তো দেখতে।মাসআল্লাহ।
- সানির মাঃ তাহলে কথা দাও আমি যা বলব তুমি তা রাখবে???
“- মোহনার মাঃ হেঁসে বলল,,, হা কথা দিলাম,,, কি বলবি বল??
” সানির মাঃ আমার ইচ্ছা সানি আর মোহনার চার হাত এক করে দিতে। এখন আর কোন কথা শুনতে চাই না,, তুমি আমাকে মাএ ওয়াদা দিয়েছো।
“- মোহনাঃ আন্টির কথা শুনে হা,,,, হয়ে গেলো। কি শুনল এসব,,, সত্যি নাকি না স্বপ্ন??? না না সত্যি এটা। মা তো হাসান ভাইয়ের মা কে কথা দিয়েছে আবার বিয়ে ও পাকা করে ফেলেছে,,, এখন কি করবে মা…….😱😱😱😱
মা হতে পারিনি বলে( ডিভোর্স)
লেখাঃ ফারিয়া আলম মিম
পর্বঃ ৬
” মোহনার মা বোনের কথার শুনে হা হয়ে গেছিল।
” শিরিন তুই কি বললি এসব? সানি আর মোহনার বিয়ে কিভাবে কি সম্ভব এটা??
“- কেন আপা আমি কি কোন ভুল কিছু বললাম!
“- ই য়ে মানে!!
- কি মানে মানে করছো?? এটা তো খুব খুশির কথা তোমার মেয়ে আমার ঘরের বউ হয়ে গেলে সম্পর্কটা আরো মজবুত হবে।
“- তোকে আমার যে কিছু বলার ছিল??
“- যা বলবা সব বিয়ের পর বলবা,, এখন চল তো।
সানিঃ তোমরা কি এখানে বসে বসে আড্ডা দিবা??? বাসায় যাওয়া লাগবে না।
“- রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম।
২০ মিনিট অপেক্ষার পর অবশেষে একটা গাড়ি এসে দাড়াল আমাদের পাশে,,, একে একে সবাই গাড়িতে উঠলাম। গাড়ি চলতে লাগল নিরিবিলি রাতের রাস্তা দিয়ে,, কোন জ্যাম নাই।
রাত ১০ টা প্রায়….
মোহনার মাঃ শিরিন চল আমাদের বাসায়,, রাতে আমাদের বাসায় থাকবি।
“- মুচকি হাসি দিয়ে বলল,,,, আপু আজকে না,,, সময় তো আছে থাকার,,, তখন থাকব তোমার বাসায়। 😊😊
“সানি আর সানির মা চলে গেলো তাদের বাড়ির উদ্দেশ্যে।
মোহনা তাকিয়ে আছে তাদের পথের দিকে অবাক হয়ে! (মনে মনে ভাবছে) আরে ব্যাস কোথার জল এখন কোথায় গিয়ে গড়াবে।।।
মোহনা তার মায়ের হাত ধরে বাসার উদ্দেশ্য রওনা দিল। ঘরে গিয়ে দেখল দীপ ঘুমিয়ে পরছে।
মোহনাঃ মা,,, দীপের কথা তো ভুলেই গিয়েছিলাম,,,,,লক্ষী ভাইটা আমার হয়তো না খেয়েই ঘুমিয়ে পরেছে।
|
ঘরের ভিতর ঢুকে মোহনা জামা কাপড় চেইন্জ করল আগে,,,
অনেকটা ক্লান্ত লাগছে আজ,,, খাটের উপর বসে পা দুটো উঠিয়ে হাটু গেরে বসেছে। আন্টির কথাগুলো বার বার কানে বাজছে কি শুনল এসব??? আর একা একা নিজেই হাসছে,,,,তাহলে ওটা কি তবে জন্মদিনের উপহার। ভাবতে ভাবতে বালিশের উপর মাথাটা এলিয়ে দিয়ে চোখঁ বুঝে শুয়ে পরল।
মিনিট দশেক পরে….
মোহনা শুনতে পেল মায়ের সাথে কারো কথার কাটাকাটি হচ্ছে। ঘুমের তন্দ্রা কাটিয়ে বিছানার উপর উঠে বসল মোহনা। লাফিয়ে উঠেই দৌড়ে গেল সামনের রুমে। কি হয়েছে দেখার জন্য??? সামনের রুমে গিয়ে তো মোহনা থ…..হয়ে দাড়িয়ে যায়। কি দেখছে এসব????
“- হাসান ভাইয়ের মা কান্না করছে??? 😭😭😭
চুপ করে দরজার এক পাশে দাড়িয়ে থাকে মোহনা।
হাসানের মাঃ দুই দিন বাদেই বিয়ে,, সব আত্নীয় স্বজন সবাইকেই দাওয়ার দেওয়া হয়ে গেছে,,, আর আপনি এই মুর্হুতে বলছেন,, এই বিয়ে সম্ভব না?? কি দোষ করেছি আমি আর আমার ছেলে??? আমাদের টাকা পয়সা কম এটাই কি আমাদের অপরাধ???
“-মোহনার মাঃ আপনি আমাকে ভুল বুঝছেন। আমি তো রাজি আছি,,, তবে সমস্যা হল অন্য কোথায়???
- হাসানের মাঃ কি সমস্যা আমাকে বলুন,, দেখি আমি সমাধান করতে পারি কি না????
“- মোহনার মাঃ আসলে আমার বোন তার ছেলের সাথে আমার মেয়ের বিয়ের প্রস্তাব রাখছে। নিজের বোন বলে কথা,,, অন্যথায় সম্পর্কের অবনতি হবে।
“- ওহহ এই ব্যাপার??? এতখনে বুঝতে পারলাম আপনি লোভে পরেছেন??? ছিঃ মানুষ যে কত খারাপ হতে পারে আপনাকে না দেখলে বুঝতাম না।। জাই হোক,,, তবে একটা কথা মনে রাখবেন,,, যে সুখ কিনতে আমার ছেলের প্রস্তাবটা ফিরিয়ে দিলেন,,, সেই সুখ যদি কপালে না সয়। আল্লাহকে ভয় করেন আর মনে প্রানে বিশ্বাস করেন?? এই দুনিয়া হল দুইদিনের জন্য তাই এখানে অহংকার করে কি হবে??? পরকালে ও একটা দুনিয়া আছে এটা মনে রাখতে হবে সবাইকে।
“- আল্লাহকে বিশ্বাস কেনো করব না,,, কি বলেন এসব????
- আমার কাছে মনে হচ্ছে না,, কারন সর্বপ্রথম আমার ছেলের সাথে বিয়ের কথাটা কিন্তুু আপনি পাকা করেছেন আর আজকে যেই না টাকা ওয়ালা পাএ পেলেন ওমনি আমাদের রিজেক্ট করে দিয়ে সেখানে রাজি হয়ে গেলেন।
- দুই হাত জোড় করে বলল প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দিন,,, আমি আমার কথা ফিরিয়ে নিলাম।
- হাসান ভাইয়ের মা আমার দিকে করুন চোঁখে কিছুখন তাকিয়ে থেকে বলল,, বড় আশা করেছিলাম,,, আমার ছেলের বউ করে তোকে আমার ঘরে নিব কিন্তুু আল্লাহর বোধহয় এই বিয়েতে ইচ্ছা তাই। যার কারনে বিয়েটা ভেঙ্গে গেছে।
দোয়া করি তুই সুখে থাক সব সময় বলেই আন্টি কাঁদতে কাঁদতে চলে গেলেন।
“- মা এসে মোহনার গলা জড়িয়ে ধরে হেস্কি দিয়া কান্না করতে লাগল,,, আমি কি ঠিক কাজ করলাম না ভুল কিছুই তো বুঝতে পারছি না। মাকে সান্তনা দিয়ে মোহনা বলল তুমি কোন চিন্তা করো না,, আল্লাহ তো আছেন তিনি যেটা ভাল হবে তাই করবেন।
“মাকে তার রুমের ভিতর শুইয়ে দিয়ে নিজের রুমে গিয়ে শুয়ে পরল মোহনা।
চিন্তা করতে করতে কখন জানি দুচোঁখে পাতা এক হয়ে ঘুমিয়ে পরে। সকালবেলা মায়ের ডাকে ঘুম ভাঙ্গে মোহনার। তাড়াতাড়ি উঠেই
ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে প্রায় ৭ টা বাজে। এই রে আজকে তো নামাজ পরা হয়নি,,, ধুর ছাই কি যে হয়েছে আজকে,, বুঝতেই পারলাম না। নিজের মাথার চুল নিজেই টানতে লাগল মোহনা।
বাথরুমে গিয়ে দাত ব্রাশ করতে করতে মা কে বলল,, আজকে সকালের নাস্তায় কি তৈরি করেছো মা???
- রুটি,, ভাজি,, চা,, তোর জন্য ডিমের ওমলোট।
- ওয়াও,,, ওমলেট😜
- হাত মুখ ধুয়ে ওযু করে কাযা করে ফজরের নামাজ আদায় করল। আস্তে আস্তে মা টেবিলে নাস্তা রেখে ডাক দিল,,, সামনে আয় তো নাস্তা খেতে।
” আসছি মা।
“নাস্তার টেবিলের কাছে এসে দেখি মায়ের মুখটা মলিন হয়ে আছে,,, চোঁখ দুটো পানিতে ছলছল করছে।
আমার উপস্থিতি টের পেয়ে মা রান্না ঘরের দিকে চলে যায়,, মোহনাও ঢেব ঢেব করে তাকিয়ে থাকে।
” দ্বীপ চুল আচঁরাতে আচঁরাতে সামনে এসেই খাবার টেবিলে বসে পরে। তুই এখানে বসলি কেন??? যা ওদিকটায় গিয়ে তোর চুল আচঁররা।
” আমি এখানেই আচঁরাবো।
“- এই শোন যদি একটা চুল ও পাই তাহলে……তোর….একদিন কি আমার একদিন। আঙ্গুল ঝাঁকাতে ঝাঁকাতে বলল মোহনা। 😡😡
- ভয়ে কুকরাতে কুকরাতে দ্বীপ টেবিল থেকে যাওয়ার জন্য পা বাড়ায়…..হাতটা ধরে টেনেই কোলের ভিতর নিয়ে দুই গালে দুটো চুমো দিয়ে বলল,,,, লক্ষী ভাই আমার রাগ করিস না,,,,তুই ছাড়া কে আছে আমার….???
তুই তো একদিন পর হয়ে যাবি
মা হতে পারিনি বলে( ডিভোর্স)
পর্বঃ ৭
লেখাঃ ফারিয়া আলম মিম
” ছোট ভাই দীপের মুখে কথাটা শুনে হতভম্ব হয়ে যায় মোহনা। দীপের ভুল ভাঙ্গানোর জন্য বলল,, শোন বিয়ে হলেই কি ভাই বোনের রক্তের সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়??? কখনই না,, ভাই বোনের সম্পর্কের মত এত মধুর সম্পর্ক পৃথিবীতে আছে কি না আমার জানা নাই।
” বোনের মুখে কথাগুলো শুনে দীপের মুখ হাসি ফুটে উঠল,, মোহনাকে জড়িয়ে ধরে বলল,, আপু সত্যি তুমি অনেক ভাল।
“- কি হচ্ছে ভাই- বোনের ভিতর!” হাসতে হাসতে মোহনার মা বলল😊
-” চোঁখ মুছতে মুছতে,,, কাঁদো কাঁদো স্বরে উওরে বলল,, কিছু হয়নি মা,, এমনি আমরা কথা বলছিলাম।
“- আচ্ছা।
কথা বলার মাঝেই দরজা নক করার আওয়াজ,,,,
- মোহনা বসা থেকে উঠেই দরজাটা খুলে দিল।
- সানির মা: কেমন আছো তুমি??
- মোহনাঃ আলহামদুলিল্লাহ,, “আপনি?
“- জ্বি,, আলহামদুলিল্লাহ। আপু বাসায় আছে??
“- হ্যাঁ।
আমি সাইড করে দাড়ালে আন্টি ঘরের ভিতর ঢুকে মা কে জড়িয়ে ধরে বলল, আপা কেমন আছো??
“- আলহামদুলিল্লাহ,, তুই কেমন আছিস??
“- আমি ও ভাল আছি। আপা চলেন আপনার সাথে আমার কিছু কথা ছিল।
- বল।
- এখানে না,, বাহিরে চলেন।
- চল।
মা কে সাথে নিয়ে আন্টি উঠানের এক কোণেতে গিয়ে দুজনে অনেকখন কি নিয়ে জানি কথা বলছে। আস্তে আস্তে মোহনা নিজের রুমে গিয়ে চুপটি করে বসে রইল। দীর্ঘ সময় কথা বলে দুজনে হাসতে হাসতে ঘরের ভিতর ঢুকল। হাসির শব্দ শুনে সামনে গিয়ে দেখলাম দুজনে দুজনের হাত ধরে বসে আছে।
আমার উপস্থিতি টের পেয়ে আন্টি বলল,,, মোহনা এ দিকটায় আয় তো। আস্তে আস্তে পা বাড়িয়ে আন্টির পাশে গিয়ে দাড়ালাম।
“-তুই কি রংয়ের শাড়ি পছন্দ করিস???
“- কথাটা শুনে হা….. হয়ে বললাম,,, শাড়ি…😰😰😰
-” হুম,, বিয়ের কেনাকাটা করব তো তাই,, তোর কি রং পছন্দ সেটা জিজ্ঞাস করলাম,, এই আর কি।
“- ই য়ে মানে,, আন্টি! আমি তো শাড়ি কখন ও পরিনি তাই বুঝতে পারছি না কি বলব আপনাকে??
- ওহহ। তাই তো। ঠিক আছে বলা লাগবে না। কাল কে সানি এসে তোকে সাথে করে মার্কেট করতে নিয়ে যাবে তখন তোর পছন্দ মত কিনে নিস।
“- না আন্টি কি দরকার এসবের!! আমার নিজের যাওয়া লাগবে কেন?? আপনি আপনার মত পছন্দ করে কিনেন।
“- না। ডিশিশন ফাইলাম,, তুই যাচ্ছিস এটাই,, আমার শেষ কথা। আমি আর কোন অজুহাত শুনতে চাই না। 😒😒
- আপনারা কথা বলেন আমি একটু আসতেছি। (মোহনা)
“- মোহনা যাচ্ছে আর বিড়বিড় করে বলছে,, কি আমার চেহারা নাম রাখছে পেয়ার😒😒 যেমন ছেলে তেমনি তার মা।😁😁😁
ছেলেটার কি ভাব,,, সেদিন রেস্টুরেন্টে গেলাম একবারের জন্য ও কথা বলেনি??? কথা বলা তো দুরে থাক আমার দিকে তাকায় নি পর্যন্ত। 😒
- এত সুন্দরী মেয়েকে দেখে ও কেউ তাকায় না এটা তো চোঁরের লক্ষন ছারা আর কিছু না। শুনেছি যাদের মনের ভিতরে দুষ্ট বুদ্ধি তারাই সাধু সাজে। মা ও না যে কেমন বুঝিনা,,, ভাবওয়ালা ছেলের সাথে হুট করেই বিয়ে ঠিক করে ফেলেছে😰😰
কালকে উনার সাথে আবার একএে মার্কেট করব কিভাবে??
এটা ভাবতেই কান্না পাচ্ছে😭😭
যাক বাবা বড়রা বুঝবে এত বুঝার দরকার নাই আমার।
কিছুক্ষণ পরেই মায়ের ডাক,,, মোহনা খেতে আয়।
- আসছি মা।
মা আন্টি কি চলে গেছেন?? হ্যাঁ মাএ গেলো। কালকে বিকাল ৫ টায় সানি আসবে তোকে পিক আপ করতে। তুই আগে থেকেই রেডি হয়ে থাকিস।
“-মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ সম্বোধন জবাব দিয়ে ঘরে চলে যায় মোহনা।
“- দুপুরে তাড়াতাড়ি লান্স করে সাথে দীপকে ও খাইয়ে দিল মোহনা।
“- কি রে তোর এত তারাতারি খাওয়া শেষ???
“- হুম।
- কি খাইলি এর ভিতরে??
“- খেলাম তো মা। - হুম।
মায়ের সাথে কথা শেষ করে দীপকে রেডি করিয়ে কোর্চিংয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিল মোহনা।
“- হাঁটতে হাঁটতে দীপ মোহনাকে বলল, আপু,,, তোমার কি সানি ভাইয়ের সাথে বিয়ে???
- ছোট ভাইয়ের মুখে বিয়ের কথটা শুনে হতভম্ব হয়ে মোহনা আস্তে করে উওর দেয়,,, হুম।
“- আপু আমার মতে হাসান ভাইয়ের সাথে তোমার বিয়েটা হলে ভাল হতো। তার মত ছেলে হয় না।
“- দীপের কথাটা এড়িয়ে,,, শোন ভাই,, বাবা- মা সব সময়ই সন্তানের মঙ্গল চায় তাই তারা যেটা সিদ্ধান্ত নিবে তাতেই মঙ্গল হবে।
“-দীপ কথাগুলো শুনে কোন উওর দিল না।
দীপকে কোচিংয়ে ঢুকিয়ে দিয়ে বাসায় এসে মা কে জিজ্ঞাস করলাম মা,,, এখন কি রেডি হবো??
ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বলল,, ৩.৪৫ বাজে। যা গিয়ে রেডি হহহহ।
- মা কি পরব??
- তোর যেটা ভাল লাগে তাই পর।
- রুমের ভিতর গিয়ে আলমারি খুলে দাড়িয়ে ভাবছি কি পড়ে যাব???
অনেকগুলো কাপড় আউলা ঝাউলা করে বিছানার উপরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রেখে,, ফ্লোরে বসে পরল মোহনা।
ধ্যাত কোন ড্রেসই তো পছন্দ হচ্ছে না,,, কি পরে যাব এখন। 😱😱
খানিকা বাদে মা এসে উপস্থিত হয়ে চমকে উঠে বলল,,,কি রে তুই কি দোকানে কেনাকাটা করতে আসলি নাকি?? রুমটার তো ১২ টা বাজিয়ে দিলি এক্কেবারে।
- নিজের চুল নিজে টানছে আর বলছে কোন ড্রেসই আমার পছন্দ হচ্ছে না???😭😭 কি পরে যাব আমি??😰
“- এ ই রে,,, কি বলিস এসব??? এত ড্রেসের ভিতর তোর কোন ড্রেস পছন্দ হয় না😱😱
“- না মা।
“- তাহলে এক কাজ কর আমার শাড়ি পরে যা।
“-শাড়ি😰😰
“- হুম।
“- সত্যি!😱😱
“-তাড়াতাড়ি আমার সাথে এদিকে আয়,, ৪.২০ বেজে গেলো যে,,, সানির আসার সময় হয়ে গেছে।
মায়ের পিছু পিছু চলা শুরু করলাম,,
আলমারি খুলে নীল রংয়ের একটা বেনারসি শাড়ি বের হয়ে আমার হাতে দিয়ে বলল এই ধর এটা পরেই আজকে বের হবি তুই।
শাড়িটা হাতের ভিতর নিতেই খুব পছন্দ হয়ে গেলো সঙ্গে সঙ্গে মা কে প্রশ্ন করলাম,,,, মা,,, শাড়িটা কি তোমার???
“- মাথাটা নিচু করে মা বলল হ্যাঁ আমার।
“- ওহহ। কখন ও তো তোমায় শাড়িটা পরতে দেখিনি??? এত সুন্দর একটা শাড়ি এভাবে সাজিয়ে রেখেছো??
- কথাটা শুনেই মায়ের চোখঁ পানিতে ছলছল করছিল।😭
“- মা আমি কি বেশি বলে ফেললাম।
“- আসলে এই শাড়িটা তুই যখন জন্ম গ্রহন করছিলি তখন তোর বাবা আমাকে গিফট করেছিল। কারন হল,,, তাকে এত ভাল একটা উপহার দেওয়ার জন্য।
(মানে তোকে)😊😊
“-তাই শাড়িটা আমি কখন ও পড়িনি। সযত্নে তুলে রেখেছি। আজ উপযুক্ত সময় হল তাই তোকে পরার জন্য দিলাম।
২০ মিনিট পরে,,,
শাড়ির সাথে সব কিছু মেচিং করে রুম থেকে বেরিয়ে আসে মোহনা।
“- মাসআল্লাহ। আজকে তো তোকে দারুন লাগছে রে মা,, যে দেখবে সে আর চোঁখ ফিরাতে পারবে না।
“- লজ্জায় লাল হয়ে যায় মোহনা। কি যে বল মা,, আজকে আমাকে পেত্নীর মত লাগছে।😒😒
“- কি বলিস তুই এসব।
“-কথা বলতে বলতে হঠ্যাৎ দরজার সামনে মটরসাইকেল রাখার আওয়াজ আসল।
- এই রে সানি বোঁধ হয় এসে পরেছে😊😊
- মোহনার মা দরজার দিকে এগিয়ে যায়,, গিয়ে দেখল তার ধার নাই সঠিক।
“-সানিঃ আসসালমু আলাইকুম আন্টি।
“- মোহনার মাঃ ওয়ালাইকুম আসসালাম।
- সানিঃ মোহনা রেডি হয়েছে কি??
“- মোহনার মাঃ হুম,,, ওহহ রেডি। মোহনা এদিকে আয়,, সানি তোকে নিতে এসেছে।
“- জ্বি মা আসছি কথাটা বলেই বেরিয়ে আসে মোহনা। সামনে এসেই চোঁখ পরল সানির চোঁখের দিকে। সানি তার চোঁখ দুটো বড় বড় করে তাঁকিয়ে ছিল মোহনার দিকে। লজ্জায় একেবারে লজ্জাবতীর মত মাথা নিচু করে থাকল মোহনা।😉😉
মোটরসাইকেলের উপর বসে মোহনাকে ডাক দিয়ে বলল পিছনে বসেন। ভয়ে ভয়ে পিছনে গিয়ে বসল মোহনা। মাথাটা ঘুরিয়ে পিছনে তাকিয়ে সানি,,,,বলল,,, আমার কাঁধের উপর হাত দিয়ে বসেন না হলে পরে যেতে পারেন। আর যদি আপনার কিছু হয়ে যায় তাহলে সব দোষ অটোমেটিক আমার উপরে পরবে। আর যেটা আমি মানতে পারব না। ভয়ে ভয়ে সানির কাঁধের উপর হাত দিতে বসলাম। 😲😲
চলবে…….