ফেক ফেসবুক আইডি (সত্য গল্প) ১৪ পর্ব একসাথে-সাদিয়া রহমান

ফেক ফেসবুক আইডি Fake Facebook ID (real story)

গল্প- ফেক ফেসবুক আইডি (Fake Facebook ID)
গল্পের লেখক- সাদিয়া রহমান

পর্ব- ১ (ফেইক আইডি)

অরথি ফেসবুকে একটা ফেক আইডি খুলেছে। কারণ কেন যেন সে নিজেকে অপরিচিতদের সাথে ফেক পরিচয় এ থাকতে মনে ধরেছে।

যদি-ও ব্যাপার টা জাস্ট মজা করার জন্য। সে অনেক অপরিচিত আইডিতে রিকুয়েষ্ট পাঠাল। আর অনেকের সাথে চ্যাট করা ও শুরু করে দিল। নিজে কে ভিন্ন নামে আর ভিন্ন পরিচয়ে কেমন যেন মজা পেতে শুরু করল।এইভাবে সে নিজের আইডি থেকে ফেক আইডিতে বেশি সময় থাকতে শুরু করে।

একটা কথা বলে রাখার দরকার অরথি ছিল অসম্ভব সুন্দরী।

আর ওর বিএফ (BF মানে প্রেমিক) ও বুয়েট এ পড়ত। কিন্তু ওর বিএফ ছিল খুব কম কথার মানুষ। সময় দিত না। কথা ও বলত না তেমন।

তাই মেইনলি নিজেকে হাইড করে একটু ফান করার জন্য এই আইডি ওপেন করেছিল। ওর ইনটেনশন ছিল কয়েক মাস ইউস করে বন্ধ করে দিব। এই জন্য ফেসবুকে অরথির কোন ছবি ছিলনা। অনেকেই রিকুয়েস্ট করে কিন্তু অরথি কখনই দেয়নি।

ফেসবুক ফেক আইডি

কারণ অরথি জানত ছবি দেখলেই প্রপোস করবে আর এসব আজাইরা ঝামেলা। সে জাস্ট টাইম পাস করতে আসছে এখানে।

অনেক কনসারভেটিভ পরিবারের মেয়ে অরথি। ফেসবুক ওপেন করেছে ইন্টার সেকেন্ড ইয়ার (HSC) এ। আর এই ফেক আইডি ওপেন করেছে তার ১ বছর পর। এভাবেই চলতে থাকে অরথির লাইফ।

বিএফ এর সাথে খুব কম কথা হয়। আর দেখাও খুব হতো না। কিন্তু অরথি সবসময় ভাবত যে সময় এর সাথে সব ঠিক হবে।

ওর বিএফ কেও হা বলেছিল ওর বিএফ প্রপোজ করার ৩ দিন এর মধ্যে। মেইনলি ভালো জায়গায় পড়ে ছেলে টা। বাসা থেকে ও মেনে নিবে সেটা ভেবেই হা বলেছিল। ভেবেছিল আস্তে আস্তে সময় এর সাথে ভালোবেসে ফেলবে। হা বলে দেই।

আরেকটা কথা বলে রাখি অরথির বিএফ এর সাথে পরিচয় হয়েছিল ফেসবুকের মাধ্যমে। যাইহোক এবার আসি ওই ফেক আইডি তে যেখানে আজকাল অরথি খুব বেশি সময় দেয়।

অরথি ছোটকাল থেকেই আর্মি আর এয়ারফোর্স অফিসার দের উপর একবারে ফিদা ছিল। খুব পছন্দ করতো ওদের। মানে ক্রাশ ছিল আর কি।

একদিন একটা আইডি পিপল ইউ মে নো তে আসল। সে এয়ারফোর্স এ জব করে।

অরথির মনে হলো যাক এই ছেলের সাথে পরিচয় হলে এয়ারফোর্স এর ব্যাপার এ অনেক কিছু জানা যাবে।

অনেক কৌতুহল ছিল ডিফেন্স নিয়ে ছোট থেকেই ওর।তাই ওই আইডিতে রিকুয়েষ্ট পাঠায়…
এক্সেপ্টও করে ছেলে টা কিন্তু অরথি কেন যেন লজ্জা পেয়ে নক দেয়নি। ২ দিন পর হঠাত ছেলে টা হায় (Hi) লিখে মেসেজ পাঠায় , অরথি দেখে তো শকড।

পর্ব- ২

(ফেক ফেসবুক আইডি ২য় পর্ব পড়ুন)

সেই এয়ারফোর্স এর ছেলেটির নাম শুভ্র। সে অরথি কে হাই লিখে মেসেজ পাঠায়। অরথি ও হ্যালো লিখে তবে একটু ভয়ে। কেন যেন ভয় করছিল ওর। এর পর

শুভ্র :আপনি কি সত্যি মেয়ে?? নাকি ছেলে হয়ে মেয়ে সেজে রিকুয়েষ্ট পাঠায়সেন?
অরথি : কি মনে হচ্ছে আপনার??
শুত্রঃ ছবি নাই কোন!! আর প্রোফাইলের নাম ও কেমন একটা অদ্ভুত
অরথিঃ হুম তো?? বিলিভ না হইলে আমাকে রিমুভ করে দেন।
শুভ্রঃ ওকে বিলিভ করলাম। কি করেন আপনি?
অরথিঃ পড়ালেখা করি। আপনি?
শুভ্রঃ আমি রিকসা চালাই😋
অরথিঃ ভাল হইল একজন রিক্সার চালক এর সাথে পরিচয় হয়ে। আজকাল ওদের যে ভাব। এখন দরকার হলে আপনাকে বলা যাবে😋

শুভ্রঃ হাহাহা। ই নাকি?
অরথিঃ জি তাইইইই☺
এইভাবে ওদের অনেক মজার কথা চলতে থাকে।একদিন শুভ্র বলে

শুভ্রঃ আপনার নাম্বারটি দেয়া যাবে?
অরথিঃ নাম্বার দিয়ে কি করবেন?
শুভ্রঃ দেখতাম ফেক নাকি আপনি।
অরথিঃ ইসসসসস!!! হুমম বলসি তো জান ফেক আমি।

শুভ্রঃ আমার নাম্বার নিন তাহলে।
অরথিঃ আমি কারো নাম্বার নেই না। কাউকে কলও দেই না।
শুভ্রঃ ওকে মিস কল দিয়েন।
অরথিঃ রেগে গিয়ে বলে জি নাহহহ😡😡

শুভ্রঃ তাহলে আপনি ফেক।
অরথিঃ ভাবুন তাও কল দিব না।

অরথি মেয়ে হিসাবে সুন্দরী হলেও অনেক ভদ্রও।ছোটকাল থেকে অনেক প্রেমের প্রপোজাল পেয়েছে। কিন্তু কাউকে পাত্তা দেয়নি। বুয়েট এর ছেলে কে ইন্টার ফাস্ট ইয়ার এ কেমন করে হঠাৎ হা বলে দেয়।

অহহহহ অই বুয়েট এর ছেলের নাম তো বলা হইনি!! অর নাম রিফাত। কিন্তু এখন অরথি বেশি টাইম শুভ্র সাথে চাট করে পার করে।একদিন শুভ্র বলে তুমি তো আমাকে কল দিলা না?

অরথিঃ দেখেন আমি কল দিতে পারব না।
শুভ্র : আমরা বন্ধু তাও প্রব্লেম??
অরথিঃ আমরা বন্ধু?? কবে হইলাম? নিজেই জানি না
শুভ্রঃ এখন তো জানলা।

অরথি নাম্বার এর দিকে তাকায়। আর চিন্তা করে আমার বন্ধ এয়ারটেল নাম্বার অন করে একদিন কল দেয়া যেতে পারে।

এইভাবে ওদের অনেক মজার কথা হত। আর শুভ্র সব সময় ওদের এয়ারফোর্স এর অনেক গল্প করত কারন অরথি খুব পছন্দ করত এসব শুনতে।

একদিন বিকালে অরথি ভাবলো দেখি কল করে ছেলের ভয়েস টা কেমন।এই ভেবে ওর বন্ধ এয়ারটেল নাম্বার টা ওর পুরাতন একটা মোবাইলে অন করল অ্যান্ড কল করল।রিং বাজতেই একটা ছেলে ধরে বলল হেলো?

পর্ব- ৩ (ফেক ফেসবুক আইডি)

(ফেক ফেসবুক আইডি ৩য় পর্ব পড়ুন)

ফোন ধরে শুভ্র বলল কে আপনি?
অরথিঃ চিনতে পারেন নি?
শুভ্র ঃ না
অরথিঃ সেই ফেক আইডি।
শুভ্র ঃ সত্যি আপনি? বিলিভ করতে পারছি না
অরথিঃ জি আমি। কেমন আছেন?
শুভ্র ঃআলহামদুলিল্লাহ। আপনি?

অরথিঃ আমিও আলহামদুলিল্লাহ 😄😄কি করছেন??
শুভ্র ঃ আম্মুর সাথে আছি ত।একটু পরে কল করি আপনাকে?
অরথি: না থাক। আর কল করতে হবে না।আমি নাম্বারটি বন্ধ করে দিব।

শুভ্র ঃ এমন কিছু করবেন না প্লিজ 😥আমরা ত বন্ধু? কথা কি বলতে পারি না?
অরথির ভয়স ছিল অসম্ভব সুন্দর। যে কেও পাগল হয়ে যায়। আর দেখতে ত মাশাল্লাহ অসম্ভব সুন্দরি।ওর ভয়স শুনে শুভ্রর খুব পছন্দ হয়ে যায়।

অরথিঃআমি রাখছি।
শুভ্র ঃপ্লিজ ফোন বন্ধ করে দিও না। 2 মিনিট পর কল করছি।
অরথিঃ আজিব ত আপনি?
শুভ্র ঃপ্লিস৷ প্লিস প্লিস।
অরথিঃ উফফফ ওকে। অন রাখছি।তারাতারি কল করেন।

শুভ্র ঃধন্যবাদ😃😃
অরথি ভাবতে ভাবতেই রিফাত এর ফোন এল
রিফাতঃ কি কর তুমি?
অরথিঃ এইত তেমন কিছু না। তুমি?
রিফাত: এইত এক ভাই এর সাথে কথা বলি।
অরথিঃ অকে বল।

রিফাতঃ ভারসিটি তে জা ও নি?
অরথি: না। ভাল লাগছিল না
রিফাত : ওকে রেস্ট নাও
অরথি:ওকে

এইদিক এ আরেক ফোন এ শুভ্র ফোন দিয়ে যায়
অরথি কি করবে বুজতে পারছেনা। তারপর ভাবল আরে বন্ধুর সাথে কথা বললে ত প্রব্লেম হবার কথা না।আমরা ত বন্ধু। এই ভেবে ফোন ধরে বলে হেলো!

পর্ব- ৪ (ফেইক ফেসবুক আইডি)

(ফেক ফেসবুক আইডি ৪র্থ পর্ব পড়ুন)

ফোন ধরে অরথি বলল বলেন কি বলবেন

শুভ্র ্আপনার ভইস অনেক সুন্দর। আপনি দেখতে ও মে বি অনেক সুন্দরি

অরথি: জি না।
আমি সুন্দরী না।আমি কালো আর দেখতে তেমন ভাল না। তাও একটা মুভি করার জন্য অফার পেয়েছিলাম

শুভ্র : দেখেছেন আমার ধারণা ভুল না।আসলেই আপনি সুন্দরী না হইলে কেউ মুভি করার অফার পায়?

অরথি: আরেএএএএএ শুনবেন তো আগে কিসের মুভি ছিল।

শুভ্র : কিসের?

অরথি: ভুত এর।😃😃বলেছিল আলাদা মেকাপ দিতে হবে না। রিয়েল ফেস এ চলবে।🤣🤣

শুভ্র : আপনি!!!!!!!!!!! ” মানে তুমি 🐷🐷

অরথিঃ হা হা হা । সব সত্যি বললাম তাও বিলিভ করেন না

শুভ্র : মাইর চিনো?

অরথি: দিতে ও পারি খাবেন?

শুভ্র : হুম রাজি।বল কখন দিবা?

অরথি: আজিব আপনি।ওকে রাখি

শুভ্র :কেন?

অরথি: আম্মু ডাকছে

শুভ্র : ওকে পরে কল দিও

অরথি: হুহ কাজ ত নাই আমার। বাই

শুভ্র মন খারাপ করে বাই দিল।

অরথি রাত এ আবার দেখে শুভ্র ফোন করেছে। এইদিকে রিফাত ও। রিফাত এর ফোন ধরে বলে আমি ঘুমায় পরলাম ভাল লাগছেনা

রিফাত বলে : ওকে। বেশি কথা বলত না রিফাত।চুপচাপ টাইপ।

আবার অরথি দেখল শুভ্র কল করছে।ভালই লাগছে ছেলেটার সাথে কথা বলতে অরথি ভাবল।

বাট ভাবতে লাগলো এত কথা বলা ঠিক না।আবার ঝামেলা হতে পারে।তাই আর কল ধরলোনা।

তারপর পরের দিন আবার ফোন করল শুভ্র ।

অরথি ভাবল আরে 2 দিন পর ফোন বন্ধ করে দিব। এখন কথা বলি এই ভেবে কথা শুরু করে দিল।

শুভ্র অরথির পরিবার সম্পর্কে জানতে চাইলে অরথি সব মিথ্যা কথা বলল। কারণ ও চাইনি কেও ওকে খুজে পাক। ভার্সিটি নাম ও মিথ্যা বলল। অকে যেন না খুজে পায় এই জন্য।

অনেক কথা হল।অরথি সব মিথ্যা বলে অস্থিরতার মধ্যে ফোন বন্ধ করে দেয়।
ভাবে ধুর কথা বলতে ভয়ই লাগছে।
ছেলে টা সব সত্যিই বলছে আর আমি?

কেমন মায়া কাজ করে অরথির মনে তাই আর মিথ্যা না বলে ফোন বন্ধ করে দেয়। ২ দিন ফোন অন করে নি।প্রতিদিন একবার রিফাত এর সাথে কথা হয় অরথির। ২ দিন পর ভাবল দেখি ফোন অন করে। ফোন অন করে দেখে অরথি অবাক।

পর্ব- ৫

(ফেক ফেসবুক আইডি ৫ম পর্ব পড়ুন)

অরথি ফোন অন করে দেখে শুভ্র ওকে 10 টা মেসেজ পাঠিয়েছে। মেসেজ পরতে পরতে দেখে শুভ্র ফোন করেছে। মেসেজ সেন্ট রিপোর্ট পেয়ে। অরথি ফোন ধরে কিছু বলার আগেই শুভ্র ওকে বলে…

শুভ্র : এমন করা কি খুব দরকার ছিল?
অরথি: দেখেন আসলে আমি!!
শুভ্র : মানুষ এত নিষঠুর হয়??
অরথি: আজিব আপনি! আপনি এতো মেসেজ কেন পাঠিয়েছেন?

শুভ্র : ফেসবুক এও কেন আসনি?
অরথি: আমি আসলে কি হবে? আর আমি আসতে বাধ্য না
শুভ্র : বাধ্য তুমি
অরথিঃ মাথা ঠিক আছে আপনার?????? রেগে বলল অরথি।
শুভ্র : আমরা ত বন্ধু? তুমি এমন কেন করছো? আমি কি কোন খারাপ বিহেভ করেছি? অথবা কষ্ট দিয়েছি?

মনের অজান্তেই দিয়ে থাকলে মাফ করে দিও। বাট দয়া করে এমন করোনা আমার সাথে। অরথির খুব খারাপ লাগলো। ভাবল আসলে এমন করা উচিত হইনি।

অরথি বলল আসলে আমি সরি😒আপনাকে বলে ফোন বন্ধ করা উচিত ছিল।
শুভ্র :আবার?? আবারও বন্ধ করতে চাও?
অরথি: আমি এই নাম্বার ইউস করি না
শুভ্র : আমি কি তোমার ওই নাম্বারটি জানতে পারি?
অরথি: একটা কথা বলি? আমি কখনো এভাবে অপরিচিত কারো সাথে কথা বলি না। তারপর ও আপনার সাথে বলসি ৩ দিন । বাট আর না।

সত্যিতে ও অরথি আসলে খুব ভালো আর ভদ্র মেয়ে।

শুভ্র : একটা বন্ধু হলে প্রব্লেম কি? আচ্ছা তুমি এই নাম্বার আর কিছু দিন খোলা রাখ। আমাকে যদি তারপরও খারাপ মনে হয় তাহলে জা খুশি করবা। আমি কিছুই বলবোনা।

অরথি: আমি খারাপ তো বলি নাই। আচ্ছা আমি বন্ধ করছিনা ফোন।
অরথি ভাবতে লাগলো কি ঝামেলা তে পরলাম। এভাবে ছেলে টা কে কষট দিচ্ছি। ☹ কি বা এমন হবে বন্ধু হলে। আর ছেলে টা খুব বেশি ইমোসোনাল।
শুভ্র : প্রমিজ?

অরথি: প্রমিজ করতে পারছিনা। বাট চেষ্টা করব কিছু দিন ফোন অন রাখতে।

শুভ্র কেন যেন তাও শান্তি পাচ্ছেনা। যদি বন্ধ করে দেয়। এই মেয়ের কিছু বুজতে পারছি না। কেন যেন ভাল লেগে যাচেছ মেয়েটিকে।

অরথি: আচ্ছা রাখি? পরে কথা হবে
শুভ্র :মন খারাপ করে বলে ওকে।
এরপর অরথি ভারসিটিতে চলে গেল।
সন্ধ্যাবেলায় আবার শুভ্র কল করল।অরথি ফোন ধরল।

শুভ্র : কি কর?
অরথি: বসে আছি।ভারসিটি থেকে আসলাম।
শুভ্র : কি করলা ক্লাস এ?
অরথি: আর বলেন না। কুইজ এর অত্যাচারে জিবন শেষ। কিছুই পড়ে যায়নি। কাল মাথা বেথা ছিল তাই
শুভ্র : এখন কেমন? ওষুধ খেয়েছ?
অরথি: আরে তেমন কিছু না
শুভ্র ঃপ্লিজ ওষুধ খেয়ে নিও
অরথি: হা হা হা। ওকে বাবা খাব।

শুভ্র : তোমার হাসি টা খুব মিষ্টি
অরথি: ওইইইইই মাইর খাবেন??
শুভ্র : বলেছি ত খাব
অরথি: আপনি ইইইইইই।
শুভ্র ঃএই টান টা ও অনেক সুন্দর।
অরথিঃ উফফফফফফফফফ।রাখি আমি
শুভ্র : প্লিজ একটু কথা বলি?
অরথি: কাল বলব। আজ রাখি। বাই
শুভ্র :ওকে 😥😥

এবার রিফাত কে অরথি ফোন দিল।
অরথি:কি কর?
রিফাত : কাজ করছিলাম।যে জব টা করিনা ওটার কিছু কাজ।তুমি কি কর?
অরথি: কিছু না। ভারসিটিতে গেয়েছিলাম।
রিফাত। অকে।বাই।
অরথি: তোমার আমার জন্য টাইম ও নাই।😏😏একটু ও কেয়ার করোনা😏😏
রিফাত :আরে না সোনা।এখন রাখি।
অরথি: হুহ। বাই।
শুভ্র আবার কল দিয়েছে রাত এ। অরথি ইচ্ছা করেই ধরে নাই।

পরের দিন সকাল। শুভ্র আবার ফোন করল।
শুভ্র :গুড মর্নিং। ক্লাস এ জাবা না??
অরথি: হা জাব।5 মিনিট পর বের হব। আপনি অফিস এ??

শুভ্র ঃ জি।
অরথি: ওকে পরে কথা হবে।
শুভ্র: ওকে মেডাম জো হুকুম।
অরথি: হা হা। বাই স্যার।
শুভ্র : আজ আমি অফিস এর পর একদম ফ্রি জানো??

অরথি: হমম জানলাম এখন।নাও বাই।
শুভ্র : আরেএএএ এই মেয়ে??? উফফ ওকে বাই।
শুভ্র ভাবতে লাগলো মেয়েটার সাথে কেমন করে দেখা করা যায়!!! হঠাৎ ওর মাথায় একটা বুদ্ধি এল।

পর্ব- ৬

(ফেক ফেসবুক আইডি ৬ষ্ঠ পর্ব পড়ুন)

শুভ্র চিন্তা করল যে ওর কাছে সরাসরি একটা ছবি চাইবে। বিকালে অরথি বাসায় আসল ক্লাস থেকে। বাসায় এসে দেখে শুভ্র ফোন করেছিল।

অরথি সবসময়ই ওর জিপি নাম্বারটি যে ফোন এ থাকে সেই নাম্বারটি নিয়ে বাইরে যায়। এয়ারটেল নাম্বার টা নিয়ে বাইরে যায় না।বাসায় এসে অরথি ফোন করে শুভ্রকে।

অরথি: হেলো
শুভ্র : বাসায় এসেছ?
অরথি: জি এসেছি। আপনি ফোন দিয়েছেন দেখলাম।
শুভ্র : আমার কথা কে খেয়াল করে। এখন ও আমাকে তোমার রিয়েল নাম্বারটি দাও নি😐😐 তাই ক্লাস এ তুমি এই ফোন নিয়ে যাওনি জেনেও কল করলাম 😥😥কি করব বল!! হেল্পলেস😑😑

অরথি: ঢং করেন না?
শুভ্র : আল্লাহ!!!!!!!!!! তোমার কাছে বিচার দিলাম
অরথিঃ আল্লাহ আপনি বরদোয়া দিচ্ছেন??
শুভ্র : আরে আমি কি এমন কিছু কখনো করতে পারি??
অরথি: হা হা হা করতেও পারেন।

শুভ্র :হা হা।তাইই না!! আচ্ছা একটা কথা বলি?
অরথি: বলেন?
শুভ্র : তুমি ত আমাকে ফেসবুক এ দেখেছ।বাট আমি কিন্তু তোমাকে এখনও দেখিনি।

অরথির হঠাত মনে পরল ও এখনও শুভ্রর ছবি দেখেনি।আসলে ওর কখনো ছবি দেখার প্রতি ইচ্ছা হয়নি। অরথি বলল আমি আপনার ছবি এখন ও দেখিনি।

শুভ্র : মিথ্যা বলা ঠিক না
অরথি: সত্যি।।। বিলিভ মি।
শুভ্র : ওকে করলাম।এখন আমার ছবি তুমি দেখ আর তোমার একটা ছবি পাঠিয়ে দাও।

অরথি মেসেজ না দেখেই ছেলের প্রোফাইল এ গিয়ে ছবি দেখে আসে। দেখতে তেমন সুন্দর না ছেলে টা। অরথির ধারণা ছিল যারা ডিফেন্স এ জব করে তারা অনেক সুন্দর আর হেনসাম হয়।কিন্তু ছেলে টা একদম নরমাল।

এরপর মেসেজ দেখে অরথি বলে কেবলই দেখলাম আপনাকে। বাট সরি আমার ছবি দিতে পারব না।
শুভ্র : এইটা কেমন বিচার বল? একটা বন্ধু কে ছবি দেয়া যাবেনা??
অরথিঃ না।

শুভ্র খুব রিকুয়েষ্ট করতে থাকে। বলে ওকে ছবি না দিতে চাইলে একবার মিট করতে তো পারি??

অরথি: আপনি আসলেই পাগল।কেন এমন করছেন। আমি কিন্তু সত্যিই ফোন বন্ধ করে দিব।
শুভ্র : প্লিজ আর কখনো রিকুয়েষ্ট করব না।বন্ধু হিসাবে তুমি আমাকে দেখেছ। তাই একবার জাস্ট আমিও দেখতে চাই। যেখানে তুমি বলবা সেখানে গিয়ে দেখে আসব।

অরথি ভাবে কথা ঠিকই বলেছে। ধুর আমি যে কেন উনার ছবি দেখতে গেলাম। এখন তো আমাকেও দিতে হবে। আবার ভাবে ছবি দিলে ত আমাকে দেখতে পারবে। আর সবসময় চিনতে ও পারবে।এরচেয়ে একবার দেখা করলে বেশি দিন মনে রাখতে পারবে না।

অরথিঃ ওকে ডান।কালই মিট করতে পারবেন??
শুভ্র যেন আকাশ থেকে পরল।ও ভাবতেই পারে নি অরথি রাজি হবে।
শুভ্র : ইনসাল্লাহ পারব।কখন আর কোন জায়গা?

অরথিঃ মিরপুর এ। আপনিও এখানে বেরাতে এসেছেন। আর আমি এখনেই থাকি। কাল ১০ টায় মিরপুর ১ এ ব্রিজ এর কাছে থাকবেন। মিরপুরের ২ নাম্বারে বাসা অরথির।

সেটা ও সত্যি বলেনি অরথি শুভ্র কে। বলেছে মিরপুর ১০ এ বাসা আমার।
শুভ্র : ওকে তাহলে কাল দেখা হবে।বিলিভ করতে পারছি না
অরথিঃ ইনসাল্লাহ। ওকে রাখি।
শুভ্র ঃ ওকে।
বাট ভাবতে লাগলো ও আসবে না। এমনিতেই বলেছে।

বাট সত্যি বলতে অরথি এমন মেয়ে না যে দেখা করার কথা বলে আসবে না। যদি দেখা না করে তাহলে ও সেটা বলে দিত। আচ্ছা এবার আসি পরের দিন এ,

পরেরদিন সকালে অরথি ব্রিজ এর কাছে গিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ঠিক ১০ টার দিকে। অরথি দেখলনা শুভ্রকে। তাইনা অরথি ফোন করল শুভ্র কে।
শুভ্র : ঘুমের মধ্যে ফোন ধরে বলে হেলো?

পর্ব- ৭

(ফেক ফেসবুক আইডি ৭ম পর্ব পড়ুন)

অরথি বলে আপনি কোথায়?আমি ত খুঁজে পাচ্ছিনা আপনাকে।
শুভ্র :ঘুম থেকে লাফ দিয়ে উঠে বলে আপনি কোথায়?

অরথি ঃ ব্রিজ এর কাছেই। আপনি কি ঘুমিয়ে আছেন?? রেগে বলল অরথি. ওকে থাক। আমি চলে যাচ্ছি।
শুভ্র :আরেএ প্লিজ 5 মিনিট সময় দাও।আমি বুঝতে পারিনি। ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়ে গেছে। প্লিজ 5 মিনিট সময় দাও?
অরথি তো রেগে আগুন। তাও বলল ওকে জাস্ট 5 মিনিট।

শুভ্র বাসা ছিল কাছেই তাই কোন রকম একটা ড্রেস পরে বের হয়ে যায়। ১৫ মিনিট হয়ে গেছে। ফোন দিয়ে বলে অরথি বলে আমি চলে যাচ্ছি।

শুভ্র : আমি ব্রিজ এর কাছে মার্কেট এর সামনে ।কই তুমি?
অরথি: আমিও এইদিকেই দাঁড়িয়ে।
হঠাত দুই জনই এক সাথে দুইজনের দিকে তাকায়। বুঝতে পারে দুইজনই।তারপর এগিয়ে আসে দুইজনই।
অরথি বলে হুমম খুব ভালো ঘুম হয়েছে তাই না?
শুভ্র : আমাকে লজ্জা দিয়েন না।সামনাসামনি অরথিকে তুমি করে বলতে পারছিলোনা শুভ্র।

অরথি: হা হা হা। ওকে। কেমন আছেন?
শুভ্র ঃ আলহামদুলিল্লাহ। আপনি?
অরথিঃ হুহ এত ওয়েট করালেন।তারপরও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
শুভ্র ঃ আমি সত্যিই সরি।
অরথিঃ আচ্ছা প্রবলেম নাই।ওকে দেখা ত হলো। এখন যাই।
শুভ্র : আরেএ কোথাও বসি?? সামনে আছে একটা রেস্টুরেন্ট। রিক্সা নেই?
অরথি : না বাসায় যেতে হবে।
শুভ্র ঃ ৫ মিনিট প্লিজ।
অরথিঃ ওকে। সামনে এগিয়ে যদি রেস্টটুরেন্ট পায় ওখানে বসব।

শুভ্র : আমি কিন্তু ২ টা রিক্সা নিতাম। হা হা হা
অরথিঃ হা হা। সামনে যায়?
শুভ্র ঃ অবশ্যই।বাট ক্লিয়ার করলাম আর কি🤪🤪
দুইজন একটা রেসটুরেনট এ গিয়ে বসল
শুভ্র :আপনার দেশের বাসা কোথায়? রাজশাহি না?

আরথি: মে বি আপনি অন্য কারোর সাথে আমাকে গুলিয়ে ফেলেছেন 😅😅 পব্লেম নাই বুজতে পেরেছি। এমন হতেই পারে 🤪
শুভ্র ঃ আরে ভুল ত হতেই পারে। আপনি ও না!!আচ্ছা বলেন কি খাবেন?
আরথিঃ কিছু না।
শুভ্র ঃ কিছু ত খেতে হবে।
আরথিঃ ওকে কফি।
শুভ্র কফি দিতে বলল ২টা। আর দুইজন গল্প করতে থাকে খুব বেশি হলে ৩০ মিনিট।

আরথি বলে আমার যেতে হবে
শুভ্র ঃ এখানইইই???
আরথিঃ হুম। দেরি হয়ে গেছে।
শুভ্র ঃ ওকে চলেন। শুভ্র বিল পে করল।
আরথি বলল আমি করি?
শুভ্র ঃ অন্য কোন দিন।
আরথিঃ তখনই বলে যে অন্য দিন মানে?? মাইর খাবেন?
শুভ্র ঃ এগিয়ে এসে বলে মারতেই পারেন। রাইট আছে আপনার।
আরথিঃ লজ্জা পেয়ে বলে চলেন দেরি হয়ে যাচ্ছে। আকাশে এমনিতেই মেঘ দেখছি। আশচয’।!!!!

একটু আগে ও আকাশ পরিস্কার ছিল।এতো মেঘ এখন ভাবতে লাগলো আরথি আর শুভ্র।
বের হয়ে নিচে গিয়ে দেখে অনেক বৃষ্টি ।দুইজন একটা কোনা তে দাঁড়িয়ে থাকল।একটু কমতেই আরথি বলে আসি আমি।

শুভ্র ঃ আমি রিকশা ঠিক করে দিব?
আরথি ভাবে আল্লাহ মাথা খারাপ বাসা চিনে ফেলবে।
আরথিঃ না ধন্যবাদ। বাই।
শুভ্র ঃ বাই।টেক কেয়ার। বাসায় গিয়ে ফোন দিয়েন
আরথিঃ ওকে।

আরথি চলে গেল। বাট সত্যিই ভালো লেগেছে আজকের দিনটা। অনেক দিন পর এমন ভালো লেগেছে আরথির। আর শুভ্রর বাসায় এসে অরথি ফোন করে বলে বাসায় আসলাম। আপনি কোথায়?

শুভ্র ঃ আমি একটু বৃষ্টিতে ভিজতে বের হয়েছি।
আরথিঃ আজিব। জ্বর চলে আসলে??
শুভ্র ঃ আরেএএ একাডেমিতে ট্রেনিং এর সময়ে পচা পানিতে শীতের সকালে পানির মধ্যে ছুবানি দিতে হত। তখনই কিছু হইনি। আর এতো বৃষ্টির পানি।

অরথি ঃ তারপরও।
শুভ্র ঃ ওকে।বাসায় চলে যাচ্ছি।
অরথিঃ হেসে বলল বাই।
শুভ্র ঃ হা হা হা বাই।

সন্ধ্যা বেলা আবারও শুভ্র ফোন করেছে। অরথি দেখল রিফাতও ফোন করেছে। রিফাত এর ফোন ধরে কথা বলা শুরু করল।কিন্তু অস্থিরতা কাজ করছিল। কখন ফোন রাখবে।আর কখন শুভ্রকে কল বেক করবে

শুভ্র ফোন রিসিভ করতে না দেখে ভয় পেয়ে যায়। ভাবতে থাকে মনে হচ্ছে আর কল দিবে না। মেসেজ করতেই থাকে শুভ্র। কিছু সময় পর অরথি ফোন দেয়।
শুভ্র ঃ অস্থির হয়ে বলে হেলো অরথি?

পর্ব- ৮ (ফেক ফেসবুক আইডি গল্প)

(ফেক ফেসবুক আইডি ৮ম পর্ব পড়ুন)

এই প্রথম অরথির নাম ধরে শুভ্র ডাকলো। অরথির কেন যেন ভাল লাগল শুভ্রর কাছে ওর নাম শুনে।
শুভ্র ঃ কোথায় ছিলে তুমি? কত চিন্তা করছিলাম জানো?
অরথি ঃ সরি।একটা কাজ নিয়ে বেস্ত ছিলাম।
শুভ্র ঃ আর আমি কত কিছু ভেবে বসে আছি। ☹

অরথিঃ কি ভাবছিলেন? আর ফোন করব না?
শুভ্র ঃ তুমি মনের কথা জানা যায় এমন কিছু জাদু জানো?
অরথিঃ আমার কাছে একটা রাজকুমার আছে। প্রতিদিন রাতে ঘুমের মধ্যে আমাকে সব কথা বলে যায়।

শুভ্র ঃ ওহহহ তাইতো ভাবি এমন কেন হচ্ছে!!!
অরথিঃ কেমন??
শুভ্র ঃ প্রতিরাতে ঘুমের ঘোরে আমি যেন কার সাথে কথা বলি। এখন বুঝতে পারলাম তোমার সঙ্গে।
অরথি রেগে বলল আপনি ইইইইইইইই
শুভ্র ঃ হা হা হা। একটা কথা বলি?
অরথিঃ বলেন 🙄।
শুভ্র ঃ আপনি কিন্তু অনেক সুন্দরী।
অরথি লজ্জা পেয়ে যায়। বলে আম্মু ডাকছে এখন বাই বলে ফোন রেখে দেয়।
শুভ্র বুঝতে পারে অরথি লজ্জা পেয়েছে। মনে মনে হাসতে থাকে শুভ্র।
রাত এ আবার মেসেজ দিল শুভ্র।
শুভ্র ঃ ডিনার শেষ?
অরথিঃ না করব।আপনি?

শুভ্র ফোন করে বলল কেউ ত খোজও নেয় না

অরথিঃ হেসে বলল এইত নিলাম
শুভ্র ঃ সবসময় নিবা?
অরথি হঠাত ভাবল আমি এভাবে কেন কথা বলছি! উনার সাথে এতটা ক্লোস হওয়া ঠিক না !!
অরথিঃ আমি পারব না খবর নিতে।আমি বাধ্য না।
শুভ্র ঃমাঝে মধ্যে কি হয়ে যায় তোমার? মন খারাপ করে বলে শুভ্র ☹
অরথি ঃ জানিনা আচ্ছা রাখি।বাই

ফোন রেখে অরথি ভাবতে থাকে ছেলেটার সাথে খারাপ বিহেভ করা ঠিক হয়নি।তারপর আবার ভাবে কিন্তু আমি কি করব!! বেশি এক্সপেকটেশন করতে শুরু করেছে। বাট তাও এভাবে বলা ঠিক হয়নি। ও ত কিছুই জানেনা যে কেন আমি এমন করছি।সরি বলা উচিত ভেবে অরথি ফোন করল শুভ্র কে।

শুভ্র ঃ হেলো।
অরথিঃ শুভ্র আমি সরি।আসলে হঠাত রাগ হয়ে গিয়েছিল।
শুভ্র ঃ ইটয ওকে।রাইট আছে তোমার রাগ করার।একটা কথা আস্ক করতে পারি?
অরথিঃ বলেন।
শুভ্র ঃ তোমার কি কোন রিলেশন আছে?
অরথিঃ কেন? হঠাত এমন প্রস্ন? আপনার আছে?
শুভ্র ঃ ছিলো। এই বলে একদম চুপ হয়ে যায়।
অরথি বুঝতে পারে মন খারাপ হয়ে গেছে শুভ্রর । আর অনেক কষট পাচ্ছে।

অরথি বলে আরেএ আমি আপনার বন্ধু না?? আমি থাকতে অন্য কাউকে লাগে আপনার?? 🤪আমি একাই আপনার জন্য কাউকে খুঁজে বের করব।

শুভ্র ঃ কাউকে লাগবে না।তুমি আছ ত?
অরথি একটু চুপ থেকে বলে হুমম আছি বন্ধু হিসাবে।
শুভ্র সেদিন অনেক কিছু শেয়ার করল অরথির সাথে।
রাত 4 টা বাজে।

অরথি রাত হয়ে গেছে অনেক আল্লাহ। বুঝতেই পারিনি। কাল অফিস আছে না?
শুভ্র ঃহুম।সমস্যা নাই বল
অরথিঃ না অনেক দেরি হয়ে গেছে। বাই ঘুমান।
শুভ্র ঃ আজ সারারাত জেগে থাকতে ইচ্ছে করছে।
অরথিঃ মাইর দিব, যান ঘুমান।
শুভ্র ঃ ঘুমাতে পারি একটা শত্ আছে!
অরথিঃ কি?
শুভ্র ঃ আমাকে তুমি করে বলতে হবে😊
অরথি ঃ আমি ঘুমাই। আপনি বসে তারা গুনতে থাকেন।তুমি বলতে পারবনা।
শুভ্র ঃ ওকে ঘুমাও। আমার শরীরটাও ভালো লাগছেনা।তাও জেগেই থাকি☹☹☹
অরথিঃ আজিব।একটু আগে ও না ভালো ছিলেন??
শুভ্র ঃ তোমার চিন্তা করে কি হবে।যাও ঘুমিয়ে যাও।আমি আজ এভাবেই থাকব।
অরথিঃ উফফফফফফ।। আচ্ছা বলছি।জান ঘুমান
শুভ্র ঃ কই আমি কিছু শুনি নাই।
অরথিঃ উফফফফ। আপনি ইইইই।
ঘুমাও যাও।
শুভ্র ঃ উফফফফফফফফফ কি মিষ্টি😊😊

অরথিঃ লজ্জা পেয়ে রাখলাম আমি বলে ফোন রেখে দেয়।
শুভ্র ঃ হাসতে থাকে। তারপর ঘুমিয়ে যায়।

পরের দিন অরথি আবারও ক্লাস এ যায়। বাট ও মিস করে শুভ্র কে। ভাবতে থাকে ইসসস যদি ফোন নিয়ে আসতাম একটু কথা বলা যেত।😐😐 এই ফোন দিয়ে ত ফোন দেয়া যাবে না🥺
বিকেলে বাসায় এসে অরথি দেখল শুভ্র কল করেছে। মেসেজ ও পাঠিয়েছে।
অরথি কল ব্যাক করল
শুভ্র ঃ কখন আসলে?
অরথিঃ এইত মাত্র। লাঞ্চ হয়েছে?
শুভ্র ঃ হুম।তুমি করেছ?
অরথি ঃ করব।
শুভ্র ঃ এই মেয়ে যাও জলদি লাঞ্চ করে আমাকে ফোন দাও।
অরথিঃ জি স্যার।

ফোন রেখে লাঞ্চ করে নেয় অরথি।বাট কল করতে গিয়ে ভাবে নাহ এত কথা বলা ঠিক না।
শুভ্র ওয়েট করতে থাকে। 1 ঘন্টা পরে নিজেই কল ব্যাক করে বলল কি মেডাম?? লাঞ্চ করতে এত সময় লাগে?

অরথিঃ না অনেক আগে শেষ করেছি।
শুভ্র ঃ কল করনি যে?
অরথিঃ এমননিতেই।
শুভ্র ঃ অরথি?? মাঝেমধ্যে কি হয়ে যায় তোমার??
অরথি ঃ জানি না
শুভ্রর খুব খারাপ লাগে। ও বুঝতে পারে কেন ওর খারাপ লাগছে অরথির জন্য। ও বলে একটু পর কল করছি অরথি।
শুভ্র চিন্তা করে ওকে এবার ডিরেক্ট বলতে হবে।

অরথি ওয়েট করতে থাকে। 2 ঘন্টা পার হয়ে যায় শুভ্র কল করে না।বাধ্য হয়ে অরথি নিজেই কল করল। শুভ্র ফোন রিসিভ করছে না।
অরথি খুব অবাক হল।এমন কেন করছে!!
বার-বার কল করল কিন্তু ধরেনি শুভ্র।

অরথি অস্থির হয়ে যায়। কেন ধরে না ফোন শুভ্র।
হঠাত ও চিন্তা করে এমন ফিলিংস কখনো 1 বছরএ
রিফাত এর জন্য হয়নি।আর মাএ 10 দিন এ শুভ্রর জন্য এমন অস্থির কেন হচ্ছে ওর।বুঝতে পারে মেবি কোন ফিলিংস কাজ করছে।

অরথির মাথা খুব পেইন করতে শুরু করে।এমন ত হওয়ার কথা না।

এইদিকে রিফাত কল করে।অরথি বলে রিফাত আমি খুব সিক ফিল করছি।
রিফাত ঃ ওকে রেস্ট নাও। বাই
অরথি ভাবে এমন কেন রিফাত!!! একটু কি কেয়ার করতে পারেনা।!!!
অরথি ভাবে আজ কেন এমন মনে হচ্ছে!! আগেও ত রিফাত এমনি ছিল। তখন ত কিছুই মনে হয়নি।
অরথি ঃ নাহ আর কিছু চিন্তা করতে পারছি না।

রাত ঠিক 11 টা।

অরথি ঘুমের জন্য চেষ্টা করছে। ঘুম আসছে না ওর।হঠাৎ ফোন বেজে ওঠে।

পর্ব- ৯

(ফেক ফেসবুক আইডি ৯ম পর্ব পড়ুন)

ফোন এর কাছে গিয়ে দেখে শুভ্র ফোন করেছে। অরথি রিসিভ করে,
অরথিঃ প্রব্লেম কি আপনার? ফোন রিসিভ করেন না কেন?
শুভ্র ঃ আমি কি ফোন রিসিভ করতে বাধ্য?

অরথি এই কথা শুনে সক হয়ে যায়। অরথি বলে না আসলে আমি সরি।আমার ফোন দিয়া উচিত হয়নি। আচ্ছা রাখি। বাই।

শুভ্র ঃ 1 মিনিট?
অরথিঃ বলেন কি বলবেন?
শুভ্র ঃ যদি বলি আমি শুধু ফোন না সবকিছু তে তোমার জন্য বাধ্য হতে চাই?

অরথি অবাক হয়ে যায়।
অরথি বলে মানে কি?? কিছু বুঝতে পারলাম না!!
শুভ্র ঃ অরথি I think I am in love with you..Please accept me.

অরথি:সক হয়ে যায়। আপনি কি বলছেন আপনি জানেন??
শুভ্র ঃ প্রথম থেকেই ফিল করেছি।এমন সত্যিই আগে কখনো ফিল হয়নি। আমার আগে রিলেশন ছিল তোমাকে বলেছি। কিন্তু বিলিভ মি এই 10 দিন এ যা ফিল করছি কোনদিন ও কারো জন্য ফিল করিনি। এমন মনে হচ্ছে my life is impossible without your presence.

অরথি ভাবে আমার ও ত সেম ফিলিং কাজ করছে। কিন্তু কিছুতেই আমি রিফাতকে ধোকা দিতে পারব না।

অরথিঃ আমি সরি। আমার আপনার জন্য কোন ফিলিং কাজ করেনি।এইসব চিন্তা বাদ দিয়ে ঘুমাতে যান। আমি রাখছি।আমরা শুধু বন্ধু। আর কিছু না।

শুভ্র ঃ অরথি???
আমি তোমাকে 7 দিন সময় দিলাম। এরমধ্যে আমি তোমাকে কোন ফোন করব না। আমি ফোন বন্ধ করে রাখব আর ফেসবুক ও। 7 দিন পর ফোন অন করে জানতে চাইব।

অরথিঃ পাগলামি করেন না। আপনি ফোন বন্ধ করে রাখবেন কেন??আজিব ত।আর আমার আন্সার চেঞ্জ হবে না কখনো।

শুভ্রঃ বাই….. 7 দিন পর ফোন করব। বলে ফোন রেখে দেয়।

অরথি সাথে সাথে চেষ্টা করে দেখে ফোন বন্ধ।

অরথি : কি যে ঝামেলা তে পরলাম। তারপর ভাবতে থাকে যা খুশি করুক।আমার কি!
উফফফফ এমনিতেই মাথা পেইন করছে। আর পারছি না এসব নিতে!

অরথি ভাবতে থাকে, রাত 4 টা বেজে চলেছে। এরপর একটু ঘুমিয়ে গিয়েছিল অরথি।

সকালে ক্লাসে গেল। কিন্তু মনের মধ্যে শান্তি পাচ্ছে না।কিছুই ভালো লাগছে না ওর।
আজ অরথি ওর এয়ারটেল নাম্বার নিয়ে এসেছে ক্লাস এ। কিন্তু কি আর হল নিয়ে এসে 🙁 চেষ্টা করে দেখে ফোন বন্ধ। ফেসবুক এও নেই ছেলে টা।

এইভাবে 3 দিন চলে যায়।

অরথি ভাবতে থাকে আর চেষ্টা করে ফোন বন্ধ কি না!
কিন্তু ফোন সত্যিই অন করেনি শুভ্র।

হঠাত 3 দিন পর রাতে শুভ্র ফোন করেছে। অরথি ত রেগে অস্থির। তাও ফোন ধরে। কিছু বলার আগেই শুভ্র বলে তুমি কি ভাবছিলে আমার ব্যাপার নিয়ে?

অরথি চিন্তা করল রিফাত এর ব্যাপার এ সব বলে দিবে।
অরথিঃ শুভ্র আমি পারবনা। আপনাকে কিছু কথা বলতে চাই!

শুভ্র ঃ যা বলতে চাও আর 3 দিন চিন্তা করে বলো।
এখন কিছু শুনবোনা।এখন রাখছি।বাই।
অরথি কিছু বলার আগেই শুভ্র ফোন রেখে দেয়

শুভ্র চিন্তা করে আমার ধারণা ভুল হতে পারেনা।অরথিও আমাকে ভালোবাসে।কেন যেন মনে হয়।
অরথি ও বুঝতে পারে সত্যিই ও শুভ্রকে ভালোবেসে ফেলেছে। কিন্তু এমন কখনোই সম্ভব না।ও রিফাত কে ধোকা দেয়ার মতো মেয়ে না।

অরথি ভাবে সবচেয়ে ভালো হবে আমি ফোন আর ফেসবুক দুইটাই বন্ধ করে দিব। আর এইসব ফেক আইডি চালাবো না।

কিছু দিন আগে যেটা মজা করার জন্য ওপেন করেছিল আজ এই আইডি যে এতটা পেরা দিবে অরথি বুজতে পারেনি।
অরথি ফোন আর আইডি সব বন্ধ করে দিল।কিন্তু ওর মন খুব খারাপ। কিছুতেই শুভ্রকে ভুলতে পারছেনা।তারপর ও শক্ত হয়ে ভাবে না আমি রিফাত কে ধোকা দিব না।
3 দিন পর শুভ্র অরথিকে ফোন দিয়ে দেখে ফোন বন্ধ। শুভ্রর মাথা খারাপ হয়ে যায়। বারবার চেষ্টা করে কিন্তু ফোন বন্ধ।
শুভ্র অনেক রেগে যায়।ও ভাবতে থাকে ওর যদি আমাকে ভালো না লাগে তাহলে ডিরেক্টর বলতে পারতো। এভাবে সবকিছু বন্ধ কেন করল।এখন ওকে খুজে বের করবই আমি যেভাবেই হোক।

2 দিন পর ও যখন ফোন বন্ধ দেখল তখন শুভ্র ওর একটা বন্ধু কে ফোন করে বলে দোস্ত একটা উপকার করতে হবে। ওর বন্ধু এয়ারটেল অফিস এ জব করে।
শুভ্র ঃ দোস্ত অনেক প্রব্লেম এ আছি।একটা নাম্বার দিচ্ছি,তুই আমাকে ওই নাম্বারটার এফ এন এফ লিস্ট দিতে পারবি??
বন্ধু ঃ ওকে দোস্ত প্রব্লেম নাই। কিন্তু কি হয়েছে?
শুভ্র ঃ একটা মেয়ে কে খুজতে।
বন্ধু ঃ হা হা হা। ওকে রাতের মধ্যেই পেয়ে যাবি।।
শুভ্র ঃ থেনক্স দোস্ত।
বন্ধু ঃ ব্যাপার কি সিরিয়াস??
শুভ্র ঃ খুব বেশি ভালো লেগেছে। ওকে খুজতেই হবে।
বন্ধুঃ কিন্তু এফ এন এফ নাম্বার নিয়ে কি করবি?
শুভ্র ঃ ওর এফ এন এফ লিস্ট এর বন্ধুদের থেকে ওর আসল নাম্বার বের করব।
বন্ধু ঃ এই জন্য বলে ডিফেন্স এর মানুষের বুদ্ধি বেশি।
শুভ্র ঃ ফাজলামি বাদ দিয়ে আমাকে ইনবক্স কর এফ এন এফ লিস্ট।
বন্ধু ঃ ওকে পেয়ে গেছি। দেখ সেনট করেছি।
শুভ্র ঃ ওকে থেনক্স দোস্ত। বাই।
বন্ধু ঃ আমাকে জানাস। কি অবস্থা!
শুভ্র ঃ ওকে দোস্ত।
শুভ্র লিস্টের প্রথম নাম্বার টা তে কল করল।একটা ছেলে রিসিভ করল।শুভ্র বলল ভাইয়া অরথি কে চিনেন? সে বলল হ্যাঁ। আমার বান্ধুবি ও।কিন্তু কেন? ওর আরেকটি নাম্বার আমাকে বলতে পারবেন?? একটু দরকার ছিল।
অরথি অনেক সুন্দরী।অনেকেই ওর নাম্বার খোজ করতেই পারে।অরথির বন্ধু বলল আপনি আমাদের ভারসিটির?? এই বলে ভাসিটির নাম বলে,
ভাসিটির নাম শুনে শুভ্র সক হয়ে যায়। বুঝতে পারে অরথি মিথ্যা বলেছে যাতে ওকে না খুঁজে পাই।
অরথির ফ্রেন্ড বলে ভাই অরথি কে আস্ক না করে নাম্বার টা দিতে পারছি না। ওকে আস্ক করে দেয়?

শুভ্র ঃ না থাক আস্ক করতে হবে না। শুভ্র ভাবে অরথি জেনে গেলে প্রব্লেম।
অরথির ফ্রেন্ড ও বিষয়টা পাত্তা দেয়নি। কারণ মাঝে মধ্যেই ওর কাছে ভাসিটির অনেকে অরথির নাম্বার চায়।কিন্তু অরথি এসব কথা শুনলে রেগে যায়। তাই অরথি কে কিছু বলল না অরথির ফ্রেন্ড।

এইদিকে এফ এন এফ লিস্ট এ 3 টি নাম্বার পেয়েছে শুভ্র। 2 নাম্বার টা তে চেষ্টা করে বন্ধ পেল শুভ্র। সেকেন্ড নাম্বার টা বন্ধ পেয়ে খুব হতাশ শুভ্র।

আসলে অনেক আগে অরথি ওর এফ এন এফ এর লিস্ট করেছিল।
3টা নাম্বারের মধ্য 2 টা ভাসিটির ফ্রেন্ডর নাম্বারে। আর একটা যে নাম্বার এ করেছিল সেটা এখন শুভ্রর শেষ ভরসা।
এখন সেই শেষ নাম্বারে ফোন করে শুভ্র ।

রিং বাজতে শুরু হলো।……..

পর্ব- ১০ (ফেসবুক ফেক আইডি)

(ফেক ফেসবুক আইডি ১০ম পর্ব পড়ুন)

ফোনের রিং বাজতেই শুভ্রর হারটবিট বেড়ে যায়। ভাবতে থাকে আল্লাহ প্লিজ হেল্প মি।এটাই শেষ ভরসা।

তারপর
ফোন রিসিভ করে সালাম দিয়ে হেলো বলল একটা মেয়ে।
ভয়েস শুনে শুভ্র সক হয়ে যায়।

কে এই মেয়ে যার ভয়েস শুনে শুভ্র সক হয়ে গেছে। হুম সে আর কেউ না অরথি।

আসলে অরথি অনেক দিন আগেই এয়ারটেল নাম্বার থেকে ওর জিপি নাম্বারটিতে এফ এন এফ করেছিল শুধু দেখার জন্য যে কল্ রেট কত করে কাটে জিপি নাম্বারে।কিন্ত পরে আর চেঞ্জ করে নি।আসলে ভুলে গিয়েছে। আর অরথির সেই একটি ভুল শুভ্রর জন্য সবচেয়ে বড় পাওয়া।

শান্তির নিঃশ্বাস ফেলে শুভ্র।
অরথি এইদিকে বলে কে আপনি ফোন দিয়ে কথা কেন বলছেন না?
শুভ্র ঃ কথা যদি বলি তাহলে এই নাম্বারটাও চেঞ্জ করে দিবা না ত??

অরথি যেন আকাশ থেকে পড়ে এই কথা শুনে। ও কিছু বলার শক্তি হারিয়ে ফেলে। শুধু একটা কথা বলে শুভ্র??

শুভ্র ঃ হুম আমি। অরথি কেন এমন করলে আমার সাথে?? খুব ইমোসনাল হয়ে যায় শুভ্র, কান্না করে ফেলে।

অরথির চোখ দিয়ে ও পানি পরতে থাকে। কিন্তু ও বুঝতে দেয়নি।অসম্ভব শক্ত একটা মেয়ে অরথি।

অরথি ঃ আপনি কান্না করছেন কেন! প্লিজ কান্না করবেন না! আমি আসলে….
রিফাত এর নাম বলতে গিয়ে অরথি থেমে যায়।
অরথি ভাবে এখন বলা ঠিক হবে না। তখন অরথি বলে আমি আসলে এইসবের মধ্যে যেতে চাই না। তাই ফোন বন্ধ করে দিয়েছিলাম।

শুভ্র ঃ এতো ক্ষতি করেছি?? যে ফোন বন্ধ করে দিতে হবে!!! কত টেনশন এ ছিলাম একবারও ভেবে দেখেছ? ভেবেছিলাম হয়ত হারিয়ে ফেলেছি তোমাকে। আর কখনো পাব না।

অরথি ও খুব কান্না করছে। শুভ্র যেন বুঝতে না পারে সে জন্য ও আর ফোন এ কথা না বারিয়ে বলে আমি এখনই কল করছি।আম্মু ডাকছে।
শুভ্র বলে ফোন কি আবারও বন্ধ করে দিবা?? বলে কান্না করতে থাকে।
অরথি ও আর সয্য করতে না পেরে কান্না করতে থাকে শুভ্র বুঝতে পারে।
শুভ্র ঃ তুমিও কান্না করছ?? আমি জানতাম অরথি আমার বিলিভ মিথ্যা হবে না।
অরথির হঠাত মাথায় আসে কি করছি আমি! তখন বলে, বললাম ত আম্মু ডাকছে। এসে ফোন দিচ্ছি। বলে ফোন রেখে দিয়ে অনেক কান্নাকাটি করে।
অরথি ভাবতে থাকে কেন এমন হল!!
এইদিকে শুভ্র পুরো সিউর অরথি ওকে ভালবাসে। না হলে এমন ভাবে কান্না করতে পারত না।

এইদিকে রাতে অরথি হঠাত চিন্তা করল আচ্ছা আমার নাম্বার কিভাবে পেল?? তখন এতটা সক হয়ে গিয়েছিলাম যে কিভাবে নাম্বার পেল সেটাই আস্ক করিনি।
শুভ্র ওয়েট করছে অরথির ফোন এর।এরমধ্যেই অরথি ফোন করল।
অরথি ঃ শুভ্র আপনি আমার নাম্বার কিভাবে পেলেন?
শুভ্র ঃ কিভাবে পেলাম তা বলবনা।শুধু এই কথা জেনে রাখ আমি ডিফেন্স অফিসার। আমি এটাও জানি তুমি আমাকে আরও মিথ্যা বলেছ।
অরথি কিছুটা ভয় পেয়ে যায়।

মূলত,শুভ্র ইচ্ছা করে আসল কারণ বলেনি।যদি এই নাম্বারও অরথি চেঞ্জ করে দেয় সেই ভয়ে। শুভ্র ভাবল অরথিকে বুঝাতে হবে যে ওর নাম্বার আমি বের করতে পারব, তা না হলে ওর কোন ভরসা পাচ্ছি না। আবারও যদি চেঞ্জ করে দেয়।

অরথিঃ কি মিথ্যা বলেছি আমি ?
শুভ্র ঃ তোমার ভারসিটির নাম কি??
অরথিঃ হুম বলেছি মিথ্যা। আমি চাইনা আপনি আমাকে কখনো খুজে পান।
শুভ্র ঃ আমি কি দোষ করেছি অরথি?? কেন শাস্তি দিচ্ছ এভাবে আমাকে !!
অরথিঃ আমাকে মাফ করে দেন।আপনাকে কিছু কথা বলার আছে।
শুভ্র ঃ কাল মিট করতে পারবা?
অরথিঃ না। ফোনে বলব সব কিছু।
শুভ্র ঃওকে । আমি একটু পর ফোন দিচ্ছি।
অরথিঃ ওকে।

অরথি চিন্তা করে আজ সব কথা বলে দিব।কিন্তু ও যদি রিফাত এর কোন ক্ষতি করে!!!!নাহ শুভ্র এমন ছেলে না।কিন্তু শুভ্র যদি রিফাত কে সব কথা বলে দেয়!!! যে ছেলে আমার নাম্বার পেতে পারে সে রিফাত এর নাম্বারও খুব সহজেই পাবে।
উফফফ কি করব!!! যেভাবেই হোক আস্তে আস্তে ওকে বুঝিয়ে বের হয়ে আসতে হবে। তারাতাড়ি করে কিছু করা ঠিক হবেনা। কিন্তু ওকে আমি এতো ভালোবেশে ফেলছি কেন!!!!!!!। নাহ আমাকে আরও শক্ত হতে হবে।

এরমধ্যে শুভ্র ফোন দেয়। বল অরথি কি বলতে চেয়েছিলা? আমার ব্যাপার নিয়ে কি ভেবেছিলা?
অরথিঃ আমার আরও কিছু দিন টাইম লাগবে।
শুভ্র ঃ আমি তোমার জন্য ওয়েট করব।। তার আগে একটা কথা দাও,?
অরথিঃ কি?
শুভ্র ঃ তুমি আর কখনো আমাকে। মিথ্যা বলবা না?
যা বলেছ সেটা বাদ।আর কখনও বলবা না। আমি মিথ্যা খুব হেট করি।
অরথি যেন সব দিকে কেমন আটকিয়ে যাচ্ছে। তার পরেও বলল কখনো বলবনা।
শুভ্র শান্তির নিঃশ্বাস ফেলে বলে এইত লক্ষি মেয়ে

তারপর দুইজনই ফোন রেখে দিল।
এভাবেই কয়েক দিন ওরা নরমাল ভাবে কথা বলতে থাকে। অরথি শুধু সুযোগের অপেক্ষা তে আছে যে কীভাবে সব শেষ করে দিবে।
একদিন শুভ্রর অনেক জর এসেছে। অরথি ফোন দিয়ে খোজ নেয়। অরথি খুব অস্থির হয়ে যায়। কিছু খন পরে কল করে খবর নিতে থাকে।

শুভ্র চিন্তা করে অরথি কে এখন আস্ক করা সবচেয়ে ভালো সময়।
রাতে শুভ্র ফোন করে অরথিকে বলে আজ যদি আমি মারা যাই??
অরথিঃ আপনার মাথা ঠিক আছে?? কি সব ফালতু কথা বলছেন!!
শুভ্র ঃ এখন বল আমাকে ভালবাসো কি না??

অরথিঃ শুভ্র??? আপনি ঘুমান। কি হচ্ছে এসব!
শুভ্র ঃতুমি মিথ্যা কথা যদি বল তাহলে আমি মারা যাব।
অরথি জোরে করে বলে উঠে শুভ্র????????
শুভ্র ঃ না যদি বল তাহলে সত্যিই যেন মারা যায়। বল অরথি?? ভালোবাস??,,,,,,,

পর্ব- ১১ (ফেক ফেসবুক আইডি)

(ফেক ফেসবুক আইডি ১১তম পর্ব পড়ুন)

শুভ্রর কথা শুনে অরথি চমকে যায়।
অরথি বলে দেখেন শুভ্র আপনার এমনই জর।শুধু শুধু এমন করবেন না।
শুভ্র ঃ আমি ফোন রেখে দিচ্ছি। আমি যা বলেছি আল্লাহ যেন সেটাই করে।
অরথি ঃ কেন পাগলামি করছেন??
শুভ্র ঃ আমার জানার রাইট আছে অরথি।তুমি আমাকে এভাবে মিথ্যা বলতে পারবা না
অরথি ঃ আমি ফোন রাখছি। বাই।

শুভ্র এমনিতেই জর,তারপর অরথির এই কথাতে আরও খারাপ লাগছে।
শুভ্র ঃ তার মানে আমি বুঝতে পারলাম তুমি আমাকে ভালবাস না??
অরথি ঃ হা বাসি না
শুভ্র ঃ অনেক কষট পেয়ে বলে ওকে। এটা যদি মিথ্যা হয়ে থাকে তাহলে আমি আল্লাহর কাছে একটা রিকুয়েষ্ট করব আমার যেন…

এ কথা শেষ না হতে বাধা দিয়ে অরথি বলে উঠে শুভ্র??? কি বলতে যাচ্ছেন এসব।

শুভ্র ঃ তুমি ফোন রাখ। আর খোজ নিতে হবে না। যা হবার হবে আমার।
অরথি ঃ শুভ্র প্লিজ। আপনি শান্ত হন।আপনার কথা শুনে বুঝতে পারছি আপনার জর আরো বেরে গিয়েছে।

শুভ্র ঃ আমার কিছু হলে হবে। তুমি এত চিন্তা করো না। তুমি ত সত্যি বলেছ। কিন্তু অরথি!! নাহ কিছু না।

অরথি কান্না করে দেয়। কারণ ও কিছুই বুজতে পারছে না ওর কি করা ঠিক হবে।
শুভ্র ঃ অরথি কান্না করো না। আমার কিছুই হবে না, কারন তুমি সত্যি বলেছ। আমাকে ভালোবাস না তাই না?

অরথিঃ কান্না করতে করতে আর না সহ্য করতে পেরে বলে দেয় অনেক ভালোবাসি। প্লিজ সুস্থ হয়ে যান তারাতাড়ি।
শুভ্র অরথির কথা শুনে খুশিতে কি বলবে আর ভাষা খুজে পায় না। শুধু বলে থ্যাংকস অরথি।

অরথি ফোন রেখে দিয়ে কান্না করতে থাকে। কি করলাম আমি।!! পরে আবার ভাবে ত আমি কি করব!!! ওর খারাপ কিছু হবে সেটাও হতে দিতে পারিনা।

অরথি ভাবতে থাকে কিভাবে এতো কিছু হয়ে যাচ্ছে, কিছুতেই বের হতে পারছিনা আমি!! সব দিকে কেমন যেন আটকিয়ে যাচ্ছি। এই একটা ফেক আইডি নিয়ে যে এতো প্রব্লেম হবে কখনো ভাবিনি।

একটু পর শুভ্র মেসেজ করল
শুভ্র ঃ কাল মিট করব ।সকাল ১০ টায়। ধানমন্ডি ৩২ নাম্বার ওভার ব্রিজ এর উপর দাঁড়িয়ে থাকব।
অরথি ঃ আমি যেতে পারব না।
শুভ্র ঃ আমি জানি তুমি আসবে।
অরথি ভাবতে লাগলো যাব না আমি।

পরেরদিন খুব সকালে অরথির ঘুম ভেঙে যায়। উঠে দেখে শুভ্র মেসেজ করেছে,
শুভ্র ঃ আজ জোর করে ডাকব না তোমাকে । কিন্তু আমার বিলিভ আছে যে তুমি আসবে। ওয়েট করব আমি।
অরথি মেসেজ দেখে মুহুর্তের মধ্যে সব ভুলে যায়। ও তারাতাড়ি উঠে রেডি হয়ে চলে যায় ধানমন্ডিতে।

অসম্ভব সুন্দর লাগছিল রেড কালার ড্রেস পরে অরথিকে।

ওহহ একটা কথা বলা হইনি, অরথির একটা প্রব্লেম ছিল, সেটা হল, ও একবার কাউকে দেখলে ফেস মনে রাখতে পারে না। মানে ভুলে যায়। কিন্তু অরথি ছিল অসম্ভব ভালো ছাত্রী।কিন্তু মানুষ এর ফেস কেন যেন একবার দেখলে কনফিউজড থাকে, কনফিডেনট হতে পারে না।

আচ্ছা যাইহোক,

অরথি ব্রিজ এর উপর গিয়ে দেখে একটা ছেলে দাড়িয়ে আছে। কিন্তু শুভ্র কে দেখতে পেল না।অরথি ভাবে আজ ও লেট।কি যে করা উচিত এই ছেলেকে।একা ব্রিজ এর উপর দাঁড়িয়ে না থেকে নিচে গিয়ে একটা মার্কেট এর সামনে যায়।
গিয়ে জাস্ট দাঁড়িয়েছে সাথে সাথেই একটা ছেলে পিছন থেকে ধাক্কা দিয়ে বলে ওইদিকে কই যাও??

অরথি চমকিয়ে যায়।ভালো করে দেখে সেই ওভার ব্রিজ এর ছেলেটা

অরথি ঃ ভালো আরও করে খেয়াল করে দেখে শুভ্র। হেসে বলে ওহহ ওভার ব্রিজ এর উপর আপনি ছিলেন ?
শুভ্র ঃজি মেডাম।আপনি ত পাত্তা না দিয়ে চলে আসলেন নিচে।
অরথি ঃ সরি। আমি চিনতে পারিনি।
শুভ্র ঃ হুম তারমানে আমার ফেস দেখে ভালোবাসনি!! শুধু ভিতর থেকে ভালোবেসেছ??
অরথি ঃ লজ্জা পেয়ে সামনে আগায়??
শুভ্র ঃ চল লেকের কাছে যাই।
দুইজন লেকের কাছে হাটতে থাকে আর গল্প করতে থাকে ।
অরথি যেন একটা আলাদা জগতে আছে মনে হচ্ছে ওর।এতো ভালো লাগছে ওর।

শুভ্র বলে চলো সামনে আরেকটা লেক আছে সেখান থেকে ঘুরে আসি।
অরথি বলে ওকে চলেন ।
শুভ্র ঃ হেসে বলে ২ টা রিকশা নিব?
অরথি ঃ মাইর খাবেন???
শুভ্র ঃ হাসতে থাকে।

তারপর দুজন এই প্রথম এক রিকশা তে উঠে।
অরথি কে শুভ্র বলে এই মেয়ে এরপর যদি আপনি করে বলো ত তোমাকে দেখে নিব!
অরথি ঃ ১০০০ বার আপনি বলব।
শুভ্র ঃ কি?? আপনি বলবা??
অরথি ঃ জি।
শুভ্র ঃ শক্ত করে অরথির হাত ধরে।

অরথি চমকিয়ে উঠে। হাত ছারেন আজিব

শুভ্র ঃ এখন বল?? আর আপনি বলবা??
অরথি ঃ হা বলব
শুভ্র আরও শক্ত করে হাত ধরে। এবার বল??

অরথি ঃশুভ্র?? ওকে এএএ বাবা তুমি বলব।এখন ত ছারো।
শুভ্র বলে হাত ছেরে দেয়া খুব জরুরি?
অরথি ঃ শুভ্র বলে আস্তে করে সত্যিই একটা মাইর দিল।
শুভ্র হাসতে থাকে।

এইভাবে মিষ্টি ঝগড়া করে দিন যায় ওদের।

বাসায় এসে অরথি ফোন করল শুভ্র কে। কই তুমি?
শুভ্র ঃ অফিসার মেসে আসলাম।
অরথি ঃ ওকে।

অরথি দেখে রিফাত ফোন দিচ্ছে। মুহুর্তের মধ্যে অরথি আবারও নিস্তব্ধ হয়ে যায়। রিফাত এর কথা যেন ভুলেই গিয়েছিল অরথি।
ফোন রিসিভ করল অরথি।

রিফাত ঃকই তুমি?
অরথি ঃ বাসায়। তুমি কোথায়?
রিফাত ‘ঃএইত রুমে। ক্লাস এ যাওনি?
অরথি ঃ হুম।
রিফাত ঃ কি?????????ক্লাস এ গিয়েছিলে?/
অরথি ঃ হুম।
রিফাত ঃ কিন্তু আজ ত শুক্রবার!!!!!! ক্লাস এ তাও
শুক্রবার এ???

পর্ব- ১২ ( ফেক ফেসবুক একাউন্ট )

(ফেক ফেসবুক আইডি ১২তম পর্ব পড়ুন)

অরথি একটু চমকে উঠে। ও বুঝতে পারে ও উল্টো পাল্টা বলছে।
তখন বলে আসলে এক্সাম ছিল,সাডেনলি ডেট দিয়েছিল।

রিফাত ঃ ওকে।আচ্ছা থাকো। রাখি এখন।
অরথি ঃ তুমি এতো তারাতাড়ি কেন ফোন রেখে দিতে চাও??
রিফাত ঃ পরে কল করব।

অরথি অনেক ভাবেই রিফাত এর সাথে ইনভলভ হতে চেষ্টা করে। কিন্তু রিফাত সবসময়ই কেমন যেন করে।অরথি চিন্তা করে আজ রিফাত যদি আমাকে একটু কেয়ার করত তাহলে শুভ্রর প্রতি আমার এই ফিলিং কখনই আসত না।

শুভ্র আবারও ফোন দিয়েছে। অরথি ফোন ধরে বলল শুভ্র আমার ভালো লাগছে না। পরে কল করি?

শুভ্র ঃ তোমার ভালো লাগছে না আর আমি ফোন রেখে দিব?কখনো হতে পারে এমন?
এভাবে অরথির মন ভালো করার জন্য শুভ্র অনেক কথা বলতে থাকে।

ফোন রাখার পরে অরথি চিন্তা করতে থাকে কি করা উচিত! এভাবে দুটি রিলেশন এ জড়িয়ে থাকা সম্ভব না।
রিফাত কে আর শুভ্র দুজন কেই ধোকা দেয়া হচ্ছে।

এরপর অরথি ডিসাইড করে কিছুদিন পরে শুভ্র কে সব বলে দিবে ,আর শুভ্র থেকে দূরে চলে যাবে।কারণ শুভ্রর সাথে সবকিছু মিথ্যা দিয়ে শুরু মিথ্যা দিয়ে বেশি দিন কিছুই সম্ভব না। রিফাতকেও ধোকা দিয়া ঠিক হবে না। একটা সময় পর রিফাত ঠিক হবে ইনসাল্লাহ।আর আমিও শুভ্র কে ভুলে যাব।

এভাবে 2 মাস চলতে থাকল। অরথি এইদিকে শুভ্র থেকে দূরে চলে যাওয়ার প্লান করতে গিয়ে শুভ্র কে আরও বেশি ভালোবেসে ফেলে। এত ভালবেসে ফেলেছে যে এখন সত্যি বলতে ও ভয় পাচ্ছে। কারণ সত্যি শুনে যদি শুভ্র ওকে ছেরে চলে যায়।

আর রিফাত এই 2 মাসে একটা জিনিস খেয়াল করে যে অরথি শুক্রবার এ বাইরে যায় এবং শুক্রবার এ ফোন রিসিভ করে না।

অনেক বার ফোন করে শুক্রবার এ রিফাত। অরথি ফোন ধরে নি।কারণ অরথি শুভ্রর সাথে দেখা করার জন্য গিয়েছিল

বাসায় এসে অরথি ফোন বেক করে রিফাত কে।

রিফাত ঃ কই ছিলা তুমি?
অরথি ঃ বাইরে।
রিফাত ঃঅরথি! অনেক দিন ধরে দেখছি তুমি শুক্রবার এ ফোন রিসিভ কর না। কি কারণ বল?? অনেক রাগারাগি করে রিফাত।

অরথি চুপ করে থাকে। অরথি ভাবতে থাকে এভাবে হবে না। কারো সাথে রিলেশন রাখব না।
তারপর অরথি রিফাতকে বলে রিফাত আমি এই রিলেশন আর রাখতে চাইনা।

রিফাত পুরো আকাশ থেকে পড়ে।, ওহহ অন্য কাউকে পেয়েছ?? আমি আগেই বুঝতে পেরেছি।

অরথি ঃ তুমি কি আমাকে একটু টাইম দাও?? একটু কেয়ার কর??জর হলেও একবার খবর নাও না।

রিফাত ঃ ওহহ আচ্ছা ত কে খেয়াল করে এখন শুনি??
অরথিঃ আমি আর রাখবনা রিলেশন। তুমি কখনই চেঞ্জ হবা না। রাখি আমি বলে ফোন রেখে দেয়।

রিফাত অবাক হয়ে যায়। ও ভাবে অরথি কে আটকাতে হবে। না হলে ও অন্য কারও সঙ্গে রিলেশন এ জড়িয়ে যেতে পারে।
অরথি ফোন করে শুভ্র কে ও। সেম কথা বলে যে ও রিলেশন রাখবে না।ফেমেলি প্রব্লেম
শুভ্র অনেক বুঝাতে চেষ্টা করে বাট অরথি রাজি হয়নি।

মুলত অরথি শুভ্র কে প্রচন্ড ভালোবাসলেও ওর থেকে দূরে চলে যেতে চায় কারণ শুভ্র কে অরথি এত মিথ্যা কথা বলেছে যে ওর আর ভাষা নেই শুভ্র কে সব সত্যি বলার। এত মিথ্যা কথা বলেছে শুনলে শুভ্র ওকে হেট করবে, এই ভয়ে ও দূরে চলে যেতে চায়। আর রিফাত কে ও এখনো ভালবাসতে পারেনি এই জন্য দুইজন এর কাছে থেকে দূরে চলে গিয়ে একা থাকতে চায় অরথি।

4 দিন হয়ে যায় অরথি কারও ফোন রিসিভ করে নি। রিফাত এর ফোন 4 দিন পর রিসিভ করে অরথি

রিফাত ঃ কি হয়েছে?? এমন কেন করছ?
অরথি ঃ রিফাত প্লিজ আমাকে একা থাকতে দাও।
রিফাতঃ অরথি আমাকে আরেকটা সুযোগ দাও?
অরথি ভাবল রিফাত কে সুযোগ দিয়া উচিত।
অরথি বলল ওকে।দিলাম। তবে লাস্ট সুযোগ।
রিফাত ঃ সরি অরথি।

আর এদিকে শুভ্র ফোন দিতে দিতে অস্থির হয়ে যায়। অরথি রিসিভ করে বলে কেন ফোন দিচ্ছ??

অরথি ও শুভ্রর জন্য কান্নাকাটি করে। কিন্তু কিছু করার নাই।এতো মিথ্যা শুনলে শুভ্র ওকে হেট করবে এটা অরথি চায় না।
অরথি ভাবে ভালোবাসার মানুষ এর চোখ এ হেট হয়ে থাকার চেয়ে ওর থেকে দূরে চলে যাব।

অরথি জিবনে প্রথম বুঝতে পারল যে মিথ্যা বলার পরিনাম কত খারাপ হতে পারে। আজ যদি ও মিথ্যা না বলত তাহলে কখন ও শুভ্র কে ছেরে চলে যেতো না।
লাইফ এ ওর মতো ছেলে একটা পাওয়া ভাগ্যর ব্যাপার।

কিন্তু এত মিথ্যা। শুরু থেকে সব কিছু মিথ্যা দিয়ে শুরু করে সে একটা মিথ্যা কে ঢাকার জন্য শত শত মিথ্যা বলে আজ অরথির এই সাহস নেই যে শুভ্রর দিকে তাকিয়ে সব কথা বলতে পারবে।

অরথি ওই দিন ওয়াদা করে জিবনে কখন্ ও কাউকে মিথ্যা বলবে না। অরথি ভাবে যদি শুভ্র কে ভালো না বাসতাম তাহলে ওর কাছে সব কিছু সিকার করে মাফ চেয়ে নিতাম।আর দূরে চলে যেতাম।কিন্তু ওর আমাকে হেট করা আমি সহ্য করতে পারব না।

শুভ্র ফোন দিয়ে খুব কান্না করছে। প্লিজ অরথি আমাকে ছেরে যেওনা।অরথির যেন বুক ফেতে কান্না আসছে।তাও কিছু করতে পারছে না। অনেক রিকুয়েষ্ট করছে শুভ্র একবার দেখা করার জন্য।
অরথি রাজি হল।
পরের দিন দেখা করতে গেল। আজ শুভ্র অনেক আগে থেকেই দাঁড়িয়ে আছে অরথির জন্য।

অরথি এসেছে নিল রংয়ের ড্রেস পরে। পরির মতো লাগছিল অরথি কে।

শুভ্র এক ভাবে তাকিয়ে আছে অরথির দিকে।একটা রেস্টুরেনট এ গিয়ে বসল ওরা। শুভ্র প্রচন্ড কান্না করছে।

অরথি শক্ত হয়ে বলে আমার ফেমিলির অবাধ্য হতে আমি পারব না।আমার বিয়ে ঠিক হয়ে গিয়েছে।
শুভ্র আরও কান্না শুরু করল। অরথি ও আর না থাকতে পেরে কান্না করতে করতে উঠে আসতে চায়।শুভ্র হাত ধরে বলে

শুভ্র ঃ অরথি আমি কথা বলব তোমার ফেমিলির সাথে, আমি কথা বলব সব ঠিক হয়ে যাবে।

অরথি ভাবে আজ যদি আমি তোমাকে সব মিথ্যা না বলতাম তাহলে আমি নিজে তোমাকে আমার ফেমিলির সাথে পরিচয় করে দিতাম। কিন্তু এখন কোন মুখে নিয়ে যাব!! আমি যে ফেমিলির বিষয় ও সব মিথ্যা বলেছি।আর সেই একটা মিথ্যা ঢাকতে হাজার মিথ্যা বলে ফেলেছি। কোন মুখে তোমার সামনে দাঁড়িয়ে থাকব।

সব শুনার পর ইমোশনাল হয়ে যদিও মেনে নাও কিন্তু সারাজীবন আমাকে হেট করবে। কখন ও বিলিভ করবে না আর আমাকে।
খুব কান্না করে অরথি বলে শুভ্র আমি চলে যাচ্ছি। আর কখনও আমাকে ফোন দিও না।

শুভ্র ঃ ঠিক আছে, কান্না করে শুভ্র বলে আজ শেষ বারের মতো তোমার সাথে রিকশা তে যায় কিছুদুর???
অরথি ঃ ঠিক আছে।
কেউ রিকশা তে কোন কথা বলে নি।

কিছুদুর যাওয়ার পর অরথি বলে কোথায় নামবেন?

শুভ্র ঃআমাকে রাস্তা তে কোন এক জায়গা তে নামিয়ে দিও।যেখানে মনে চায়।

এই কথা শুনে অরথি আর সহ্য করতে না পেরে শুভ্র কে জরিয়ে ধরে কান্না করে দেয়। জিবনে প্রথম কাউকে জড়িয়ে ধরে অরথি। কখন ও রিফাত কে ও ধরে নি। কিন্তু শুভ্র কে ধরে ওর এতো শান্তি লাগছে।

শুভ্র ঃ শক্ত করে ধরে বলে।, ছেড়ে যেওনা প্লিজ।

অরথির আবার সেন্স ফিরে আসে কি করছি আবারও আমি।!!!আমার এখান থেকে বের হতেই হবে।
অরথি ঃ চোখ মুছে বলে এখানে নামবেন?

শুভ্র ঃ কিছু না বলে সাথে সাথে নেমে যায়। আর নিতে পারেনি শুভ্র এত কষট পেয়েছে।

কান্না করে আর ভাবে শুভ্র আজ যদি এক্সিডেনট করি তাহলে কি অরথি ফিরে আসবে!! শুভ্র একটা রিকশা নিয়ে যেতে থাকে।

অরথি এইদিকে অনেক কান্না করতে থাকে। বুকে পাথর রেখে যেন ওকে নেমে যেতে বলে অরথি। কিন্তু সহ্য করতে আর পারছে না। এতো কষট দিলাম ছেলে টা কে।কিছু কথা ও বলতে পারেনি শেষ এ।

অরথি রিকশার মধ্যে আবার শুভ্র কে ফোন দিল। হেলো শুভ্র?
শুভ্র ঃ ফোন রিসিভ করছে না।
অরথি ঃ অনেক বার ফোন দিয়েই যাচ্ছে। অস্থির হয়ে গেছে অরথি।কিছু হয়নি ত শুভ্রর??

কিছু খন পর শুভ্র ফোন রিসিভ করে বলে অরথি?
অরথি ঃ অস্থিরতা নিয়ে কোথায় তুমি??
শুভ্র ঃআজ যদি এক্সিডেনট হয় আমার??
অরথি ঃ সহ্য করতে না পেরে বলে শুভ্র এখনই দেখা করতে পারি আমরা?
শুভ্র ঃ কোথায় তুমি??
অরথি ঃ আমার রিকশা এখন নুরজাহান রোড এ।
শুভ্র ঃ এই রিকশা ঘোরান। আমি এখনই আসছি অরথি…….

পর্ব- ১৩

(ফেক ফেসবুক আইডি ১৩তম পর্ব পড়ুন)

অরথি রিকসা থেকে নেমে যায়।দাঁড়িয়ে থাকে শুভ্রর অপেক্ষায়।

কিছুখনের মাঝেই শুভ্র চলে আসে।

শুভ্রর চোখ লাল হয়ে আছে। কান্না করে ছেলেটার কি হাল হয়েছে অরথি ভাবতে থাকে।

শুভ্র বলে কি হয়েছে?
অরথি ঃ কান্না করতে করতে বলে বুজতে পারছ না কি হয়েছে?

শুভ্র ঃ এত খনে শুভ্রর মুখে একটু হাসি আসল। তারপর বলে শুভ্র কোথাও রেস্টুরেন্টে বসি?

অরথি ঃ নাহহ। খোলা কোন জায়গাতে নিয়ে যাও প্লিজ, বন্ধ জায়গায় আমার কেন যেন অস্থির লাগছে

শুভ্র ঃগুলসান এ যাবা, ?? একটা ফাঁকা জায়গা আছে।
অরথি ঃ হুম চল।

শুভ্র একটা সিএনজি ঠিক করে। তারপর সিএনজি তে উঠে বসে

অরথি ভাবতে থাকে যা হবার হবে আমি আর শুভ্র কে কষট দিতে পারব না। আমার ভুলের শাস্তি শুভ্র কেন পাবে!!

কান্না করতে থাকে অরথি।শুভ্র জড়িয়ে ধরে বলে আমি থাকতে এই কান্না যেন আর না দেখি।
অরথিও শক্ত করে ধরে থাকে আর একটু ভয়ে বলে আমাকে কখনও ছেড়ে চলে যাবা না ত?

শুভ্র ঃ যদি মরে যায় তাহলে ছেড়ে যাব।না হলে না

অরথি ঃ অরথি একটা মাইর দিয়ে বলে আর যদি জিবনে এমন কিছু বলেছ??তাহলে আমি মারা যাব

শুভ্র এই কথা শুনে জড়িয়ে ধরে ঠোঁটে ঠোঁট লাগিয়ে আদর করতে থাকে।

অরথি লজ্জা পেয়ে একদম চুপ হয়ে যায়।

শুভ্র অরথির চোখ বন্ধ দেখে হাসতে থাকে। তারপর অরথি কে একটু নরমাল করতে বলে এই মেয়ে এরপর যদি এমন কিছু কখনো বলেছ!!

অরথি ঃ হাসি দিয়ে শুভ্রর ঘাড়ে মাথা রাখে।

গুলসান এসে দুজন গল্প করতে থাকে। অরথি কথায় কথায় শুভ্র কে আস্ক করে,

অরথি ঃ আচ্ছা শুভ্র আমি যদি তোমাকে কখনও মিথ্যা বলি? তুমি কি খুব রাগ করবা?
শুভ্র ঃ আমি জানি আমার জান কখনই আমাকে মিথ্যা বলবে না।তুমি এমন করতেই পারব না

অরথির মুখ শুকিয়ে গেল। ভাবতে থাকে কেন এত বিলিভ করছ! কেন আমাকে এত ভালবেসেছ,!!!আজ এই জন্য আমার সাহস হচ্ছে না তোমার দিকে তাকিয়ে তোমাকে কিছু বলার।

বিকালের পরে অরথি বাসায় চলে আসে। রিফাত ফোন করে বলে অরথি আমি একটা ভালো জব পেয়েছি। এখন খুব তারাতাড়ি তোমাকে বিয়ে করে ফেলব।

রিফাত চিন্তা তে আছে কিভাবে অরথিকে বিয়ে করে আটকিয়ে ফেলা যায়। কারন এখন রিফাত ভয় পাচ্ছে অরথি কারো সাথে যদি রিলেশন এ জরিয়ে যায়।

যাইহোক, রিফাত এর কথা শুনে অরথি একটুও খুশি হতে পারেনি।
অরথির টেনশন যেন বেড়ে যায়।
অরথি ঃ এত তারাতাড়ি কি আছে? এখন বিয়ে করা ঠিক হবে না।
রিফাত ঃ আমি বাসায় প্রস্তাব পাঠাব।
অরথি ঃ আমি রাখি।বলে ফোন কেটে দেয়।
অরথির আম্মুর নাম্বার রিফাত এর কাছে আগেই ছিল। একবার দুবার কথা ও হয়েছে অরথির ফ্রেন্ড হিসেবে।

এইভাবেই আরও কিছু দিন যেতে থাকে। রিফাত অরথির ইগ্নর একটু বুঝতে পারে। তাই অরথি কে না জানিয়ে ডিরেক্ট অরথির আম্মুর সাথে সব শেয়ার করে যে ওরা দুজন দুজনকে পছন্দ করে। আর রিফাত এর জব সম্পর্কে ও বলে।

ফেমিলি বেক গ্রাউন্ড ও ভাল রিফাত এর। রিফাত বলে আপনি পারমিশন দিলে আমি আমার আব্বু কে পাঠাব।

অরথির আম্মু বলে ঠিক আছে বাবা আমি সবার সাথে একটু আলাপ করে দেখি।পরে তোমাকে জানাব।

রিফাত এর কথা অরথি কে ওর আম্মু আস্ক করল,
অরথি সক হয়ে যায়। তারপর বলে আম্মু এখন এসব নিয়ে চিন্তা করোনা প্লিজ।

অরথি ফোন দিয়ে অনেক রাগারাগি করে রিফাত এর সাথে।

অরথি ঃকেন আমাকে না জানিয়ে তুমি আম্মু কে সব বলে দিলে??
রিফাত ঃ অরথি আমি এখন সেটেল।তাই বলেছি।
অরথি ঃ একবার কি উচিত ছিল না আমার সাথে আলাপ করা?
রিফাত ঃ আমি যা করেছি আমাদের ভালোর জন্য করেছি।বলে ফোন রেখে দেয় রিফাত।

অরথি কি করবে কিছুই বুজতে পারছে না। এইদিকে শুভ্র কে এখন পযন্ত কিছুই বলতে পারেনি অরথি।
অরথি শুভ্র কে ফোন দিল তারপর বলে শুভ্র কিছু কথা আছে তোমার সাথে। অরথি ভাবতে লাগলো বলতেই হবে এবার সাহস করে।
শুভ্র ঃ বল আমার প্রিন্সেস।
অরথি ভাবতে থাকে আর কখনও হয়ত এই ভাবে কথা বলবে না শুভ্র।
অরথি ঃ মিট করতে পারবা?কাল??
শুভ্র ঃ লক্ষী সোনা। কাল আমি সকালে উঠে সিলেট যাচ্ছি। মাত্র খবর পেলাম অফিসিয়াল কাজে। মে বি 15 দিন লাগবে। ফোন বন্ধ থাকবে।ফোন এলাও না এই 15 দিন।
অরথি ঃ ঠিক আছে। ঘুরে আস তারপর বলব।
শুভ্র ঃ খুব দরকার ছিল? কেন্সল করে দিব সিক লিভ নিয়ে?
অরথি ঃ না থাক।ঘুরে আস তারপরই বলব।
শুভ্র ঃ বুঝতে পেরেছি আমার জান আমাকে অনেক মিস করছে। যত তারাতাড়ি পারি চলে আসব।
অরথি ঃ একটা কথা বলি?
শুভ্র ঃ জি বলেন!
অরথি ঃ I LOVE YOU
শুভ্র ঃ I LOVE YOU more Than you remember it.
অরথির কান্না চলে আসে আর ভাবতে থাকে আমি ওকে ডিসারভ করিনা।

শুভ্র চলে যায় সিলেট এ।

এইদিকে হঠাত অরথির আম্মু সিক হয়ে যায় স্টোক করে। অরথির চোখ এ পুরো অন্ধকার দেখছে। হাসপাতালে অরথি ওর আম্মুর সাথে, খুবই খারাপ অবস্থা ছিল অরথির আম্মুর।শুভ্র কে অরথি ফোন করে ফোন বন্ধ তাই কিছুই বলতে পারেনি।রিফাত অরথির ফোন বন্ধ পেয়ে অরথির আম্মুর নাম্বারে ফোন দিয়ে সব জানতে পারে অরথির খালামনির কাছে।

এখন একটু সুস্থ আম্মু । অরথির আম্মু হাসপাতাল থেকে বাসায় এসেছে

এই দিকে রিফাত ওর আম্মু কে নিয়ে অরথির বাসায় অরথির আম্মু কে দেখতে এসেছে।

এই প্রথম অরথি কে দেখল রিফাত এর আম্মু। মিষটি একটা মেয়ে। খুব পছন্দ হয়ে যায় রিফাত এর আম্মুর।

অরথি সালাম দিল।
রিফাত এর আম্মুঃ বসো মা।

রিফাত এর আম্মু অরথির আম্মুর সাথে কথা বলতে থাকে। তারপর বলে আসি ভাবি। খুব তারাতাড়ি আবার আসব

অরথির আম্মু কে নিয়ে অরথি এখনো টেনসন এ।সবাই আসলে টেনসন এ ছিল । কারণ ডাক্তার বলেছে যে কোন টাইম এ আবার প্রব্লেম হতে পারে। খুব খেয়াল করে রাখতে হবে।

সবাই চিন্তা তে পড়ে গিয়েছে,

অরথির বড় বোন আর অরথির আম্মু দুজনেই মনে মনে ভাবতে থাকে বিয়েটা অরথির তাড়াতাড়ি দিয়ে দিলে ভালো হয়।

অরথির বড় বোন বলে আম্মু অরথিকে বিয়ে দিয়ে দেই। তুমি ওকে নিয়ে অনেক চিন্তা কর সেটা কম হবে।আজকাল যে যুগ পরেছে।আর অরথি মাসাল্লাহ সুন্দরী।

অরথি আম্মু বলে আমিও তাই ভাবছি।
অরথির বোনঃ তাহলে ওর দুলাভাই কে বলি ভালো ছেলে আছে সেদিন ও আমাকে বলেছে

অরথির আম্মু ঃ আরে না। অরথির পছন্দ আছে। ওই যে রিফাত বুয়েট থেকে পাস করে জব পেয়েছে।
অরথির বোনঃ তাই অরথির পছন্দ আছে!!!!!!!

(এর পরের পর্ব হবে শেষ পর্ব) তোমাদের মুল্যবান মতামত আমাকে দিলে খুশি হব 😊😊

পর্ব- ১৪ ও শেষ

(ফেক ফেসবুক আইডি শেষ পর্ব পড়ুন)

অরথির বোন অরথি কে আস্ক করে।অরথি তুই কি বিয়ের জন্য প্রিপেয়ার?
অরথি ঃ কার সাথে আপু??
বোনঃ আম্মু বলছিল রিফাত নামে একটা ছেলে কে তুই পছন্দ করিস?
অরথি ঃ আমি এখন বিয়ে করব না।
বোনঃবিয়ে বললেই কি বিয়ে হবে নাকি? আমরা দেখি।
অরথি ঃ আমি চাই না এখন তোমরা দেখ।
বোনঃআম্মুর শরির কেমন জানিস না?
অরথি ঃআপু প্লিজ। আমি এখন বিয়ে করতে পারব না
বোনঃ আচ্ছা পরে কথা বলব তোর সাথে।

অরথির বোন তার হাসবেন্ড কে সব বলে দিল। সে শুনে বলে দেখি ছেলের ফোন নাম্বার নিয়ে আস কথা বলি।
বোনঃ অরথি ত নিষেধ করল।আচ্ছা আম্মুর কাছে নাম্বার আছে সেটা নিয়ে আসি।
অরথির দুলাভাই রিফাত কে ফোন দিয়ে পরিচয় দিল।
রিফাত ঃ সালাম দিয়ে কেমন আছেন?
দুলাভাইঃ এইত আলহামদুলিল্লাহ। তুমি কেমন আছ?
রিফাত ঃ আলহামদুলিল্লাহ।

দুলাভাইঃ কোথায় জব করছ তুমি? এইভাবে অনেক কথা আস্ক করতে থাকে। পরে বলে আচ্ছা তুমি তোমার বাসার সবাইকে নিয়ে ঘুরে যেও।
রিফাত ঃ আচ্ছা আসব।আমার আব্বুর সাথে আপনি কথা বলতে পারেন। আব্বু ও এই মেটার নিয়ে কথা বলতে চেয়েছে।
দুলাভাই ঃওকে ফোন দিতে বল আমাকে কোন প্রব্লেম নাই।আর যেখানে তুমি আর অরথি দুজনেই দুজন কে পছন্দ কর সেখানে আর কি বলার আছে।
এভাবে কিছু কথা বলে ফোন রেখে দেয় দুজন ।

রিফাত অরথি কে ফোন করে সব বলে। আরও বলে যে পরশু আমি সবাইকে নিয়ে ঘুরে আসব তোমাদের বাসায়।
অরথি কি বলবে আর বুঝতে পারছিলো না।ওর চোখ যেন অন্ধকার দেখছে।

ফোন রেখে সাথে সাথে চেষ্টা করে শুভ্র কে কল করতে। নাহ এখনও শুভ্রর নাম্বার বন্ধ। কি করবে অরথি কিছুই বুজতে পারছে না।কখনও শুভ্রর কাছে ওর অলটারনেটিভ নাম্বার রাখি নি।। 15 দিন দেরি হবে জানি কিন্তু এত দরকার পরবে বুজতে পারিনি।
শুভ্রর ফেসবুক থেকে ওর একটা ফ্রেন্ড কে নক করল।একদিন দেখা হয়েছিল ওই ফ্রেন্ড এর সাথে ওরা যখন ঘুরতে গিয়েছিল। যাইহোক নক দিল

বন্ধু ঃ আরে অরথি কেমন আছ?
অরথি ঃ ভাইয়া খুব টেনশনে আছি। শুভ্রর কোন খবর জানেন?
বন্ধুঃ ও ত টেনিং এ তোমাকে বলে যায় নি?
অরথি ঃ কান্না করতে থাকে হা বলেছে। কিন্তু খুব দরকার ওকে আমার
বন্ধুঃ আরে কান্নাকাটি করে না।আমি দেখছি কি করা যায়।
অরথি ঃ প্লিজ চেষ্টা করেন।
বন্ধুঃ আমি জানাচ্ছি তোমাকে।

অরথি চিন্তার মধ্যে চুপ করে বসে থাকে। অরথি দেখে ওর দুলাভাই রিফাত এর বাবার সাথে কথা বলছে ফোন এ।অরথি ভাবতে থাকে যদি ওরা বাসায় এসে আমাকে বিয়ে পরিয়ে নিয়ে যায়। নাহ এমন কিছু হতে পারে না।

এভাবে 2 দিন চলে যায় এইদিকে রিফাত এর ফেমিলি পুরো প্ল্যান করে আসছে যে কাবিন করে যাব।কয়েক দিন ধরে কথা হচ্ছে অরথির আম্মুরও সাথে। অরথির আম্মুর ও ইচ্ছে আছে বুঝা যাচ্ছে।

শুভ্রর বন্ধু 2 দিন পর অরথি কে নক করে বলে অরথি কোনভাবেই কথা বলতে পারিনি। ওদের এই 15 দিন টেনিং পাহাড়ের এলাকায়। তাই ফোন বন্ধ। নেটওয়াকও নেই।

অরথি চুপসে গেল। কি বলবে আর ভাষা যে নেই।
অরথি ঃ ঠিক আছে ভাইয়া।
বন্ধুঃ কি হয়েছে? বলবা আমাকে,??
অরথি ঃ বুজতে পারছিনা ভাইয়া কি বলব। আর কোন জায়গা থেকে শুরু করব।
বন্ধুঃ কি হয়েছে অরথি?? আমাকে বলো?
অরথি ঃ কান্না করতে থাকে। যখনই বলতে যাবে
ঠিক এই সময় অরথির আম্মু ডাক দেয়।

অরথি বলে ভাইয়া আম্মু অনেক সিক আমাকে ডাকছে। আমি যাই
বন্ধুঃ ঠিক আছে। চিন্তা করো না

অরথি আম্মুর কাছে গেল
জি আম্মু ডাকছো?
আম্মু ঃ কি করছিস তুই?
অরথি ঃকিছু না
আম্মু ঃ শোন রিফাত এর বাবা ফোন করেছিল। অনেক ভালো মানুষ মনে হল। কালই আসতে চাচ্ছে।
আর আমি চাই তোর বিয়ে তারাতাড়ি হয়ে যাক।
অরথি ঃ কেন আম্মু?? কান্না গলায় বলে।
আম্মু ঃ আরে পাগলি আমি কি তোর অপছন্দ কারোর সাথে বিয়ে দিয়ে দিচ্ছি?
অরথির চোখ গরিয়ে পানি পরতে থাকে।
আম্মু জড়িয়ে ধরে বলে শোন মা কে কত দিন বেচে থাকে কে জানে আর আমি চাই আমার ছোট মেয়ে কে নিয়ে চিন্তা মুক্ত হতে। আর আমার মেয়ে কে খুশি দেখতে।বিয়ে হয়ে থাকুক। দরকার হলে পরে তুলে নিয়ে যাবে।
অরথি কিছু বলতে পারছিলো না।কেমন করেই বা বলবে এই সময় অরথির আম্মু কে কিছু বলা মানে একটা সক দেয়া
আম্মু ঃ শোন কাল ওরা আসবে তুই রেডি হয়ে থাকিস।

সবাই ভাবতে থাকে অরথি খুশি। ভাববেই ত। অরথির পছন্দ এ ত বিয়ে হচ্ছে। আর অরথি ভাবে আর মে বি শুভ্র কে কখনও দেখা হবে না।কান্না করে সারাক্ষণ কিন্তু কাউকে কিছু বলতে পারছিলো না অরথি।

পরের দিন রিফাত এর ফেমিলির সবাই আসে।সবাই কথা বলে ফিক্সড করে আজই বিয়ে হবে।কাবিন করে রাখবে।

অরথি সুযোগ পেলেই চেষ্টা করছিল শুভ্রর ফোন এ।কিন্তু বন্ধ। অরথি ভাবে নিয়তি কি এটাই ছিল!!!
সময় থাকতে না বলার পরিনাম এটা এ হতে পারে।
অরথি ভাবে আজ যদি বিয়ে করে ফেলি তাহলে শুভ্র কে সারাজীবন এর জন্য হারিয়ে ফেলব। কিন্তু আমার সব কথা শুনে শুভ্র যে আমাকে বিয়ে করবে তার কি গ্যারান্টি আছে!! আজ রিফাত কে বিয়ে না করলে সেটা সবার জন্যই অপমান। আর রিফাত ও কখন ও আমাকে মেনে ও নিবে না।

এত কিছু ভাবতেই অরথি অস্থির হয়ে উঠে। অরথি ভাবে রিফাত কে যদি বিয়ে করি তাহলে ও ওকে ধোকা দিয়া হবে।শুভ্র আমাকে সব শুনে যদি বিয়ে না করে না করুক।আমি শুভ্রর জন্যই ওয়েট করব আর তা না হলে পুরো লাইফ একা এ থেকে যাব।

অরথি পুরো ডিটারমাইন।
আপুকে ডেকে নিয়ে কান্না করে বলে অরথি , আপু আমি এই বিয়ে করতে পারব না। আমি অন্য একজন কে ভালবাসি।
আপু আকাশ থেকে পড়ে। কি বলছিস? পাগল হয়ে গিয়েছিস?
অরথি ঃ এত খন চেয়েছিলেন সব ভুলে আম্মুর জন্য বিয়ে করতে। কিন্তু আপু আমার জন্য অসম্ভব রিফাত কে বিয়ে করা। প্লিজ তুমি বিয়ে থামাও বলে অরথি সেন্সলেস হয়ে যায়।
আপু ঃ চিতকার করে বলে অরথি?? সারাদিন না খেয়ে টেনসনে আর থাকতে পারেনি অরথি।

সবাই চলে আসে। পরে পানি দিয়ে অরথির সেন্স আসে।
আপু বলে আজ বিয়ে না দেই। অরথি সিক।

সবাই বলে ঠিক আছে। সবাই চলে যায়। তারপরে অরথির বোন সবাই কে সব বলে। অরথি কে সবাই বকাবকি করে। অরথি কান্না করতেই থাকে।
অরথি বলে আম্মু আমাকে মাফ করে দাও। আমি অনেক বড় ভুল করে ফেলেছি।সবাই কে সব কিছু বলে অরথি শুভ্রর মেটার এ

অরথির আম্মু বলে ওই ছেলে কে ভুলে যা।রিফাত এর ফেমেলির সাথে আমরা ইনভলভ হয়ে গিয়েছি।

অরথি ঃ আমি সবার কাছে মাফ চেয়ে নিব।আম্মু আমাকে এত বড় শাস্তি দিও না।অনেক কান্না করে অরথি।
সবাই চুপ করে বলে যা ইচ্ছে কর।

কিছু চিন্তা না করে অরথি রিফাত কে ফোন করে সব বলে দেয়।
রিফাত ঃ আমি জানি।যখন তুমি আপুকে সব বলছিলে তখন আমি সব শুনেছি। আমার ফিলিং আসলে সত্যি বলতে তেমন কখনই ছিল না তোমার জন্য। মনে করেছিলাম লাইফ এ একজন দরকার সেটা তুমি। কিন্তু তুমি যে ভাবে শুভ্র কে চাও সেই রকম ভালবাসা কখন ও আমাকে দাওনি। হয়ত আমিও দিতে পারি নি।
ঠিক আছে আমি বাসায় মেনেজ করব। ভালো থাক।

অরথি বলে আমাকে মাফ করে দিও রিফাত আমি অনেক চেষ্টা করেছি তোমাকে ভালবাসতে কিন্তু এটা আমার হাতে ছিল না।
আমি জানি শুভ্র আমাকে মেনে নিবে না। তাও আমি ওর জন্য ওয়েট করব।

রিফাত ঃ বেস্ট অফ লাক বলে রিফাত ফোন রেখে দেয়।
অরথি দেখে শুভ্র ফোন করেছে।
অরথিঃ শুভ্র??? অনেক খুজছি তোমাকে।
শুভ্র ঃ কি হয়েছে? তুমি আমার বন্ধু কে নক করে কান্নাকাটি করেছ সুনলাম। মাত্র এসেছি আমি ঢাকা তে।
অরথি ঃ এখনই মিট করতে পারি?
শুভ্র ঃ ওকে। সেই আগের জায়গায় ওয়েট করব।এখনই বের হও।
অরথি বের হয়ে যায় সেখানে। দেখে শুভ্র দাঁড়িয়ে আছে।
অরথি ঃ শুভ্র আমি তোমাকে সব মিথ্যা কথা এতো দিন বলে এসেছি।কান্না করতে করতে সব কিছু বলে দেয় শুভ্র কে। রিফাত এর কথা ও সব বলে। যা ঘটেছে সবকিছু বলে দেয়।
শুভ্র যেন ভাষা শুন্য।ছলছল চোখ নিয়ে তাকিয়ে থাকে অরথির দিকে।
অরথির শুভ্রর চোখ এর দিকে তাকানোর সাহস হয়নি।

অরথি বলে আমি চলে যাচ্ছি তোমার লাইফ থেকে। জানি মাফ পাওয়ার যোগ্য না। তারপর ও যদি পার আমাকে মাফ করে দিও।সত্তিই অনেক বেশি ভালোবেসে ফেলেছি তোমাকে।
অরথি এই কথা বলে চলে যায়।

পিছন থেকে শুভ্র বলে কি ভেবেছিলে তুমি? আমি কিছুই জানি না??
শুভ্র বলে সব জানি অরথি আমি। আগেই সন্দেহ হয়েছিল আমি টেনিং এ যায়নি।
অরথি সক হয়ে যায়। মানে? তখন অরথি খেয়াল হয় আজ ত 7 দিন হয়েছে। কিন্তু ওর ত 15 দিন পর আসার কথা ছিল।
শুভ্র বলে আমি তোমার মেটার এ খোজ নিতে গিয়ে সব জানতে পারি।আর তাই নিজে কে একা রাখি এই 7 দিন। অনেক চিন্তা করে ভাবি আমার লাইফ তোমাকে ছাড়া পসিবল না। তাই আজ এসেছিলাম তোমাকে আস্ক করতে। আর তুমি নিজে বলে দিয়ে আমার আর তোমার ভালবাসা যে সত্যি তা প্রমাণ করে দিয়েছ।
অরথি ঃ কান্না করতে থাকে আর বলে শুভ্র,??
শুভ্র ঃ হুম অরথি কোন রাগ নেই আমার। অনেক ভালোবাসি তোমাকে ❤❤❤
অরথি শুভ্র কে কান্নার মধ্যে জড়িয়ে ধরে বলে আমাকে মাফ করে দিও।আমার ভুল হয়ে গিয়েছিল। অনেক ভালোবাসি তোমাকে❤❤❤❤
শুভ্র ঃআমিও, ❤❤❤❤❤❤
পরে ফেমিলির মতে বিয়ে করে এভাবেই শেষ হয়ে যায় গল্প।

এইযে আপুরা এইটা ছিল গল্প যার হেপি ইনডিং সবাই চেয়েছিলেন। আজ উপর এ আমি real story লিখে যে টাইটেল দেয় সেটা দেইনি।

কিন্তু যেহেতু এটা রিয়েল কাহিনি আমি সত্যিটা জানাতে চাই

হা সেদিন অরথি বাসায় কাউকে কিছুই বলতে পারেনি।আম্মুর দিকে তাকিয়ে বিয়ে করে ফেলে।15 দিন পর যখন শুভ্র সব জানতে পারে অরথিকে অনেক হেট করে।
আজ দুবছর অরথির বিয়ে হয়েছে। শুভ্র আর অরথি কেউ কাউকে কখনই নক দেইনি।
শুভ্র দেয়নি অভিযোগ আর রাগে।আর অরথি লজ্জায়।
আর রিফাত আজ ও সেই আগের মতো আছে। কথা বলে না খোজ নেয় না।একাকিত্ব মেনে নিয়েছে অরথি নিজের শাস্তি হিসেবে।
শুভ্র 1 বছর পরে বিয়ে করে ফেলে।
শুনেছি শুভ্র ও ভালো নেই।
শুভ্র অরথি কেউ ভালো নেই।কিন্তু কেউ থেমে ও নেই।চলে যাচ্ছে লাইফ। যেতে থাকবে……

সবার কাছে একটা রিকুয়েষ্ট প্লিজ প্লিজ কেউ মিথ্যা কথা দিয়ে লাইফ এ এগিয়ে যেও না।লাইফ কখন কিভাবে কি শিক্ষা দেয় কেউ জানে না। তাই এইসব ফেক আইডি দিয়ে যারা ফান করে থাক তারা সাবধান। কারণ কিছু শিক্ষা লাইফ এমন ভাবে দিয়ে যায় যা কেউ কখনও স্বপ্নে ও চিন্তা করে নি। এভাবেই শেষ হয়ে যায় #Fake_Facebook_Id এর (real story)

সরি সবাই কে ভুল কিছু লিখলে।প্রথম লিখা হ্মমার চোখে দেখবা আপুরা। কেমন লাগল বলবা কিন্তু “

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top